শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রংপুরের জয়রথ থামালো বরিশাল, জিতলো খুলনাও

পর্দা নামলো বিপিএল চট্টগ্রাম পর্বের

স্পোর্টস ডেস্ক

পর্দা নামলো একাদশ বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের। আজ চট্টগ্রামে শেষদিনে রংপুর বনাম রাজশাহী এবং খুলনা বনাম সিলেটের ম্যাচ ছিল। ঢাকা-সিলেট ঘুরে ১৬ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে আসর বাে বিপিএলের। এরপর ৮ দিনে চট্টগ্রামে ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করে বিপিএলের বাকি ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। ফাইনাল হবে ৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে।

এর মধ্যে আজ চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত হেরেছে রংপুর। এতদিন টানা ৮ ম্যাচে অপরাজয়ী ছিল দলটি। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে আজ ২৪ রানে হেরেছে রংপুর। ম্যাচ হারের পর উড়তে থাকা রংপুরের অধিনায়ক বিষয়টিকে ‘এলার্মিং’ বলেছেন। সঙ্গে চট্টগ্রামের পিচ নিয়েও খানিক সমালোচনা করে গেলেন। তবে ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান দাবি করেন, চট্টগ্রামের পিচ ঢাকা-সিলেটের মতো অতোটা ভালো নয়।
আজ (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সোহান বলেন, ‘মিরপুর বা সিলেটের উইকেট চট্টগ্রামের চেয়ে ভালো ছিল। এ কারণেই হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়েছে। এখানেও উইকেট অবশ্য খারাপ না।’

ঢাকা ও সিলেট পর্বে মাঠের বাউন্ডারি কমানো নিয়ে বাড়তি আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সিলেটে বাউন্ডারি ছোট করা নিয়ে নানান কথা উঠেছে। বড় রানের ম্যাচ হোক, সেই চাওয়াতেই বাউন্ডারি ছোট করা। চট্টগ্রামে অবশ্য স্বাভাবিক বাউন্ডারিতেই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোহান মনে করছেন, ম্যাচের বাউন্ডারি স্বাভাবিক নিয়মে থাকাই ভালো।

রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক বলেন, ‘যে বাউন্ডারির মাপ স্ট্যান্ডার্ড ওটাই থাকা উচিৎ। যেহেতু টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, হাই স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে, আউট হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে। এটাই স্বাভাবিক।’

এবারের বিপিএলে রংপুরের হয়ে সোহানের নেতৃত্ব বারবার প্রসংশিত হচ্ছে। ব্যাট হাতেও দুর্দান্ত ফর্মে আছেন রংপুর অধিনায়ক। খুব বেশি রান অবশ্য করতে পারেননি। তবে শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিং করে দলের স্কোরটাকে শক্ত একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। এখন পর্যন্ত ৬ ইনিংস ব্যাটিং করে ১৪৮ রান করেছেন সোহান। ১৮৭.৩৪ স্ট্রাইকরেটে এই রান করেছেন সোহান।
এই ভূমিকা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে অব্যাহত রাখায় মনোযোগ সোহান। বলেছেন, ‘সবসময় দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে চাই। আলহামদুলিল্লাহ ভালো যাচ্ছে। চেষ্টা করব পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই যেন করতে পারি। বেশি রান করার চেয়ে দলের জন্য কোন রান কাজে লাগছে, জয়ে কাজে লাগছে এটা বেশি জরুরী। ভবিষ্যতে আরও উন্নতি করে আরও ভালো করার চেষ্টা করব।’

জিতলো খুলনা: এদিকে স্ট্রাইকার্সের ১৫২ রানের জবাব দিতে নেমে খুলনা টাইগার্সের শুরুটা করেছে দুর্দান্ত। মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম শেখের ওপেনিং জুটিতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই এলো ৫৯ রান। শেষ দিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, উইলিয়াম বসিস্তো কার্যকারী দুটি ইনিংস খেললেন। সব মিলিয়ে সহজেই সিলেটের ১৫২ রানের টার্গেট পেরিয়ে ৬ উইকেটের দারুণ জয় পেয়েছে খুলনা টাইগার্স।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে বসল মেহেদি হাসান মিরাজের দল। ৯ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে খুলনা। অপর দিকে পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচের স্থানটি আরও সু-সংহত হলো সিলেট স্ট্রাইকার্সে। আজ নবম ম্যাচ খেলতে নেমে সপ্তম হারের তেতো স্বাদ পেল সিলেট।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় ওপেনিং জুটিটাই ম্যাচের অর্ধেকটা জিতিয়েছে খুলনা টাইগার্সকে। মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম শেখের ৭ ওভারের ওপেনিং জুটিতে উঠেছে ৬৯ রান। নাঈম শেখ ১৭ বলে ২০ রান করে ফিরলে এই জুটি ভাঙে।

তিনে নেমে আফিফ হোসেন ধ্রুব রান পাননি। আউট হয়েছেন ৫ বলে ৩ রান করে। দলীয় ১০৬ রানের মাথায় মেহেদি হাসান মিরাজ ৭০ রান করে ফিরেছেন। ম্যাচ তখন খুলনার আয়ত্বে। ৫০ বলে ৮টি চার ২টি ছয়ে ৭০ রান করে ফিরেছেন খুলনার অধিনায়ক।

বাকি কাজটা সেরেছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও উইলিয়াম বোসিস্তো। ২০তম ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেছেন বোসিস্তো। ১১ বলে ১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন বোসিস্তো। মাহিদুল অঙ্কন ১৩ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে পাওয়ার প্লে’তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে সিলেটও। শুরুতে সিলেটের ওপেনার জর্জ মান্সি রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন। মিরাজ আর হাসানের দুই ওভারে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতেই দলের রান নিয়ে যান ৫৮-তে। বড় সংগ্রহের এই ভিত পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সিলেটের স্ট্রাইকার্সের ব্যাটাররা। শেষ ওভারে সুমন খানের এক ছক্কায় দেড়শ পেরিয়েছে সংগ্রহ। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫২ রানে তোলে সিলেট।
শুরুতেই সাফল্য পাওয়া মিরাজের পরের ওভারেই স্টিম রোলার চালিয়েছেন মান্সি। পঞ্চম ওভারের প্রথম বল ডট গেলেও পরের চার বলে মান্সি মেরেছেন চারটি বাউন্ডারি। ওভার শেষ করেছেন ছক্কা মেরে। সেই চারটি বাউন্ডারির তিনটিই মান্সি মেরেছেন রিভার্স সুইপে। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে হাসানকেও পিটিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, দুই চার এক ছক্কায় তুলেছেন ১৬ রান। তাণ্ডুবে ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে ফিফটি ছোঁয়া এই বাঁহাতি ওপেনার বোল্ড হয়েছেন আবু হায়দার রনির বলে।

এক বল আগেই অবশ্য একটা ছক্কা হজম করেছিলেন রনি, তবে এক বলের ব্যবধানে দারুণ এক ব্যাক হ্যান্ড স্লোয়ারে নেন প্রতিশোধ। আউট হওয়ার আগে জাকির হাসানের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৭৪ রানের জুটি, যেখানে মান্সির অবদানই বেশি। ৩২ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলা জাকিরও বোল্ড রনির বলেই।

ফিনিশার রোলে নামা জাকের আলী অনিকও আজ ব্যর্থ। আমের জামালের বলে মিড উইকেটে বদলি ফিল্ডার মাহমুদুল হাসান জয় দারুণ এক ক্যাচে ফিরিয়েছেন তাকে। অধিনায়ক আরিফুল ইসলাম এলবিডব্লিউ ব্যক্তিগত এক রানের মাথায়। শেষ ছয় ব্যাটারের পাঁচজনই থেমেছেন সিঙ্গেল ডিজিটে।সালমান ইরশাদ ,আবু হায়দার রনি ও হাসান মাহমুদ; তিনজনই নেন দুটি করে উইকেট।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর