হাটহাজারীর উত্তর পশ্চিম ও ফটিকছড়ির দক্ষিণ পূর্ব অংশে হালদার উপর নির্মিত নাজিরহাট পুরাতন ব্রিজ। দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই ব্রিজ ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিগত ৬ বছর আগে মৃত্যুঝুঁকির কারণে এই ব্রিজ দিয়ে মানুষ চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন পেশার মানুষ।
তবে গণমাধ্যম কর্মীদের লেখালেখি ও উপর মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ শেষে শতবর্ষী ব্রিজটির পুনর্নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিগত মে মাসের ১৬ তারিখ তৎকালীন ফটিকছড়ির সাংসদ ব্রিজটির পুনর্নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্রিটিশ আমলে ১৯১৯ সালে নাজিরহাট বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে হালদা নদীর উপর নাজিরহাট পুরাতন ব্রিজ নির্মিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্রিজের এক অংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর সংস্কারপূর্বক ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চলাচল সচল করা হয়। তখন থেকে সরকারি অর্থায়নে ব্রিজটির আর কোনো সংস্কার হয়নি।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে ব্রিজটি দিয়ে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এক বছর পর ২০১৮ সালের জুনে বন্যার পানিতে ব্রিজের মধ্যভাগ দেবে গিয়ে ঢালু হয়ে যাওয়ায় প্রশাসন এটিতে মানুষ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলকারীরা। অবেশেষে প্রায় ৬ বছর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে গত ১২ মে ব্রিজের কার্যাদেশ আসে।
মূলত ব্রিজটি নির্মাণ হচ্ছে বেইলি ব্রিজ হিসেবে। এর দৈর্ঘ্য ৩শ ফুট ও প্রস্থ ১০ ফুট। সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন এ ব্রিজের কাজ পায় সেলিম এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ মতে, ১৮৮ দিন অর্থাৎ, প্রায় সাত মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। বর্তমানে এই স্থানে জনসাধারণ নৌকা দিয়ে পারপার হচ্ছেন। ফলে তারা নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে ঠিকাদার আবুল বশর জানান, আমি নিজেও ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছি। শতবর্ষী একটা ব্রিজের কাজ করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। ইনশাআল্লাহ, কার্যাদেশের মধ্যেই আমরা ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন করতে চেষ্টা করব। ইতোমধ্যে ব্রিজের নির্মাণ কাজ ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে ব্রিজটি খুলে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছে সেতু বিভাগ।
এনইউ/জই