মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বিড়াল কেন ‘মিঁয়াও’ বলে?

যদি এই প্রশ্নটি করা হয় যে একটি বিড়াল কী ধরনের শব্দ করে, তবে বেশিরভাগ মানুষই নিশ্চই এক বাক্যে বলবেন, বিড়াল ম্যাও বা মিঁয়াও শব্দ করে। কিন্তু বিড়াল কি শুধু এই আওয়াজই করে? এটা কি শুধুই স্বাভাবিক শব্দ? না আছে কোনও অর্থ?
আপনি কী জানেন আসলে কেন প্রায়শই মায়াভরা এই শব্দটি করে থাকে এই গৃহপালিত চারপেয়ে আদুরে প্রাণীটি? ছোট্ট এই ‘মিঁয়াও’ শব্দের অর্থই বা কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে বিজ্ঞান ঠিক কী বলে?
মিয়াঁও শুধুমাত্র একটি শব্দ নয়: বাস্তব হল, বিড়াল শুধু এই একটি শব্দই কিন্তু করে না। আমরা যদি বিড়ালের আচরণ মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করি তবে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে বিড়ালটি কেবল মিয়াঁও শব্দ করে না, অনেক ধরণের আরও বেশ কিছু শব্দও করে এই প্রাণীটি।

এই সব শব্দের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ শব্দটি হ’ল ‘মিয়াঁও’। পোষা প্রাণীর যত্ন সংস্থা রোভারের বিড়াল বিশেষজ্ঞ মাইকেল ডেলগাডো বলেন যে বিড়ালের কণ্ঠস্বর আসলে শুধু একটি শব্দ নয় বরং যোগাযোগের একটি উপায়।
শুধু একটি নয়, আছে একাধিক লক্ষণ: যখনই একটি বিড়াল মিঁউ মিঁউ করে, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী এর মানে হল বিড়ালটি ক্ষুধার্ত এবং তার মালিকের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে।
বিড়ালকে সাধারণত খুব স্মার্ট প্রাণী হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং তারা খুব দ্রুত বুঝে নেয় যে যখনই তারা আদুরে গলায় করে তখনই তাদের চাহিদা পূরণ করা হয়।
যদিও এই শব্দের আরও অনেক কারণ রয়েছে: যখনই বিড়াল কিছু চায়, তা খাবার হোক বা আপনার আদর, তারা ‘মিঁয়াও’ করতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে, কেন বা কী কারণে তারা মায়াভরা ‘মিঁয়াও’ শব্দ করে তার একটি দীর্ঘ তালিকা আছে।
আসলে আপনি যত বেশি আপনার বিড়ালকে জানবেন, তত বেশি আপনি এর শব্দ এবং এর অর্থ বুঝতে সক্ষম হবেন, এই শব্দের সঙ্গে এর আচরণের অন্যান্য দিকগুলিকে জেনে নেওয়া যাক।
আচ্ছা বলুন তো, শুধু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই কী ‘মিঁয়াও’ করে বিড়াল?
আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, বিড়ালরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে কিন্তু তাদের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে না। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময়ই শুধুমাত্র তারা ‘মিঁয়াও’ শব্দটি করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও এর কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। বিড়ালরা অনেক সময় তাদের শিশুদের খোঁজার সময় এই শব্দ করে এবং শিশুরাও এই শব্দে জবাব দেয়।
কিন্তু শিশুরা যখন বড় হয়, তখন তারা ‘মিঁয়াও’ করার মাধ্যমে অন্য বিড়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। ডেলগাডো বলেন, বিড়ালরা যখন একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তখন তারা ‘মিঁয়াও’ এর মতো শব্দ করে।
যদি একটি বিড়াল একটি ‘মিঁয়াও’ শব্দ করে, এটি শুধুমাত্র মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করতে পারে। এটিও দেখা যায় যে যখনই কেউ এমন একটি ঘরে প্রবেশ করে যেখানে একটি বিড়াল ইতিমধ্যে উপস্থিত রয়েছে, তখনই এটি ব্যক্তির পায়ের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এবং একটি ‘মিঁয়াও’ শব্দ করে। আসলে এর মাধ্যমে বিড়ালটি আপনাকে জানিয়ে দেয় যে তারা আপনার কাছাকাছি আছে।
বিড়ালরা যখন খুশি হয় তখনই কেবল ‘মিঁয়াও’ শব্দ করে না। তারা যখন হতাশ হয় বা দুঃখ পায় বা ভয় পায়, তখনও তারা একই রকম শব্দ করে। তবে আনন্দ এবং বেদনার প্রকাশের মধ্যে সামান্য পার্থক্য আছে।
একটি বেদনাদায়ক ‘মিঁয়াও’ আছে যা বুঝিয়ে দেয় বিড়ালটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং ডাক্তারের প্রয়োজন আছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বিড়ালের এই ধরণের মিঁউ আওয়াজ সাধারণ ‘মিঁয়াও’ থেকে আলাদা।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর