নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না রাখা, এসএসসির আগে পাবলিক পরীক্ষা না নেওয়া, নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগভিত্তিক বিভাজন তুলে দেওয়াসহ একগুচ্ছ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, পরীক্ষা ও মুখস্ত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শেখার মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ প্রক্রিয়া হয়েছে আনন্দময়।
তবে পরীক্ষা কমানো, বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়া, মূল্যায়ন পদ্ধতিসহ শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন দিক নিয়ে অনেকে সমালোচনাও করছেন।
সমালোচনার ভয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন থেকে ‘সরকার পিছপা হবে না বলে মন্তব্য করে নতুন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ভালো কিছু করার লক্ষ্যে সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে কিছু বিষয়ে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবে।
১৯ জানুয়ারি( শুক্রবার) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জটা একটু কমপ্লেক্স। সরকারে থাকলে চ্যালেঞ্জ একটু কমপ্লেক্স হয়। আর হ্যাঁ, কিছু সমালোচনা হবে। সেই সমালোচনা নেওয়ার সক্ষমতা রাজনীতিবিদদের থাকতে হবে। সক্ষমতা আমাদের আছে। আমরা সেটা পারব।
তিনি বলেন,চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। আগামী শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণি যুক্ত হবে নতুন শিক্ষাক্রমের তালিকায়।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, একটা চ্যালেঞ্জের বিষয় হচ্ছে আসলে, নেগেটিভ জিনিস ভাইরাল হয় বেশি। এটা একটা। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, নিবন্ধিত এবং আইনত স্বীকৃত গণমাধ্যম যেভাবে একটা বিষয় যাচাই-বাছাই অনুসন্ধান করে গণমাধ্যমে দেয়, সেভাবে কিন্তু সাধারণ মানুষ, যারা অপপ্রচার করে তারা বা আমরা যারা ব্যবহারকারী তারাও দিই না।
“দেখা যায়, নেগেটিভ প্রচারণার প্রতি আমাদের দৃষ্টি বেশি থাকে। নিজেরাও অনেক সময় অজান্তে নেগেটিভ প্রচারণাতে জড়িয়ে পড়ি। সেটা কাউন্টার করাটা সারা বিশ্বব্যাপী একটা চ্যালেঞ্জ।
শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নওফেল বলেন, “কোনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা, ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার- এ ধরণের কাজে আমি বিশ্বাস করি না। আমার বাবা চট্টলাবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সাড়ে ১৬ বছর চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন। আমি দেখেছি কিভাবে তিনি জনসেবা দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় তিনি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন।
এই সরকারকে জনসেবায় কিভাবে আরো বেশি করে কাজে লাগানো যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করবেন জানিয়ে নওফেল বলেন, বিশেষ করে তরুণ সমাজকে কিভাবে আরো কর্মমুখী করতে পারি, শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো বেশি ইন্ডাস্ট্রির সাথে, অর্থনৈতিক সম্পৃক্ত করতে পারি সেলক্ষ্যে আমরা কাজ করব।
চট্টগ্রাম নগরীর বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে কি ভাবছেন এমন প্রশ্নের জবাবে নওফেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, চট্টগ্রামকে ঘিরে অনেক উন্নত, আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো তিনি করে দিয়েছেন। সুদূর টেকনাফ থেকে শুরু করে সেই ফেনী পর্যন্ত। নানা ধরণের অবকাঠামো এখানে হয়েছে।
এই অঞ্চলকে ঘিরে যে বাণিজ্য হত, অর্থনীতিতে যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান, সেসমস্ত জায়গায় তরুণরা কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, তরুণদের কিভাবে কর্মসংস্থান হতে পারে, সে বিষয়ে তিনি আমাদের বিশেষভাবে কাজ করতে বলেছেন।
তাছাড়া আমাদের নেতৃবৃন্দ এখানে যারা আছেন। যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ এবং প্রগতিশীল অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমূহের যারা আছেন, তাদের সবার সাথে আলোচনা করে একটা ইকোনমিক ইকো-সিস্টেমে যাবো আমরা।
এর আগে বৈঠকে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়সহ স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।