শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

ব্যবসায় দ্বন্দ্বের জেরে ৩ জনকে ছুরিকাঘাত সিনেমা প্যালেসে

নগরের কোতোয়ালী থানার সিনেমা প্যালেস এলাকায় ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মারামারির একপর্যায়ে তিনজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

নগরের কোতোয়ালী থানার সিনেমা প্যালেস এলাকায় ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মারামারির একপর্যায়ে তিনজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, আগের দ্বন্দ্বের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

গতকাল বিকেল তিনটার দিকে কেসিদে সড়কের মোহসেন আউলিয়া ট্রান্সপোর্ট নামে দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন আজাদ, সাগর ও সাইফুল। তারা সবাই মোহসেন আউলিয়া ট্রান্সপোর্টের কর্মচারী। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ছুরিকাঘাতের শিকার আজাদের ভাই তাসকিন বলেন, জুয়েল এবং তার খালু মিলে রনি নামে একজনের সঙ্গে মোহসেন আউলিয়া ট্রান্সপোর্ট নামে মালামাল পরিবহনের ব্যবসা শুরু করে।

ব্যবসাটি মূলত সীতাকুণ্ড-বারআউলিয়া সড়কে। ব্যবসার একপর্যায়ে পার্টনারশিপ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এরপর জুয়েল তার খালুকে ব্যবসার অংশীদার থেকে বাদ দেয় রনি।

তিনি বলেন, ব্যবসার দেনা- পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা ছিল অনেক আগে থেকে। সেটা মীমাংসাও হয়েছিল। আমার ভাই আজাদ ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো জুয়েলের সঙ্গে। হঠাৎ প্রতিষ্ঠানের সামনেই রনির ছেলে মাসুম আমার ভাইসহ তিনজনকে অতর্কিত ছুরিকাঘাত করে। আমরা এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (ওসি) আব্দুল করিম বলেন, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এ ঘটনা। কেউ আটক নেই। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততা, কমেছে উৎপাদন

শুষ্ক মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে বেড়েছে লবণাক্ততা। কোনও কোনও সময় এর পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। এমনকি লবণাক্ততার চাপে জোয়ারের সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওয়াসার পানি সরবরাহকারী প্রকল্পও। এটি দৈনিক সুপ্রভাতের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

শুষ্ক মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে বেড়েছে লবণাক্ততা। কোনও কোনও সময় এর পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। এমনকি লবণাক্ততার চাপে জোয়ারের সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওয়াসার পানি সরবরাহকারী প্রকল্পও।

বর্তমানে ওয়াসার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা যাচ্ছে। অথচ সহনীয় পর্যায় ২৫০ মিলিগ্রাম। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।

ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ওয়াসার পানিতে এ সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা এখন দিন দিন বাড়ছে। লবণাক্ততার কারণে ওয়াসার চারটি প্রকল্পে পানির উৎপাদন কমেছে ছয় কোটি লিটার পর্যন্ত। এ কারণে রমজানে পানি সংকটে পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গ্রাহকরা।

পানি সংকটে থাকা গ্রাহকদের বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য বিভিন্ন মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানির জোগান দিতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন) মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম বলেন, ‘কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন কমে গেছে। এ কারণে পানি ছাড়া হচ্ছে খুবই কম।

এতে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি জোয়ারের সময় কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে প্রবেশ করছে। লবণাক্ততার কারণে ওয়াসার চারটি প্রকল্প জোয়ারে সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ কারণে চার প্রকল্পে স্বাভাবিক উৎপাদনের চেয়ে এখন ৫-৬ কোটি লিটার কম পানি উৎপাদন হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প-১ এবং প্রকল্প-২ থেকে ১৪ কোটি করে ২৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে এ দুটি প্রকল্প থেকে উৎপাদন হচ্ছে ২৬ কোটি লিটার পানি।

একইভাবে মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প এবং মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৯ কোটি লিটার করে ১৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হতো।

বর্তমানে তা কমে ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পানি সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে কিছুটা ভোগান্তিতে ফেলেছে। বর্তমানে ওয়াসার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা যাচ্ছে। অথচ সহনীয় পর্যায় ২৫০ মিলিগ্রাম।

চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে ঢুকছে সাগরের পানি। জোয়ারের পাশাপাশি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় এ সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়ায় জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামে দৈনিক পানির চাহিদা আছে ৬০ কোটি লিটার । বর্তমানে চারটি পানি শোধনাগার প্রকল্প এবং গভীর নলকুপ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রায় ৪২ থেকে ৪৫ কোটি লিটার পানি। সরবরাহ করা পানি থেকে আবার ৩০ শতাংশ পানি ‘হাওয়া’ হচ্ছে। যা ওয়াসার ভাষায় বলা হচ্ছে- সিস্টেম লস।

বর্তমানে ওয়াসার আবাসিকে গ্রাহক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ আছে ৭ হাজার ৭৬৭টি। ৭৭০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে সংস্থাটি পানি সরবরাহ করে। বেশিরভাগ লাইন পুরোনো হওয়ার কারণে এমনিতেই সংকটে থাকতে হয় গ্রাহকদের। লাইনে লিকেজ বা ছিদ্রের কারণে পানি নষ্ট হচ্ছে। লবণাক্ততার কারণে এখন সংকট আরও বেশি হচ্ছে।

নগরীর আকবর শাহ্ এলাকার বাসিন্দা নুরুল আনোয়ার বলেন, ‘এখন নিয়মিত ওয়াসার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। দিনে কোন সময় পাওয়া যাবে, তা বুঝতেছি না। সারা বছরই ওয়াসার পানিতে নানা সমস্যা লেগে থাকে। কোন সময় পানিতে ময়লার পাশাপাশি দুর্গন্ধযুক্ত পানিও মিলে গত কিছুদিন ধরে নতুন সমস্যা লবণাক্ততা।’

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘সমুদ্রের লবণাক্ত পানি কর্ণফুলী নদীতে ঢুকে পড়ছে। ভাটার সময় পানিতে লবণাক্ততার সমস্যা কম থাকলেও জোয়ারের সময় তা সহনীয় পর্যায়ে থাকছে না। এ কারণে জোয়ারের সময় নদী থেকে পানি তোলা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হচ্ছে না। সে সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিও হচ্ছে না। কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হলে এবং বৃষ্টি হলে লবণাক্ত পানি নদীতে প্রবেশ করতো না। নদীতে এখন মিঠা পানির পরিমাণ কমে জোয়ারের সময় সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করছে। এ কারণে লবণাক্ততা সমস্যা হচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঁচটি ইউনিটে ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা রয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উৎস পানির স্তর কাপ্তাই লেকে অনেক কমে গেছে।

দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়াতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা ছিল ৮৮ এমএসএল (মিনস সি লেভেল)। পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি মাত্র ইউনিট পর্যায়ক্রমে চালু রাখা হচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৪০ মেগাওয়াট।’

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর