বাংলাদেশের ব্যাটিং দৈন্যতা যেন কাটছেই না। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে ব্যাটিং দৈন্যতার আরেকটি প্রদর্শনী দেখাল বাংলাদেশ।
ভারতের বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচে আরেকবার মুখ থুবড়ে পড়লেন লিটন-শান্ত-সৌম্যরা। তাতে মেগা টুর্নামেন্টে অভিযান শুরুর আগে যোগ হলো আরেকটি হার।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই বাংলাদেশের সামনে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার শেষ সুযোগ।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারল না বাংলাদেশ। লিটন-শান্তদের হতশ্রী ব্যাটিংয়ে ভারতের কাছে ৬০ রানে হারল লাল-সবুজের দল।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটিং বিভাগ বড় দুশ্চিন্তার কারণ বাংলাদেশের। টপ অর্ডারের টানা ব্যর্থতায় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন। তার পরেও সাফল্য ধরা দিচ্ছে কই? যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের পর ভারতের বিপক্ষেও জ্বলে উঠতে পারেননি ব্যাটাররা।
আজ শনিবার (১ জুন) নিউ ইয়র্কের নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৮২ রান তোলে ভারত।
জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২২ রানে থামে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ২৮ বলে ৪০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সৌম্য সরকার।
আর্শদ্বীপের ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে রিশাভ পন্থের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। দুই বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
সৌম্যর মতো লিটনেরও সাজঘরে ফিরতে সময় লাগেনি। দলীয় ৭ রানের মাথায় সেই আর্শদ্বীপের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিটন। ৮ বলে ৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর হতাশ করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। ৬ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেনি এই বাঁহাতি ব্যাটার।
এরপর দলীয় ৩৯ রানের মাথায় ফেরেন আরেক ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। ১৪ বলে ১৩ রান করে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। হৃদয়ের বিদায়ের পর টিকতে পারেননি আরেক ব্যাটার তানজিদ তামিমও। ১৮ বলে ১৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১২২ রানে থামে বাংলাদেশ।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খুব একটা ভালো করতে পারেন ভারতও। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও সঞ্জু স্যামসন। দলীয় ১১ রানের মাথায় মিডল স্ট্যাম্পে করা শরিফুলের ফুলার লেন্থ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে পড়েন স্যামসন। ছয় বল খেলে তিনি করেন এক রান।
স্যামসনের বিদায়ের পর পন্থকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়েন রোহিত। এই দুইজনের মারকুটে ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫৫ রান তুলে ফেলে ভারত। অবশ্য পাওয়ার প্লের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রোহিত।
দলীয় ৫৯ রানের মাথায় তাকে ফিরিয়ে স্বস্তি দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। লেগ স্ট্যাম্পের ওপর করা রিয়াদের ডেলিভারিতে লং অনে রিশাদের হাতে ধরা পড়েন রোহিত। ১৯ বলে ২৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন পন্থ। এই জুটিতে যোগ হয় আরও ৪৪ রান। ৩২ বলে ৫৩ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন রিশাভ।
চোট নয় বরং অন্য ব্যাটারদের সুযোগ দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর তিনবার জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি আরেক ব্যাটার শিবাম দুবে।
দলীয় ১৩০ রানের মাথায় শেখ মেহেদীর বলে মাহমুদউল্লাহর অবিশ্বাস্য ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। ১৬ বলে ১৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর দলীয় ১৫৯ রানের মাথায় সূর্যকুমার যাদবের উইকেট হারায় ভারত।
৩১ রান করে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। শেষমেশ হার্দিক পান্ডিয়ার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৮২ রানে থামে ভারত। ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন পান্ডিয়া।
চচ/আরপি