সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম নগরের সরকারি ১০টি স্কুলে ভর্তি আবেদন অনলাইনে চলমান রয়েছে। আবেদন শুরু হওয়ার ৮ দিনের মধ্যেই আসনের প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম নগরের সরকারি ১০টি স্কুলে ভর্তি আবেদন অনলাইনে চলমান রয়েছে। আবেদন শুরু হওয়ার ৮ দিনের মধ্যেই আসনের প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলগুলোতেও আবেদন করছে শিক্ষার্থীরা। তবে বেসরকারি স্কুলগুলোতে তুলনামূলক অনেক কম শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত আবেদন করেছে।
চট্টগ্রামে ১০টি সরকারি স্কুলে মোট আসন রয়েছে ৮০ হাজার ১৩৮টি, আবেদন পড়েছে ৭৭ হাজার ৯০২টি। খালি আসন রয়েছে ২ হাজার ২৩৬টি। যা মোট আসনের মাত্র ৩ শতাংশের কাছাকাছি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এটি গত মঙ্গলবারের সর্বশেষ তথ্য বলে তিনি জানিয়েছেন।
গত ১২ তারিখ থেকে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি, সরকারিকরণ বিদ্যালয়গুলোতেও ভর্তির অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ চলমান রয়েছে।
কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ডিজিটাল লটারি প্রক্রিয়ার আওতাভূক্ত যে সকল প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনি এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বাইরে যে সকল প্রতিষ্ঠান রয়েছে সে সকল প্রতিষ্ঠানকে ২০২৫ নীতিমালা অনুসরণ করে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।
তথ্যমতে, গভ. মুসলিম হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ৪ হাজার ৫৯৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৭টি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫ হাজার ৯৬৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি ও অষ্টম শ্রেণিতে ১ হাজার ৬৪১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ৫ হাজার ৮২৭টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১৭টি। ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ৭ হাজার ৪৫২টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১৬টি। নবম শ্রেণিতে ২ হাজার ৯৮২টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৮টি। চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে আবেদন পড়েছে ৫ হাজার ৩২টি, আসন খালি রয়েছে ২১৮টি। নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৪ হাজার ৫৯১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৬টি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৬ হাজার ৪৩৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি। চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৫ হাজার ৩৪৫টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৮টি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৪ হাজার ৮৭২টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি। বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ২ হাজার ৯৩৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৪ হাজার ৪৮৩টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি ও নবম শ্রেণিতে ৮৫৮টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ৫০টি। সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৬৭টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১৯টি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২ হাজার ১৩১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২০টি। হাজী মুহা. মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৮৯৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি। চট্টগ্রাম সরকারি মডেল হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ১ হাজার ৫৫১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ৫১টি। অষ্টম শ্রেণিতে ৮৭৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৪টি ও নবম শ্রেণিতে ৭৭১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৬টি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এবং মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের বেসরকারি মোট ৩ হাজার ৮৭৮টি স্কুলের ১১ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৫টি শূন্য আসনে ভর্তির জন্য গত ১২ নভেম্বর অনলাইনে আবেদন শুরু হয়।
এ প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত। দেশের ৬৮০টি সরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ১ লাখ ৮ হাজার ৬৬২টি শূন্য আসন রয়েছে। এসব আসনের বিপরীতে মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করেছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ২২৬ জন। তারা মোট ৫ লাখ ৩ হাজার ১৪৫টি আসন ‘পছন্দ’ করেছে। মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের বেসরকারি ৩ হাজার ১৯৮টি স্কুলের প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিতে শূন্য আসনের সংখ্যা ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭১টি।
আগামী ১২ ডিসেম্বর ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের স্কুল ঠিক করা হবে বলে জানা গেছে। অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) ১১০ টাকা ফি দিয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুলে পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করা যাবে।
আবেদনের সময় সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে থানাভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে মহানগর এলাকা ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ের বেসরকারি স্কুলগুলো স্থানীয় ভর্তি কমিটির অনুমোদন নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লটারির মাধ্যমেই শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। তাদের জন্য অনলাইনে আবেদনের প্রয়োজন পড়বে না।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এবং সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ছয় বছরের বেশি হতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স পাঁচ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ বয়স সাত বছর হলেও আবেদন করা যাবে।
নীতিমালায় বলা হয়, দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের কোনো শ্রেণির কোনো শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।
চার উপজেলায় সাড়ে তিন মাসে পৌনে দু’শ গবাদি পশু লুট
গেল ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চার উপজেলায় গবাদি পশু লুট ও চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
গেল ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চার উপজেলায় গবাদি পশু লুট ও চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
পটিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী- এই চার উপজেলায় শতাধিক খামারির অন্তত পৌনে দুইশ গরু-ছাগল লুট ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব পশুর আনুমানিক মূল্য পৌনে তিন কোটি টাকার বেশি। তবে এরমধ্যে অন্তত ১৬০টি পশু খোয়া গেছে পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৮০ থেকে ৯০ জন খামারি। তাদের প্রায় সবাই প্রান্তিক খামারি।
এরমধ্যে আবার গভীর রাতে গরু লুট ঠেকানোর চেষ্টার সময় | সন্ত্রাসীদের গুলিতে খামারি আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। একের পর এক বাণিজ্যিক খামার এবং প্রান্তিক খামারিদের পশু লুটের ঘটনায় অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেলেও অনেকটাই নীরব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। থানা পর্যায়ে পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে নিয়ে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন খামারিরা।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চার মাস হতে চললেও এখনও মাঠ পর্যায়ে পুরোপুরি সক্রিয় হয়নি পুলিশ। সেই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে লুটেরা ও চোরচক্রের সদস্যরা। গভীর রাতে হানা দিয়ে চুরি ও বামারিদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে পশু।
গেল সাড়ে তিন মাসে পটিয়া থেকে প্রায় ১০০টি গরঃ আনোয়ারা থেকে ৬০টি, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী থেকে ৮ টি করে গরু চুরি ও লুট হয়েছে। এরমধ্যে কেবল অক্টোবরেই আনোয়ারায় ২৫ টি এবং নভেম্বরে পটিয়ায় অন্তত ৪০টি গরু লুট হয়েছে। এসব পশুর মধ্যে গেল ১২ নভেম্বর সর্বোচ্চ পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নে চৌধুরী ডেইরি ফার্ম থেকে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার ফ্রিজিয়ান জাতের ১৯টি গরু লুট হয়।
একের পর এক গরু লুটের বিষয়ে পটিয়া ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবছার উদ্দিন মো. রাসেল বলেন, একের পর এক এসব ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। চুরি বা লুটের সময় পুলিশুকে পাওয়া যায় না। মামলা বা ডায়েরি করেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বলতে গেলে পুলিশ কোনো ধরনের সহযোগিতাই করছে না। তাই আমরা এসপি সাহেবের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি, এখন দেখা যাক কী হয়। গরু লুট করে নিয়ে যাওয়ায় অনেক খামারিই এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। গবাদি পশু লুটের এসব ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, আমরা বামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কীভাবে এটা বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। ভুক্তভোগী বামারিরা দাবি করছেন স্থানীয় পুলিশ তাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করছে না। তাই পরু লুটের বিষয়ে খামারিদের নিয়ে এসপি সাহেবের সঙ্গে দেখা করে সমাধান চেয়েছি। তিনি পাঁচ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণসংযোগ) রাসেল বলেন, পুলিশ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে। পুলিশের কাজের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯ টি গরু চুরির ঘটনায় নাম্বার প্লেটহীন গরবোঝাই ট্রাকটি কিন্তু শাহ আমানত সেতু দিয়েই পার হয়েছে। সেখানে দায়িত্বরত টোলসংগ্রহকারী চাইলে পুলিশকে জানাতে পারতেন। আবার গরুর খামারগুলোতে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো যেতে পারে, সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা যেতে পারে।
স্থানীয়ভাবে সংগঠিত হয়ে চুরি বা লুটের এসব ঘটনা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। একটি থানায় যে ক’জন পুলিশ থাকেন, তারা চাইলেই পুরো এলাকা পাহারা দিতে পারবেন না। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হলে এসব ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব।
চাটগাঁর চোখ ডেস্ক