বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রামে বার্ন ইউনিট হবে, পাহাড়ও ‘বাঁচবে’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বার্ন ইউনিট পাহাড় ‘রক্ষা করেই নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আশ্বস্ত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ও চীনের প্রকৌশলী। এটি দৈনিক সুপ্রভাতের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বার্ন ইউনিট পাহাড় ‘রক্ষা করেই নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আশ্বস্ত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ও চীনের প্রকৌশলী।

গতকাল বুধবার ‘চায়না এইড প্রজেক্ট অব বার্ন ইউনিট অব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই আশ্বাস মেলে। খবর বিডিনিউজের।

সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে হাসপাতাল ভবনের পশ্চিমে গোয়াছি বাগান এলাকায় প্রকল্পের নির্ধারিত স্থানে পাহাড় কেটে জমি প্রস্তুতের সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার এই সভা হলো।

সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল, প্রকল্পের চীনা কর্মকর্তা, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে ১৫০ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট নির্মাণের কাজ চলতি মাসে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, “এই প্রকল্পের ১৮০ কোটি টাকা চীন দিচ্ছে। বাংলাদেশ দিচ্ছে ১০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটির জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন
করা হয়েছে। কিন্তু চীনে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অর্থবছর হিসাব করা হয়। তাই আমাদের কাজ শুরু করে দিতে হয়েছে। সে কারণে পাহাড়ি ও সমতল এলাকায় কাজ শুরু হয়।”

পাহাড় কাটার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে পদ্ধতিতে প্রকল্প এলাকার পাহাড়গুলোকে রক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তা আগে কখনো বাংলাদেশে হয়নি। পাহাড় ছেঁটে ঢালু করা হচ্ছে। তাতে কলাম পদ্ধতিতে কাঠামো করে ঘাস লাগানো হবে। এছাড়া গাছপালাও লাগানো হবে।

“এখানে পাহাড় এবং পাহাড়ের পাশে যে ভবন তৈরি হবে সেটা রক্ষার কথা মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে। তবে পরিবেশগত ছাড়পত্র অনুমোদনের আগে কাজ করা উচিত হয়নি। এখন আমরা পাহাড়ে কাজ বন্ধ রাখব। তবে সমতলে কিছু কাজ চলবে। পাহাড়ের আকৃতির পরিবর্তন হবে না। উচ্চতা ঠিক থাকবে।”

সভায় তসলিম উদ্দীন প্রকল্প নকশার ছবি এবং পাহাড় কীভাবে রক্ষা করা হবে সেই চিত্র প্রদর্শন করেন ।
সভা শেষে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান বলেন, “এটা সয়েল নেইলিং, এখানে পাহাড়ের মধ্যে পাইল করা হবে এবং কলাম বিম দিয়ে ঘিরে রাখা হবে। পাহাড়টা কোনোভাবেই পড়বে না।

“এই টেকনোলজি চট্টগ্রামে আগে ইউজ হয়নি। চীনাদের সাথে ঘনিষ্টভাবে কাজ করছি। চেষ্টা করব তাদের কাছ থেকে এই টেকনোলজি হায়ার করতে । চট্টগ্রামে সবসময় যে বাটালি হিলের পাহাড় ভেঙে যাচ্ছে সেটা প্রতিরোধে নেইলিং করে ঘিরে দেয়া যায় এই প্রক্রিয়ায়।”

এ সময় প্রকল্পের চীনা প্রকৌশলী মেই ইউ চ্যা বলেন, “এই পাহাড়টা দেখার পরে ভেবেছি, এর পাশে ভবন নির্মাণ নিরাপদ নয়। কারণ ভবনের বেইস করতে গেলে পাহাড়টি ধসে পড়বে। এই পাহাড়ের মাটি খুবই নরম। মাটিটা পানির স্পর্শ পেলেই নিচের দিকে চলে আসবে। “তখন চিন্তা করলাম, সয়েল নেইলিং করে কিভাবে করা যায়। এজন্য পাহাড়টি ড্রেসিং করে এর উপর কলাম স্ট্রাকচার করে ঢালাই দিয়ে এর ওপর আবার মাটি দিয়ে ঘাস রোপন করে দেওয়া হবে, যাতে পাহাড় ধসে না আসে। ড্রেনেজ সিস্টেম থাকবে যাতে পানি ড্রেন দিয়ে চলে। যেতে পারে।”

বেলা চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহি বলেন, “এ বিষয়ে আগে বৈঠক হয়েছিল। তারা বলেছিলেন, পাহাড় সংরক্ষণ করে কাজ করবেন। যে কোনো প্রকল্প কাজ শুরুর আগে এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট (ইআইএ) করতে হয় । উনাদের সেটা নেই। “চমেক এর মত দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের কাছে এটা আশা করা যায় না। আশা করি উনারা ইআইএ করেই কাজ করবেন। পাহাড়ে গাছ লাগাবেন বলেছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশিয় প্রজাতির গাছ লাগাবেন আশা করি।”
সার্বিক বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, “২০২৬ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত। চলতি মাসের মধ্যে ভৌত কাজ শুরু হবে আশা করি।

“ভবন থেকে মেডিকেল যন্ত্রপাতি পর্যন্ত প্রকল্পের সব কাজ চীন সরকার করছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তারা মাত্র কয়েকদিন আগে এসেছে।”

বার্ন ইউনিটের নির্মিতব্য ভবন ও পাহাড় রক্ষায় ড্রেসিং চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পাহাড়ের মেজারমেন্ট একটুও কমবে না। পরিবেশকে রক্ষা করতেই তারা আগে ভবন না করে পাহাড় রক্ষায় স্লোপ করছে। এই টেকনোলজি বাংলাদেশে আগে দেখিনি। তারা পরিবেশে জোর দিয়েছে।”

সভায় প্রকল্পটিতে কর্মরত দুই চীনা প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত ও রুমা ভট্টাচার্য এবং বার্ন ইউনিটের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রফিক উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

গত বছরের মে মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ২৮৫ কোটি টাকার ব্যয়ের এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ চীন ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়।


দ্বিগুণ আমদানি, কমছে দামও

মাস দুয়েক পরেই শুরু হচ্ছে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান। আর এই সময়ে বাংলাদেশে ইফতারের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী অনুসঙ্গ হিসেবে চাহিদা বাড়ে ছোলা ও খেজুরের। গেল বছর বিভিন্ন পর্যায়ে শুল্ক আরোপের অজুহাতে এই দুই পণ্যের দাম অনেকটা আকাশচুম্বী থাকলেও এবার সুখবরই দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রমজানে এই দুই পণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

মাস দুয়েক পরেই শুরু হচ্ছে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান। আর এই সময়ে বাংলাদেশে ইফতারের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী অনুসঙ্গ হিসেবে চাহিদা বাড়ে ছোলা ও খেজুরের। গেল বছর বিভিন্ন পর্যায়ে শুল্ক আরোপের অজুহাতে এই দুই পণ্যের দাম অনেকটা আকাশচুম্বী থাকলেও এবার সুখবরই দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রমজানে এই দুই পণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।

এরমধ্যে চলতি অর্থবছরের গেল ছয় মাসে ছোলার আমদানি হয়েছে গেল অর্থ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। কমতির দিকে পণ্যটির দামও।
দেশে ছোলার বার্ষিক চাহিদা সোয়া লাখ টনের মতো। চাহিদার প্রায় পুরোটাই অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। আমদানির এর প্রায় ৯০ শতাংশই দেশে আসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, ২০২৩-২০১৪ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছিল ১৩ হাজার ১৬৯ টন। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৩০ হাজার ৩৫৮ টন, যা প্রায় দ্বিগুণের বেশি। তবে গেল অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের চেয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খেজুর আমদানির পরিমাণ অর্ধেকে নেমেছে।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খেজুর আমদানি হয়েছিল ১২ হাজার ৪০০ টন। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৫ হাজার ৯২৭ টন। অবশ্য এরমধ্যে শুল্ক কমানোর পর ব্যাপকভাবে কথা খেজুর আমদানি শুরুর জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে ছোলাসহ ১১ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র খুলতে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে সরকার।

ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে মার্জিনের নগদ হার ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গেল বছরে খেজুরের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো ‘শুল্ক” এবার কমিয়েছে সরকার। তাই ডিসেম্বর থেকে ব্যাপকভাবে খেজুর আমদানি শুরু করেছেন আমদানিকারকরা। তাতে রমজানে ফলটির দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে প্রতিমণ (৩৭.৩২) ছোলা বিক্রি হয়েছিল ৪২শ টাকা দরে। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে তা কমে এখন ৩৪শ থেকে ৩৬শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।

ছোলা আমদানির বিষয়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার- সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, এবার প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে। আরও আমদানি হচ্ছে। তাই ধীরে ধীরে দামও কমে যাচ্ছে। রমজান আসতে আসতে আরও কয়েক দফায় দাম কমবে।

খেজুর আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফআইএ) জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি মোহাম্মদ কামাল বলেন, আমাদের যে অভিযোগ ছিল শুল্ক নিয়ে সেটার সমাধান হয়েছে। এখন ব্যাপকভাবে আমদানি শুরু হয়েছে। গেল বছরের চেয়ে এবছর দাম কমে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকবে।


সেই শিশুর পিতা-মাতা ঠিক করল আদালত

আনুমানিক দুদিন বয়সী নবজাতক শিশু পড়ে ছিল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাবরা খালের পাড়ে। কান্নার শব্দ শুনে শিশুটিকে উদ্ধার করেন এক নারী। চারিদিকে এ নিয়ে হইচই পড়ে গেলে থানা পুলিশসহ সবাই এগিয়ে আসে। যারা শিশুটিকে অবহেলায় ফেলে গিয়েছিল, সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা করেও তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে যেহেতু শিশুটির জন্ম হয়েছিল, তাই উপজেলা প্রশাসন শিশুটির নাম রাখে, ‘বিজয়।’ সেই বিজয়কে পেতেই তৈরি হয়েছিল অনেকের প্রতীক্ষা। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

আনুমানিক দুদিন বয়সী নবজাতক শিশু পড়ে ছিল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাবরা খালের পাড়ে। কান্নার শব্দ শুনে শিশুটিকে উদ্ধার করেন এক নারী। চারিদিকে এ নিয়ে হইচই পড়ে গেলে থানা পুলিশসহ সবাই এগিয়ে আসে।

যারা শিশুটিকে অবহেলায় ফেলে গিয়েছিল, সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা করেও তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে যেহেতু শিশুটির জন্ম হয়েছিল, তাই উপজেলা প্রশাসন শিশুটির নাম রাখে, ‘বিজয়।’ সেই বিজয়কে পেতেই তৈরি হয়েছিল অনেকের প্রতীক্ষা। তার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব কারা পেতে যাচ্ছেন—অবশেষে তা আদালতের মাধ্যমে ঠিক হয়েছে।

আদালতে জমা পড়া দুটি আবেদনের উপর গতকাল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে বেশ কয়েকটি শর্তে বোয়ালখালীরই ব্যবসায়ী মো. রুবেল ও ফারজানা আকতার বেবী দম্পত্তির জিম্মায় বিজয়কে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে নিঃসন্তান এ দম্পত্তিই খালের পাড়ে পড়ে থাকা বিজয়ের প্রতিপালনের দায়িত্ব পালন করবেন।

এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোস্তাক হোসেন শিশু আইন, ২০১৩ এর ৬৮ ধারা ও জাতিসংঘের শিশু ওয়েলফেয়ার বিধি অনুসরণ করেছেন। আদালতে আবেদনকারী অপরজন হলেন, জেলার মীরসরাইর বাসিন্দা। এ দম্পতিরও কোন সন্তান নেই। কিন্ত আর্থিকভাবে সচ্ছল। কিন্তু মো. রুবেল আর্থিকভাবে একটু বেশি সচ্ছল হওয়ায় আদালত তার আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন। নগরীর চট্টেশ্বরী রোডে জিমের সরঞ্জাম বিক্রির ব্যবসা রয়েছে মো. রুবেলের।

বোয়ালখালীতে গ্রামের বাড়ি হলেও থাকেন নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায়। আদালতের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, ওয়ারিশবিহীন নবজাতক বিজয়কে জিম্মায় পেতে হলে তার নামে ২০ লাখ টাকার এফডিয়ার দেখাতে হবে। আদালতের সেই শর্ত খুশিমনে মেনেও নিয়েছেন মো. রুবেল ও ফারজানা আকতার বেবী দম্পতি। আদালতের আদেশের পর এফডিয়ার সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতের কাছে জমাও দিয়েছেন বিজয়ের আদালত কর্তৃক ঠিক করে দেওয়া পিতা-মাতা।

আদালতে মো. রুবেল ও তার স্ত্রী ফারজানা আকতার বেবীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তাহমিনা আকতার চৌধুরী (রানি)। তার সাথে আরো ছিলেন আইনজীবী সেলিম উল্লাহ চৌধুরী, জাহেদুর রহমান, মফিজুর রহমান, মোজাম্মেল হোসেন ও আনিসুল ইসলাম। আইনজীবী তাহমিনা আকতার চৌধুরী (রানি) আজাদীকে বলেন, নবজাতক শিশুকে উদ্ধারের পর তাৎক্ষনিক তার নাম রাখা হয়েছিল বিজয়। এখন তার পিতা-মাতা হয়েছে। তারা আকিকা করে বিজয়ের নতুন নাম রাখবেন । নিঃসন্তান ছিলেন, এ জন্য মো. রুবেল ও তার স্ত্রী বর্তমানে অনেক খুশি। তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন। তিনি বলেন, শুনানির সময় নবজাতক শিশু আদালতে উপস্থিত ছিলে। পরে তাকে চট্টগ্রামের রৌফাবাদে অবস্থিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোট মনি নিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খাল পাড় থেকে উদ্ধার পরবর্তী তাকে সেখানে রাখা হয়েছিল। অধিদপ্তরের দাপ্তরিক কার্যক্রম শেষে নবজাতক শিশু বিজয়কে আদালতের ঠিক করে দেওয়া পিতা-মাতার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

শিশু বিজয়ের জিম্মা পেতে আদালতে করা আবেদনে মো. রুবেল ও তার স্ত্রী ফারজানা আকতার বেবীর আইনজীবী উল্লেখ করেন, এ দম্পতির ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সন্তান হচ্ছিল না বলে তারা নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ এবং মেডিকেল পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত দেয় যে, সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আবেদনে বলা হয়, নবজাতক বিজয়কে জিম্মায় পেলে তাকে সন্তানের ন্যায় ভালোবাসা, আদর-যত্ন, সেবাসহু লালন-পালন, ভরণপোষণ, লেখাপড়া, চিকিৎসা এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় যেকোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন মো. রুবেল ও তার স্ত্রী।

এছাড়া সমস্ত স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি, টাকা পয়সা নিজ সন্তান হিসেবে তার নামে লিখে দিবেন। চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুছ আজাদীকে বলেন, নিঃসন্তান দম্পতি পেলেন সন্তান আর ওয়ারিশবিহীন শিশু পেলেন পিতা-মাতা। এতে আমরা সবাই খুশি। আল্লাহ নবজাতক শিশুটিকে ভালো রাখুক সেই প্রত্যাশা আমাদের। গত ২৬ ডিসেম্বর বোয়ালখালীর বাবরা খালের এক পাড়ে গোসল করতে গিয়েছিলেন মুন্নি দাস নামের এক নারী। তখন তিনি খালের অপর পাড়ে একজন নবজাতক শিশু ছেলের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। তাৎক্ষণিক তিনি ঐ পাড়ে সাতরে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন থানাকে বিষয়টি জানান। থানা পুলিশ শিশুটিকে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ভর্তি করেন। পরে তাকে রৌফাবাদের ছোট মনি নিবাস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর