সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, উপ-উপাচার্য ড. কাজী শামীম সুলতানা এবং ও কোষাধ্যক্ষ ড. তৌফিক সাঈদের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে উপাচার্য ড. অনুপম সেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, উপ-উপাচার্য ড. কাজী শামীম সুলতানা এবং ও কোষাধ্যক্ষ ড. তৌফিক সাঈদের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে উপাচার্য ড. অনুপম সেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্যাসিবাদ কায়েমে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির এই তিন শীর্ষ ব্যক্তির পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে তালা দিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ক্যাম্পাসে তালা দিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিন সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়টির হাজারীগলি ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ওয়াসা ক্যাম্পাস হয়ে জিইসি মোড় ক্যাম্পাসে আসেন তারা। সেখানে ফের জড়ো হয়ে দিনভর বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ, সমন্বয়ক রিদোয়ান সিদ্দিকী, জোবায়েরুল আলম, তৌহিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করা আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বাইত উল্লাহ বায়াত, প্রান্ত বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কর্মসূচির বিষয়ে বাইত উল্লাহ বায়াত বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিন্দু সম্প্রদায়ের, এখন অনেকেই বলবেন তাঁকে সংখ্যালঘু হিসেবে হেনস্তা করা হচ্ছে। কিন্তু মূল ঘটনা হল তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, আন্দোলনে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বহুল বিতর্কিত ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য তিনি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মালিকানায় থাকা প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়কে নওফেল পরিবারের হস্তগত করতে সহযোগিতা করেছিলেন। পাশাপাশি ৫ আগস্টের পর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টাও করেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শুধু অনুপম সেন নন, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষেরও পদত্যাগ চাই। তারাও স্বৈরাচারেরই দোসর, ফ্যাসিবাদ কায়েমে স্বৈরাচারকে নানাভাবে সাহায্য করে ফায়দা লুটে নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির তিনটি ক্যাম্পাসেই তালা দেওয়া হয়েছে এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস শাটডাউন রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, এই প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়কে ফ্যাসিস্টের দালালমুক্ত করার জন্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের আহ্বানে এই আন্দোলনে শরিক হয়েছি। সিটি করপোরেশনের এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী লীগ কুক্ষিগত করেছিল, এটা সিটি করপোরেশনের কাছে ফেরত দিতে হবে। অনুপম সেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্যাডে ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছিল।

আওয়ামী লীগের এই দালালকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তালা দিয়ে শাটডাউন ঘোষণা করেছে। আমরা তাদের কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করছি।


চবিতে সনদ উত্তোলনে অটোমেশন ইমেইল সিস্টেম চালু হচ্ছে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাঠ চুকিয়ে সনদ উত্তোলন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। আবেদন করা থেকে শুরু করে সনদ হাতে পাওয়া পর্যন্ত নানাভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেকের নামে বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে বানান ভুল নিয়েও অনেককে পড়তে হয় ঝামেলায়। নির্দিষ্ট সময়ে এসে সনদ না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অনেকের। পড়াশোনা শেষ করে অনেকে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করায় সশরীরে এসে সনদ উত্তোলন করা নিয়ে কষ্ট পোহাতে হয়েছে দীর্ঘদিন। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাঠ চুকিয়ে সনদ উত্তোলন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। আবেদন করা থেকে শুরু করে সনদ হাতে পাওয়া পর্যন্ত নানাভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেকের নামে বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে বানান ভুল নিয়েও অনেককে পড়তে হয় ঝামেলায়। নির্দিষ্ট সময়ে এসে সনদ না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অনেকের। পড়াশোনা শেষ করে অনেকে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করায় সশরীরে এসে সনদ উত্তোলন করা নিয়ে কষ্ট পোহাতে হয়েছে দীর্ঘদিন। এবার এসব কষ্ট আর থাকবে না। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অটোমেশন ইমেইল পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছেন। এতে করে শিক্ষার্থী যেকোনো জায়গায় বসে সনদের আবেদন, যাবতীয় সংশোধন এবং সনদ প্রস্তুত হলে জানতে পারবেন।

আগামী রোববার এ পদ্ধতির উদ্বোধন করা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সনদের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সংগ্রহের তারিখ জানানো হবে। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী।

প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, অনেক সময় শিক্ষার্থীরা দূরদূরান্ত থেকে সনদ সংগ্রহে এসে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। আবেদন করার পর সনদ নিতে এসে দেখলেন তার মার্কশীটে ভুল রয়েছে কিংবা নামে ভুল। যার ফলে তিনি প্রয়োজনীয় সময় সনদ পাচ্ছেন না। এমন নানা বিড়ম্বনা কমাতে আমরা অটোমেশন ইমেইল সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নিচ্ছি।

যেখানে শিক্ষার্থীরা সনদের জন্য আবেদন করলে সেটি কম্পিউটারের ইনপুট করে রিসিভ করা হবে। এরপর কর্মকর্তারা চেকিং করে দেখবেন এরমধ্যে সবকিছু ঠিক আছে কি না। যদি ঠিক থাকে তাহলে সাকসেসফুলি রিসিভ জানিয়ে শিক্ষার্থীকে আবার রিপ্লাই দেওয়া হবে। ভুল থাকলে শিক্ষার্থীকে জানানো হবে। তিনি সেটি সংশোধন করবেন। এরপর আমরা তাকে একটি ডেট দিব সেই ডেটে এসে তিনি সনদ নিয়ে যাবেন।

সনদে অনেক সময় ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক ভুল হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের থেকে সংশোধন ফি নেওয়া হবে কি না- এ ব্যাপারে ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক বা কর্মকর্তা মাধ্যমে কোন শিক্ষার্থীর সনদে নাম বা অন্য কোন ভুল হলে এটা সংশোধনের জন্য শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়া ঠিক নয়। এটা বিভাগের থেকে বহন করা হবে। আমরা সেই সিস্টেম চালু করবো।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে অনেক সময় পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে দেখা গেছে। এরকম কোন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থেকে বিরত রাখার কোন নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কি না এমন প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, কোন শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট থাকলে অন্য কোন শিক্ষার্থী দ্বারা তাকে পরীক্ষা থেকে বাধা দেওয়াকে আমরা নিরুৎসাহি করি। যদি কারো বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করতে হবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।

এই উদ্যোগ নিয়ে সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত বলে জানান শিক্ষার্থীরা। সাবেক শিক্ষার্থী বেলায়েত হোসেন জানান, আমি অনার্সের সনদ তুলেছি। এর জন্য আমাকে তিনবার ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে যেতে হয়েছে। শুধু টাকা খরচ হয়েছে এমন না অনেক কষ্টও পোহাতে হয়েছে। আমাকে যে সময় দেওয়া হয়েছিল সে সময়ই আমি গিয়েছি কিন্তু তখন সনদ প্রস্তুত হয়নি। আমাকে ফেরত যেতে হয়েছে। এখন এ উদ্যোগ নেওয়ায় অনেক কষ্ট কমে যাবে।

যে কেউ যেখানে থেকে সনদের জন্য আবেদন করতে পারবে। সংশোধন করতে পারবে। প্রস্তুত হলে সেটাও জানতে পারবে। চবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শামীম হোসাইন বলেন, আমরা এখন পড়াশোনা করছি। সনদ তোলার সময় এখনো হয়নি। কিন্তু আমাদের অনেক সিনিয়র ভাই সনদ তোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য কল দেন। অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় সাবেক শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবে এটি কার্যকর পদক্ষেপ। আশা করি এর কার্যকর ব্যবহার হবে এবং সত্যিকারভাবে কষ্ট লাঘব হবে।

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর