দুই রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের মেজবান খেতে চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে উখিয়া টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে অন্তত হাজার খানেক রোহিঙ্গার সমাবেশ ঘটেছে কক্সবাজার শহরে।
রোববার(১৪ জানুয়ারি) শহরের হোটেল মোটেল জোনে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে ৬৩ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার বেআইনী ভাবে ঘটা করে শহরের একটি হোটেলে দুই রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, সে উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বিশাল মেজবানও।
বিষয়টি জানতে পেরে রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি টিম হোটেল—মোটেল জোনের সী পাল—১ ও সী পাল—২ হোটেলে অভিযান চালিয়ে ওই বিয়ে পণ্ড করে দেয়। এসময় আটক করা হয় নারী ও শিশুসহ ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে,পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় অনেকেই। জব্দ করা হয় ১২ টি অস্ট্রেলিয়ান ও ৭ টি আমেরিকান পাসপোর্ট। তবে এক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
ক্যাম্প থেকে পালিয়ে শহরে আসা এক রোহিঙ্গা জানান, কৌশলে চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে ৪ জন নারীসহ মোট ১২ জন রোহিঙ্গা নিয়ে তিনি এখানে মেজবান খেতে এসেছিলেন।
একই ক্যাম্পের অপর এক নারী রোহিঙ্গা জানান, পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে তিনি কক্সবাজার শহরে দাওয়াত খেতে এসেছেন। শহরে আসতে তেমন কোন বাঁধার সম্মুখিন হতে হয়নি তাদের।
মহেশখালী কুতুবজোমের ছৈয়দুল আমিন ও ইমাম হোসেন নামের দুই ব্যক্তি ১৩ জন বাংলাদেশী নিয়ে ওই বিয়েতে আসেন। তারা জানান, অষ্ট্রেলিয়ায় তাদের ভাই থাকে। তার সাথে এক রোহিঙ্গা প্রবাসীর বন্ধুত্ব রয়েছে। সেই সুবাধে তারা বিয়েতে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে এখানে একটি বিয়ের রান্না চলছিল। দুপুর গড়াতেই এখানে শত শত মানুষ জড়ো হয়। দিনজুড়ে জনমনে কানাঘুষা চলছিল তারা সবাই রোহিঙ্গা। অবশেষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেই রহস্য উন্মোচন করে।
কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক এইচ,এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে কক্সবাজারে ছড়িয়ে না পড়ে সেটি নিয়ে স্থানীয়রা শংকিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে নানা কৌশলে রোহিঙ্গারা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। ক্যাম্পে বিজিবি ও এপিবিএনের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। এসব চেকপোস্ট ভেদ করে কিভাবে এতগুলো রোহিঙ্গা আসলো এটি চিন্তার বিষয়।
এটি কক্সবাজারের জন্য অশনি সংকেত বটে। রোহিঙ্গা প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করার দাবী জানান তিনি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মো. শাকিল হাসান বলেন, ‘রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের খবর পেয়ে সী পাল হোটেলে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে প্রায় ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে পদস্থ কর্মকর্তারা বিস্তারিত ব্রিফিং করবেন।’