বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

ইউরোর ফাইনালের ঠিকানায় যেতে চায় দুদলই

আজ স্পেনের সুন্দর ফুটবলের ছন্দ খুঁজবে ফ্রান্স!

খেলাধুলা ডেস্ক :

ইউরোর মহারণে আজ মঙ্গলবার মুখোমুখি হচ্ছে টুর্নামেন্টের অন্যতম দুই সফল দল ফ্রান্স ও স্পেন। দুটি দলই পাঁচটি শিরোপা ভাগাভাগি করেছে।

মিউনিখে মঙ্গলবার প্রথম সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। সেমিফাইনালের মঞ্চে দুই দলই চাইবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে একে অপরকে ছাড়িয়ে যেতে।

ইউরোর দুই সাবেক চ্যাম্পিয়নের বর্তমান অবস্থা দুই রকম। দুরন্ত পারফরম্যান্স মেলে ধরা স্পেন ভাসছে প্রশংসার স্রোতে। বিবর্ণতায় বন্দি ফ্রান্স বিদ্ধ হচ্ছে সমালোচনার তীরে। এই দুই দল মুখোমুখি এবার।

টুর্নামেন্টের শুরু থেকে পিছু নেওয়া মলিনতার খোলস ছেড়ে তাই আড়মোড়া ভেঙে বেরিয়ে, সমালোচকদের মুখে ছিপি দিয়ে বার্লিনের ফাইনালে ওঠাই এখন একমাত্র লক্ষ্য দিদিয়ের দেশমের ফ্রান্সের।

অন্যদিকে চোখ জুড়ানো, মন ভরানো ফুটবল উপহার দিতে চান কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। তবে সেমি-ফাইনালের মতো ম্যাচে তো দিনশেষে ফলাফলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফাইনালে উঠতে না পারলে স্রেফ সৌন্দর্য দিয়ে কী হবে! সেই বাস্তবতাও ভাবনায় রাখছেন স্পেনের কোচ।

জিততে হলে চাই মাঠের পারফরম্যান্স এবং গোল। চলতি আসরে এখনও ‘ওপেন-প্লে’ থেকে গোল পায়নি ফরাসিরা। আক্রমণভাগের মূল তারকা ও অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে ধুঁকছেন; এ পর্যন্ত একবারই জালের দেখা তিনি পেয়েছেন পোল্যান্ড ম্যাচে, সেটাও পেনাল্টি থেকে। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে স্পেনের চেয়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে আছে ফ্রান্স।

তবে স্পেনকে নিয়ে ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই বলেই মনে করছেন স্পেনে দীর্ঘদিন ধরে খেলে আসছেন ফ্রান্সের অ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। স্পেনের খেলোয়াড়দেরও মোটামুটি ভালোই জানাশোনা আছে তার।

গ্রিজম্যান বলেন, ‘স্পেন অবশ্যই অনেক ভালো দল। কিন্তু তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোনো দলকে নিয়েই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখি এবং নিজেদের সবটুকু দিয়ে যাবো ফাইনালে ওঠার জন্য।’

স্প্যানিশ দৈনিক ক্রীড়া সংবাদপত্র ‘মুন্ডো দেপোর্তিভো-তে লেখা সংবাদে গ্রিজম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে একটি ম্যাচই বাকি আছে ফাইনালে ওঠার জন্য। চার দলের ভেতর একটা হওয়া এমনিতেই অবিশ্বাস্য সাফল্য। আমরা দল হিসেবে উপভোগ করতে চাই। কারণ, আমরা জানি আমরা পারবো।’

তবে এই গ্রিজমানের পারফরম্যান্স নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। সেই প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছেন দলের সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেও।

তবে ফরাসি মিডফিল্ডার ইউসুফ ফোফানা সংবাদ সম্মেলনে বললেন, দুই সতীর্থের সামর্থ্য নিয়ে একটুও সন্দিহান নন তিনি।

ফোফানা বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি এগুলোকে (সমালোচনা) থোড়াই কেয়ার করি। আমরা সেমি-ফাইনালিস্ট। অঁতোয়ান ও এমবাপের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? আমাদের উপলব্ধি করতে হবে যে, সেমি-ফাইনালে ওঠাও অনেক কিছু।’

২০১২ সালের পর ইউরোতে আর মুখোমুখি হয়নি দুই দল। ২০১২ সালে শেষবারের মোকাবিলায় ফ্রান্সকে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করে দিয়েছিল লা রোহারা।

পরিসংখ্যানে স্পেন-ফ্রান্স:

@@ আন্তর্জাতিক মঞ্চে এর আগে মোট ৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই প্রতিবেশী স্পেন ও ফ্রান্স। সেখানে জয়ের পাল্লা ভারী স্প্যানিশদের পক্ষে। তাদের ১৬টি জয়ের বিপরীতে ফরাসিরা শেষ হাসি হেসেছে ১৩টি ম্যাচে। বাকি সাতটি লড়াই হয়েছে ড্র।

@@ গোলের বিবেচনায় আরও এগিয়ে স্পেন। এই ৩৬টি ম্যাচে লা রোহারা ৬৪টি গোল করেছে, ফরাসিরা জাল খুঁজে পেয়েছে ৩৯ বার।

@@ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় (বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলিয়ে) অবশ্য ফ্রান্সের সফলতার হার বেশি। পাঁচটি ম্যাচ খেলে তিনটিতে জিতেছে লে ব্লুরা, স্প্যানিশদের জয় কেবল একটি। বাকিটি শেষ হয়েছে সমতায়।

@@ চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, ইউরোতে দুই দলের আগের তিনটি সাক্ষাতে যারা জিতেছে, তারাই শেষমেশ গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

@@ ১৯৮৪ সালের আসরের ফাইনালেই তাদেরকে লড়তে দেখা গিয়েছিল। স্পেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ফ্রান্স। এরপর ২০০০ সালে ইউরোপের ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি পুনরুদ্ধারের পথে কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছিল ফরাসিরা।

স্প্যানিশরা ২০১২ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগে কোয়ার্টারেই ২-০ গোলে জিতেছিল ফ্রান্সের বিপক্ষে।

@@ দুই দলের লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড স্পেনের। ১৯২৯ সালে প্রীতি ম্যাচে ৮-১ গোলে ফ্রান্সকে বিধ্বস্ত করেছিল তারা।

চচ/আরপি

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর