চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় ভাড়া বাসায় এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
নিহত যুবকের নাম মো. ইরফান (২৮) তিনি উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
বারশত ইউনিয়নের বোয়ালিয়া এলাকায় জাফর আহমদের ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী বলছেন, অভাব অনটনের কারণে মানসিক চাপ সইতে না পেরে ইরফান আত্মহত্যা করেছে। তবে ইরফানের পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আনোয়ারা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার (২৩) বলেন, পাঁচ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। স্বামী কোন কাজ করেনা। আমাদের কোন সন্তানও নেই।
বিয়ের পর থেকে সংসারে অভাব অনটন লেগেই ছিল। আমার শাশুড়ি ও স্বামী আমাকে প্রায় সময় নির্যাতন করত। শেষে ভাড়া বাসায় আসলেও অভাবের কারণে ঠিকমত বাসা ভাড়াও দিতে পারিনা । আমার স্বামী কখনো সিএনজি চালাতো, আবার কখনো শ্রমিকের কাজ করতো। বুধবার রাতে বাসায় ফিরলে আমি বাসা ভাড়ার টাকার কথা বলি। তখন স্বামী আমাকে মারলে আমি ঘর থেকে বের হয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর ঘরে ঢুকে দেখি আমার স্বামীর দেহ বাসায় ঝুলছে। আমি লোকজন ডেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইরফানের বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, পাঁচ বছর আগে বটতলী ইউনিয়নের বরৈয়া গ্রামের খায়ের আহমদের মেয়ে শাহিনুরের সাথে আমার ছেরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ছেলের বউ আমার বাড়ি থাকতে না চাইলে আমার ছেলে ভাড়া বাসা নেয়। এক বছর আগেও আমার ছেলেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেরে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। সে বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগও দিয়েছিলাম। বুধবার রাতে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মুঠোফোনে আমাকে জানাল, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে আমার ছেলের মৃতদেহ দেখতে পাই। এটা পরিকল্পিত হত্যা।
জুইঁদন্ডী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. ফরিদ বলেন, গত বছর ইরফানকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেরে রাস্তায় ফেলে চলে গেলে আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ বিষয়ে থানায় সালিশী বৈঠকও হয়েছিল।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা আত্মহত্যা। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রির্পোট পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।