বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

সময় কম, চ্যালেঞ্জ অনেক

অঙ্গীকার ছিল ‘নগরপিতা নয়, নগরসেবক হতে চাই’নিরাপদ সাম্য-সম্প্রীতির চট্টগ্রাম গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্য-শিক্ষাবান্ধব তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ নান্দনিক পর্যটন নগর গড়ার লক্ষ্যে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল ৭৫টি। ২০২১ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাচনের পূর্বে এসব প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

অঙ্গীকার ছিল ‘নগরপিতা নয়, নগরসেবক হতে চাই’। নিরাপদ ও সাম্য-সম্প্রীতির চট্টগ্রাম গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্য-শিক্ষাবান্ধব ও তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ নান্দনিক পর্যটন নগর গড়ার লক্ষ্যে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল ৭৫টি।

২০২১ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাচনের পূর্বে এসব প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। যিনি আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বসবেন নগরপিতার আসনে। এর মধ্য দিয়ে তার সামনে সুযোগ তৈরি হল সেই নির্বাচনী অঙ্গীকার রক্ষার। অথচ চসিকের বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হবে আর মাত্র ১ বছর ৩ মাস ১৬ দিন পর। অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি রক্ষায় খুব বেশি সময় পাচ্ছেন না শাহাদাত। এর ফলে কিছুটা চ্যালেঞ্জেরে মুখেও পড়তে হবে তাকে।

তাছাড়া এমন সময়ে দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি যখন কাউন্সিলর শূন্য চসিক। অবশ্য চসিক পরিচালনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০ সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কমিটির ১৮ জন সদস্যই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত। তারা নিজ নিজ দপ্তরেই ব্যস্ত থাকেন। তাই তারা চসিকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছেন না। ফলে অনেকটা একাই চসিক সামলাতে হবে শাহাদাতকে। আবার দীর্ঘদিন মেয়র না থাকায় ভেঙে পড়েছে চসিকের প্রশাসনিক ‘শৃঙ্খলা” ।

সেটা পুনরুদ্ধারও চ্যালেঞ্জ হবে মেয়রের জন্য। অবশ্য কম সময়েও নানা চ্যালেঞ্জ এবং প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে কাজ করবেন বলে আজাদীকে জানিয়েছেন ডা. শাহাদাত। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকবে। সেগুলো মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাব। দায়িত্ব নিয়ে কিছু কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে চান বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন এবং হেলদি সিটিতে রূপান্তরে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করব। ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, এ মুহূর্তে যে কাজগুলো করা বেশি জরুরি সেগুলো করব। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। শহরের রাস্তাঘাটের অবস্থা বেশি খারাপ, নষ্ট হয়ে গেছে, এতে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। কাজেই মশক নিধন এবং ভাঙা রাস্তাঘাট সংস্কার অগ্রাধিকার পাবে। ইতোপূর্বে যেসব কাজ হয়েছে তার মান কেমন ছিল সেটাও দেখব। এছাড়া জোর থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও। শহরের অনেকগুলো সড়কবাতি ঠিক নেই। অনেক জায়গা অন্ধকার । আমি নিজে পরিদর্শন করে দেখব। শহরের আলোকায়নের বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে।

মেয়র বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু প্ল্যান আছে। সেকেন্ডারি কিছু স্টেশন (এসটিএস) করব। বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করে এনে এসব স্টেশনে রাখা হবে। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা রাখলে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এসটিএস থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ওয়েস্ট প্রোডাক্টস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান আছে। এক্ষত্রে উন্নত পরিচ্ছন্ন বিভাগে প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি সংযোজন, ডাস্টবিন আধুনিকায়ন করা, বাসা-বাড়ি থেকে সংগৃহীত বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থাসহ বর্জ্যকে রি-সাইক্লিং করার পরিকল্পনা আছে।

নতুন একটি বাস টার্মিনাল করার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে শাহাদাত বলেন, কর্ণফুলী ব্রিজ গোলচত্বরে সবসময় যানজট লেগে থাকে। এ যানজট নিরসনে একটি বাস টার্মিনাল করার পরিকল্পনা আছে। এ জন্য আমি মনে মনে জায়গা খুঁজছি। কুলগাঁওয়ে সিটি কর্পোরেশনের একটি বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প আছে। এটার কাজ মনে হয় একটু ধীরগতি হয়ে গেছে। সেটার কাজও যেন দ্রুত শেষ হয় সেদিকে নজর থাকবে। চসিককে স্বাবলম্বী করার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নিবে। হালিশহর ফইল্যাতলীতে একটি কিচেন মার্কেটের কাজ চলছে। সেটার কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা থাকবে।

কাউন্সিলর ছাড়া কাজ করা প্রসঙ্গে বলেন, একটি কমিটি তো আছেই। তারা প্রশাসনিক কাজে সহযোগিতা করবেন। এছাড়া এলাকাভিত্তিক বিএনপিসহ অন্যান্য দল ও পেশাজীবীদের মধ্যে যারা সচেতন তাদের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে। এরপরও যদি সদস্যা দেখি সেটা মন্ত্রণালয়কে জানাব।

সময় মাত্র ১৩ মাস : স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৬ নম্বর ধারায় বলা আছে- ‘কর্পোরেশনের মেয়াদ হবে কর্পোরেশন গঠিত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত প্রথম সভার তারিখ তারিখ থেকে পাঁচ বছর’। এদিকে চসিকের ষষ্ঠ পরিষদের প্রথম সভা হয়েছে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। ওই হিসেবে এ পর্ষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ ছিল ২০২৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি । আজকেসহ ইতোমধ্যে ৩ বছর ৯ মাস ১৪ দিন পেরিয়েছে। বাকি আছে ১ বছর ৩ মাস ১৪ দিন।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৩৪ নং ধারা অনুযায়ী, কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হয়। অর্থাৎ বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার চসিকের ৭ম পর্ষদের নির্বাচন আয়োজন করতে চাইলে ২০২৫ সালের ২২ আগস্ট থেকে ২০২৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আয়োজন করতে পারবে। ওই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে চাইলে পদত্যাগ করতে হবে ডা. শাহাদাত হোসেনকে। তখন ১ বছর ৩ মাস ১৬ দিনেরও কম সময় দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন তিনি।

চট্টগ্রামে আসবেন আজ : আজ সকালে মহানগর প্রভাতী ট্রেন যোগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন এবং বেলা ১২টায় চট্টগ্রামে এসে পৌঁছানোর কথা মেয়রের। চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে তিনি দলের নেতাকর্মী ও সুধীজনের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখবেন। এরপর হযরত আমানত শাহ (রা.) ও হযরত বদর শাহ (রা.) মাজারে গিয়ে জিয়ারত করবেন। তারপর তিনি লালদিঘি পাড় সংলগ্ন চসিকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে চসিকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করবেন এবং সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। এরপর তিনি টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে ভবনে যাবেন, সেখানে দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় চসিকের ষষ্ঠ পরিষদের নির্বাচন। এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। নির্বাচনে ভোট পড়ে মাত্র ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ। নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ডা. শাহাদাত। তিনি ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। তবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৮ ভোট দোখিয়ে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। একই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণ করেন রেজাউল করিম।

এদিকে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ডা. শাহাদাত ৯ জনকে বিবাদী করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে এ মামলার রায় দেন। রেজাউল করিম চৌধুরীর মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেন। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেন। এরপর ৮ অক্টোবর ডা. শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। সর্বশেষ ৩ নভেম্বর শপথ বাক্য পাঠ করেন তিনি। এর আগে সরকার পতনের পর ১৯ আগস্ট চট্টগ্রামসহ দেশের ১২ সিটি কর্পোরশনে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তীতে প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে ১৭ অক্টোবর চসিক থেকে প্রশাসক বাদ দেয়া হয়।


স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে রেফারেল পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা আছে

ইউনিয়ন উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে সদর বিশেষায়িত হাস- পাতালগুলোতে চাপ কমবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, রেফারেল পদ্ধতি না থাকায় শহরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে সদর ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে চাপ কমবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, রেফারেল পদ্ধতি না থাকায় শহরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে। এ চাপ কমাতে এবং স্থানীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে রেফারেল পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর আগে চিঁ- কিৎসকের পাশাপাশি লোকবলসহ যেসব সংকট রয়েছে, তা নিরসনের চেষ্টা চলছে।

গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে রোগী-স্বজনদের সাথে কথা বলেন। এরপর হাসপাতালে দায়িত্বরতদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ের ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে লোকবল ও যন্ত্রপাতির অভাব আছে। উপজেলা হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালে সমস্যা রয়ে গেছে। এটা আছে তো ওটা নেই, ওটা আছে তো এটা নেই। ইউনিয়ন পর্যায়ে কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক হয়েছে। কিন্তু সেখানেও প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসক নেই। ফলে ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিপূর্ণ চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসাসেবা সবকিছুর সমন্বয়ে হয়ে থাকে। এখানে চিকিৎসক, টেকনোলজিস্ট বা চিকিৎসা উপকরণের মধ্যে কোন একটি না থাকলে পুরো চিকিৎসাসেবাই অসম্ভব হয়ে ওঠে।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বহুমুখী সমস্যা আছে। বিভিন্ন হাস- পাতাল-ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্সের সংকট রয়েছে। যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। অনেক জায়গায় এমআরআই মেশিন, এক্সরে মেশিন নষ্ট। যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো হয়তো একদিনে সমাধান করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে সেটি একটা পর্যায়ে গিয়ে সমাধান করা সম্ভব হবে। এসব সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আমাদের অনেক ছেলে-মেয়ে আহত হয়েছেন, অনেকে শহীদও হয়েছেন। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জন্য সরকারের একটা বরাদ্দ আছে; সেটা তারা পেয়ে যাবেন। যারা আহত হয়েছেন তাদের বিষয়ে সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে- তাদের সঠিক চিকিৎসা দেয়া। সেটা নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ডাক্তারদের পরামর্শে আহত তিনজনকে এরইমধ্যে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আরও ২৫ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে। আমাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি হচ্ছে আহতদের সুচিকিৎসা।

পরে তিনি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন । এ সময় চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অং সুই প্রু মারমা, সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ বিভাগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


সবার মত নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংশোধন হতে পারে : কামাল হোসেন

সর্বমত নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংশোধন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ৭২ এর সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান, বিশিষ্ট আই- নজীবী ড. কামাল হোসেন। এটি দৈনিক সুপ্রভাতের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

সর্বমত নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংশোধন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ৭২ এর সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান, বিশিষ্ট আই- নজীবী ড. কামাল হোসেন।

সোমবার (৪ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ৪ নভেম্বর ১৯৭২ সংবিধান দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন । বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক প্রমুখ। ড. কামাল হোসেনের বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরে আমরা দেখতে পেরেছি- আমাদের আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষাগুলোকে আরও দৃঢ় করতে হবে। আমাদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া বজায় রাখতে হবে। সব স্তরে স্বচ্ছতা আনতে হবে। আমাদের সংবিধানকে অত্যাচারের বিরুদ্ধে একটি সুরক্ষা কবচ হিসেবে দাঁড় করাতে হবে। যার সুরক্ষাবলয়ে কোনও নাগরিক অবিচার এবং অন্যায়ের আশঙ্কায় জীবনযাপন করবে না।

তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়সঙ্গত, এবং সংবিধানকে অত্যাচারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা কবচ হিসেবে দাঁড় করাতে হবে। আজকের প্রেক্ষাপটে, আমাদের সংবিধানকে পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। এই সংবিধান যাতে কোনোভাবেই অত্যাচারের সুযোগ না দেয়- তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, মানুষের অধিকার রক্ষার কাজ শুরু করেছিলাম । এই দুঃসহ অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বাংলাদেশের মানুষের সংবিধানিক অধিকার রক্ষার কাজ এখনও শেষ হয়নি । তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি হিসেবে এই সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। এই সংবিধানের ভিত্তি ছিল- আমাদের ত্যাগ এবং সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা। এই সংবিধানের আদর্শগত ভিত্তি ছিল- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।

*একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়সঙ্গত এবং সাম্যভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। লিঙ্গ, ধর্ম, জাতিসত্তা, রাজনৈতিক বা অন্য যেকোনও পরিচয়ের কারণে বৈষম্য হতে দেওয়া যাবে না। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সব সাংবিধানিক সংস্কার আমাদের করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আইনজীবী এবং বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক- সমাজ হিসেবে এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় আপনারা অংশগ্রহণ করুণ। সাধারণ জনগণকে আপনাদের মতামত জানান । এবং সাধারণ জনগণের মতামত যাতে সংশোধন প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত হয়, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন । সংবিধানের জন্য আপনারা শক্তির প্রতীক হয়ে উঠুন ।’ তিনি বলেন, সাংবিধানিক শাসন রক্ষা করতে হলে মানুষকে সজাগ হতে হবে। জনগণ ক্ষমতার মালিক, মালিকদের দায়িত্ব অনেক। প্রত্যেক নাগরিককে প্রহরির ভূমিকা রাখতে হবে।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, ৫২ বছরে আমার হিসেবে আমরা ১২ বার সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছি। ১৯৭১ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত আমরা ৫ বার সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করেছি। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে এই বিতাড়িত সরকার ক্ষমতায় আসলো। ২০০৯ সাল থেকে অমরা বহুদলীয় সংসদীয় একনায়কতন্ত্র কায়েম করলাম। আফ্রিকার কিছু দেশে আছে। সংসদ আছে তার পরেও একনায়কতন্ত্র ।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, জাতীয় ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আপনারাই মুছে যাবেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ১০টি সংস্কার কমিশন করেছেন করেন, সংস্কার করেন। কিন্তু নীতিমালা হওয়ার আগে কীভাবে বিচারপতি নিয়োগ হলো। ১৫ জন বিচারপতি বিচারের বাইরে, এসবের জবাব থাকা উচিত।

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর