বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

সীমান্তে আতঙ্ক

টেকনাফ উপজেলার নাফনদীর সীমান্ত ৩০ কিলোমিটার জুড়ে রাতভর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় সীমান্তে বসবাসকারীরা। নাফ নদীর ওপার থেকে টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে থেমে থেমে ভেসে আসছে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। এটি দৈনিক সুপ্রভাতের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

টেকনাফ উপজেলার নাফনদীর সীমান্ত ৩০ কিলোমিটার জুড়ে রাতভর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় সীমান্তে বসবাসকারীরা। নাফ নদীর ওপার থেকে টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে থেমে থেমে ভেসে আসছে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। এতে সীমান্তের বসবাসরত লোকজনের মাঝে আবার নতুন করে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া, জালিয়া পাড়া, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া, মৌলভী পাড়া, হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া, দমদমিয়া, সাবরাং, শাহ- পরীর দ্বীপসহ নাফনদীর মোহনা সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ।

সীমান্তের বাসিন্দারা বলছে, গত কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবারও বড় ধরনের মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। কাঁপছে সীমান্তের বাড়ি ঘর।

টেকনাফ নাইট্যংপাড়া বাসিন্দা সংবাদকর্মী আরফাত সানি বলেন, “মিয়ানমার সীমান্ত থেকে রাতভর পর পর ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। মনে হচ্ছে মর্টারশেলের আওয়াজ।

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ৫-১০ মিনিট পরপর মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আমরা সারারাত না ঘুমিয়ে বসে থেকে কাটিয়েছি। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবারও রাতে সারারাত থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে। রাত ৯ থেকে বিকট শব্দ শুরু হয়েছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, “শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছে। সারারাত থেমে থেমে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। আমার বাড়ি থেকেও বিকট শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সংঘাতে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

ফলে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার বৃদ্ধি করা হয়েছে।


ঢাকায় পাইপলাইনে তেল যাবে আগামী মাসে

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অঞ্চলে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ আগামী মাস থেকে শুরু হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলার পর বাস্তবায়িত প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অঞ্চলে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ আগামী মাস থেকে শুরু হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলার পর বাস্তবায়িত প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

বছরে ৫০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহের সক্ষমতা নিয়ে নির্মিত এই পাইপলাইনে বর্তমানে ৩০ লাখ টন তেল যাবে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল-ফতুল্লা ডিপোতে আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্প কোটি কোটি টাকার জ্বালানি তেল অপচয় ঠেকানোসহ বছরে অন্তত আড়াইশ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে বছরে গড়ে ৭০ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টন জ্বালানি ব্যবহৃত হয় ঢাকা বিভাগে।

এই তেলের প্রায় পুরোটা পতেঙ্গার গুপ্তাখাল প্রধান ডিপো থেকে নৌপথে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল, ফতুল্লা ও চাঁদপুর ডিপোতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে পরিবহন করা হয়। রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমেও কিছু জ্বালানি তেল পরিবাহিত হয়। দেশের জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে।

তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় ২০০টি অয়েল ট্যাংকার এসব জ্বালানি তেল পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে সিস্টেম লসের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা কমে যাওয়ায় জ্বালানি তেল পরিবহনে সংকট তৈরি হয়। অপরদিকে বেসরকারি খাতের অন্তত ৩০ হাজার ট্যাংক লরির পাশাপাশি রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথেও জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয় দেশের নানা অঞ্চলে।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জ্বালানি পরিবহনের সিস্টেম লস কমানো, নৌপথে তেল পরিবহনের বিপুল খরচ সাশ্রয়সহ দ্রুততম সময়ে তেল পৌঁছানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার ফতুল্লা পর্যন্ত আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের অক্টোবরে একনেকে অনুমোদন লাভ করে। কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কিন্তু নানামুখী প্রতিবন্ধকতা এবং প্রতিকূলতার মাঝে পড়তে হয় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটিকে। পরে সরকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। পদ্মা অয়েল কোম্পানির তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করছে।

প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল পর্যন্ত ৭টি স্টেশনসহ ২৪১.২৮ কিলোমিটার ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন নির্মাণ, গুদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত দুটি স্টেশনসহ ৮.২৯ কিলোমিটার ১০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিভিন্ন নদীর তলদেশ দিয়ে অন্তত ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় কুমিল্লার বরুড়ায় নতুন একটি ডিপো স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে চাঁদপুরসহ সন্নিহিত অঞ্চলে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।

চট্টগ্রামের ডেসপ্যাচ টার্মিনালের স্ক্যাডা মাস্টার কন্ট্রোল স্টেশন থেকেই ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা করা হবে। স্ক্যাডা, টেলিকমিউনিকেশন এবং লিক ডিটেকশন করতে এই পাইপলাইনের সাথে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইন সংযুক্ত থাকবে।

আগামী মাসের শুরুতে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে বিপিসির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, পাইপলাইনটি পুরোদমে চালু হলে জ্বালানি তেল সরবরাহে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি জ্বালানি নিরাপত্তাও সুদৃঢ় হবে।


রাতারাতি বৈষম্যের দেয়াল ভাঙা সম্ভব না

সরকার বৈষম্যের দেয়াল ভাঙার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম বলেছেন, ১৬ বছর ধরে স্বাস্থ্যখাতে যে বৈষম্যের দেয়াল সৃষ্টি হয়েছে, তা হুট করেই দিনে দিনে কিংবা রাতারাতি ভাঙা সম্ভব নয়। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

সরকার বৈষম্যের দেয়াল ভাঙার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম বলেছেন, ১৬ বছর ধরে স্বাস্থ্যখাতে যে বৈষম্যের দেয়াল সৃষ্টি হয়েছে, তা হুট করেই দিনে দিনে কিংবা রাতারাতি ভাঙা সম্ভব নয়। তবে সরকার সব কিছু সমাধানের চেষ্টা করছে। বৈষম্যের দেয়াল ভাঙতে হলে আমাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়েই ভাঙতে হবে। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি। গতকাল রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

গণঅভ্যুত্থানের পর ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি দাওয়ার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ডাক্তার, নার্সরা নানা অভিযোগ নিয়ে আসছে।

দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলনও করছে। কিন্তু সব দাবি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তারা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করছে সরকার।
সবগুলোর ক্ষেত্রে একটা বৈষম্য বিরাজমান। আমরা চাইনা বৈষম্যের মধ্যে সবাইকে রাখতে। যারা আসছে, সবার কথাই মনযোগ দিয়ে আমরা শুনছি, চেষ্টা করছি একে একে সমাধানের। ইতোমধ্যে কিছু সমাধানও হয়েছে। কাজেই সবকিছুরই সমাধান হবে। কিন্তু এত বছরের বৈষম্যের দেয়াল রাতারাতি ভাঙা সম্ভব না।

এর আগে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জাতীয় পর্যালোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অফিসার ডা. চিরঞ্জিত দাস, ইউনিসেফের চিফ এসবিসি সেকশন প্রতিনিধি মিস ব্রিজেত জব জনসন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অং সুই প্রু মারমাসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল বিভাগ ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

এছাড়াও সিটি কর্পোরেশন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও কওমি মাদ্রাসার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জরায়ু ক্যান্সারের টিকার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, জরায়ু ক্যান্সার রোধে কার্যকরী এইচপিভি টিকা নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চলছে, নানা কথাবার্তা হয়েছে। আমি মনে করি অপপ্রচার সবসময় থাকে। এক সময় আমরা যখন ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়ে কাজ করেছি, ডায়রিয়া নিয়ে কাজ করেছি তখনও অপপ্রচার ছিল।

অপপ্রচার রুখে দেবার শক্তি হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। এটার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। মানুষ যদি সচেতন হয় যে যেদিক থেকে বাধা নিয়ে আসুক না কেন তা অতিক্রম করা সম্ভব।

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর