রিল্যাক্স পরিবহনের এসি বাসের বেপরোয়া গতি আর চালকের গাফিলতির কারণে সড়কেই প্রাণ হারালেন ৫ জন।
আজ শুক্রবার (১৭ মে) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামস্থ বসন্তপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি খাদে পড়ে গেলে প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটে। এতে আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, চট্টগ্রামের বাশখালীর বাহারছড়া গ্রামের নুরুল আবসারের ছেলে বদরুল হাসান রিয়াদ (২৬), কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩০) এবং নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে নাসির উদ্দিন পলাশ (৪০)।
যাত্রী, স্থানীয় বাসিন্দা ও হাইওয়ে পুলিশের সূত্র বলছে, বাসের বেপরোয়া গতির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীদের বারবার অনুরোধের পরেও চালক তার বেপরোয়া গতি অব্যাহত রেখেছে যে-কারণে খালি সড়কে ঝরেছে পাঁচ প্রাণ।
দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থেকে বেঁচে যাওয়া যাত্রী আরজ ও আজান জানায়, যাত্রীরা চালককে বারবার নিষেধ করছিলাম বেপরোয়া গতিতে যেন গাড়ি না চালান। তিনি তারপরেও বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন।
একসময় আমরা চিৎকার করি। চালক গাড়িটি কুমিল্লায় একটি হোটেলে পার্ক করেন। দীর্ঘ সময় সেখানে অপেক্ষার পর আবারও বেপরোয়া গতিতে চালানো শুরু হয়। এ সময় অনেকে ঘুমিয়ে পড়েন।
চৌদ্দগ্রাম এলাকায় এসে বিকট শব্দে গাড়িটি খালি রাস্তার পাশে উলটে যায়। এ সময় বাসে থাকা পাঁচ যাত্রী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আহত হন আরও ১৫ জন।
হাটহাজারীর বাসিন্দা নাবিল হোসেন জানায়, গাড়ির ভেতরে আটকে পড়া সবাই সাহায্য চাইছিলেন। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। আমরা কয়েকজন মিলে গাড়িটির সামনের গ্লাস ভেঙ্গে আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করি। সময়টা ভোর হওয়ায় রাস্তা ফাঁকা ছিল। আশপাশে কোনও গাড়িও ছিল না। কিছু সময় পর স্থানীয়রা এসে উদ্ধার কাজ শুরু করেন।
চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সাব অফিসার বিপ্লব কুমার নাথ হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বলেন, ‘আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছি। পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় গাড়ির ভেতর থেকে নিহত পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করেছি। আমাদের উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। এখনও নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় শনাক্ত করতে পারিনি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রবিউল হাসান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ১০ থেকে ১৫ জনকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চার জনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
চচ/আরপি