সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাওয়া স্কুলের সামনে শুরু হচ্ছে র‍্যাম্পের কাজ

এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর নগরীর বাওয়া স্কুলের সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণের কাজ আজ থেকে শুরু হচ্ছে। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর নগরীর বাওয়া স্কুলের সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণের কাজ আজ থেকে শুরু হচ্ছে।

বাওয়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এই র‍্যাম্প নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এতে নগরীর বিস্তৃত এলাকার মানুষের জন্য এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার কঠিন হয়ে ওঠে। পরে বাওয়া স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করার পর তারা র‍্যাম্প নির্মাণের ব্যাপারে তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করে।

সিডিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নগরীর যানজট নিরসনসহ বহুমুখী লক্ষ্য সামনে নিয়ে পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এক্সপ্রেসওয়ে লালখান বাজারে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে। এতে পতেঙ্গা থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে।

এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ
সম্পন্ন হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের কানেক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য মূল ফ্লাইওভার থেকে ৮টি এলাকায় ১৫টি র‍্যাম্প নির্মাণের ব্যবস্থা রেখে নকশা প্রণয়ন করা হয়। জিইসি মোড়ে ম্যানোলা হিলের পাশ থেকে একটি র‍্যাম্প উঠে তা ওয়াসা মোড়ে ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ র‍্যাম্প ব্যবহার করে জিইসি মোড় থেকে সন্নিহিত বিস্তৃত এলাকার শত শত যানবাহন এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার সুযোগ পাবে। জাকির হোসেন রোড, ও আর নিজাম রোড় থেকে শুরু করে আশেপাশের মানুষের এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার এই র‍্যাম্প নকশায় রয়েছে। র‍্যাম্প নির্মাণের লক্ষ্যে পাইলিংসহ আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করা হয়। নির্মাণ কার্যক্রমের মাঝ পর্যায়ে এসে বাওয়া স্কুলের শিক্ষার্থীরা র‍্যাম্প নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে। র‍্যাম্প নির্মিত হলে মেয়েদের নানা ধরনের সমস্যা হবে-এমন অভিযোগ উত্থাপন করে। ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে র‍্যাম্পটির নির্মাণকাজ ১৯ সেপ্টেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অপরদিকে টাইগারপাস মোড়ে দুটি র‍্যাম্পের একটি সিআরবি রোড থেকে, অপরটি আমবাগান রোড থেকে এসে ফ্লাইওভারে যুক্ত হওয়ার কথা । কিন্তু গাছ কাটা পড়ায় সিআরবির দিকের র‍্যাম্প নির্মাণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় টাইগারপাস মোড়ে র‍্যাম্প নির্মিত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। টাইগারপাসে আমবাগানের দিকে যে র‍্যাম্প নামানো হয়েছে সেটা দিয়ে দক্ষিণ খুলশীসহ সন্নিহিত অঞ্চলের যানবাহন পতেঙ্গার দিক থেকে এসে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামবে। এটি চালু হয়েছে। লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনেও নামার জন্য একটি র‍্যাম্প চালু রয়েছে। এই র‍্যাম্পটি দিয়ে লালখান বাজার, ওয়াসা মোড়, জিইসি মোড়সহ সন্নিহিত অঞ্চলের যানবাহন নেমে মূল সড়ক ধরে গন্তব্যে যাবে। এছাড়া আগ্রাবাদ মোড়ে ৪টি, ফকিরহাটে ১টি, নিমতলা মোড়ে ২টি, সিইপিজেড মোড়ে ২টি, সিমেন্ট ক্রসিংয়ে ১টি এবং কেইপিজেডের সামনে দুটি র‍্যাম্প ফ্লাইওভারে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এক্সপ্রেসওয়ে এসব র‍্যাম্পসহ ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ হওয়ার কথা।

বেশ কিছুদিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল করছে। অনেক মানুষ প্রতিদিন এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করছেন। এতদিন লালখান বাজারে নামার র‍্যাম্পটি এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল। কিন্তু ৮ অক্টোবর থেকে সিডিএ সেটিকে নামার জন্য ব্যবহার শুরু করেছে। ফলে এখন এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার জন্য বায়েজিদ রোডের বেবি সুপার মার্কেট বা মুরাদপুরের এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারের সামনের র‍্যাম্প ব্যবহার করতে হচ্ছে।

এতে করে খুলশী, জামালখান, নিউ মার্কেট, আন্দরকিল্লা এবং ও আর নিজাম রোডসহ শহরের একটি বড় অংশের মানুষকে ষোলশহর কিংবা মুরাদপুর গিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে হচ্ছে। এতে ষোলশহর ও মুরাদপুরে বাড়তি যানবাহনের চাপ সৃষ্টি হয় । নাগরিক দুর্ভোগও বেড়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সিডিএর কর্মকর্তারা বাওয়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে র‍্যাম্পটিতে গাড়ি চলাচলের বিষয়টি তাদের বোঝানো হয়। স্কুলের সামনে র‍্যাম্পটি রাস্তা থেকে ৩৫ ফুট উপরে থাকবে। স্কুলের গেটে র‍্যাম্পের পিলার হচ্ছে না। র‍্যাম্পটিতে এক পিলার থেকে অপর পিলারের দূরত্ব (স্প্যান) ৮২ ফুট থেকে ১১৪ ফুট। সিডিএর কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে সক্ষম হন, এই র‍্যাম্প শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা করবে না। বরং র‍্যাম্প না হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়বেন। এরপর শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম তুলে নেয়।

এদিকে আজ রোববার সকাল থেকে বাওয়া স্কুলের সামনে র‍্যাম্প নির্মাণের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হচ্ছে। প্রকল্প এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া ভারী যন্ত্রপাতিগুলো এনে সড়কের পাশে রাখা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৬শ মিটার দীর্ঘ র‍্যাম্পটি নির্মাণে তিন মাস সময় লাগতে পারে। এ র‍্যাম্প ওয়াসা মোড়ে এক্সপ্রেসওয়ের সাথে যুক্ত হলে জিইসি মোড় থেকে অসংখ্য গাড়ি প্রতিদিন এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার সুযোগ পাবে।

বাওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আরিফুল হাসান বলেন, সিডিএ থেকে একটি টিম এসে আমাদের মেয়েদের সাথে বৈঠক করেছিল। উনারা মেয়েদের সার্বিক অবস্থা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এই র‍্যাম্পের ব্যাপারে এখন শিক্ষার্থীদের আর আপত্তি নেই।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান আজাদীকে বলেন, কানেক্টিভিটি বাড়ানো না গেলে এত টাকা খরচ করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ অর্থহীন হয়ে যাবে। জিইসি মোড়ের র‍্যাম্পটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বাওয়া স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। সফল আলোচনার পর তারা আপত্তি প্রত্যাহার করে। আমরা আবার কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। রোববার (আজ) থেকে কার্যক্রম শুরু হবে।


হাতি নিয়ে বিপদে দুই লাখ মানুষ

আনোয়ারা-কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে কেইপিজেড এলাকায় গত ৭ বছর ধরে চলছে বন্যহাতির তাণ্ডব। হাতিগুলো যেন এলাকাবাসীর সামনে ১০ নং মহাবিপদ সংকেত হয়ে এসেছে। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

আনোয়ারা-কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে কেইপিজেড এলাকায় গত ৭ বছর ধরে চলছে বন্যহাতির তাণ্ডব। হাতিগুলো যেন এলাকাবাসীর সামনে ১০ নং মহাবিপদ সংকেত হয়ে এসেছে।

গতকাল বিকালে কেইপিজেডের কারখানা ছুটির সময় বিশালাকৃতির চারটি হাতি সড়কে নেমে এলে শ্রমিকেরা প্রাণের ভয়ে এদিক-সেদিক দৌড়াতে থাকেন। এ সময় কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাতির আক্রমণে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন নারীসহ ১৬ জন। আহত হয়েছেন অনেকে। আহতদের মধ্যে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারীও রয়েছেন।

বর্তমান অবস্থা এমন যে, পথ চলতেও হাতির ভয়। শিল্প কারখানা থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ হাতে দৌড়াতে হয়। বাড়ি বাড়ি পাহারা বসিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন মানুষ। সন্ধ্যা নামলেই আতঙ্ক দেখা দেয় পুরো এলাকায়। হাতি সরাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত মাঠে নেমেছেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধন মিছিল, সভা-সমাবেশ চলছে নিয়মিত। আর কত প্রাণ ঝরলে, আর সম্পদ নষ্ট হলে হাতিগুলো এখান থেকে সরানোর উদ্যোগ নেবে সরকার? এমন প্রশ্ন আনোয়ারা-কর্ণফুলীর দুই লাখ মানুষের এবং কেইপিজেডে কর্মরত ত্রিশ হাজার শ্রমিকের।

এমন পরিস্থিতিতে হাতির বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে প্রধান করে ১১ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ রোববার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

৭ বছরে ১৬ মৃত্যু, আহত ৫০ : আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলায় ৭ বছরে হাতির আক্রমণে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশত।

দিনেদুপুরে হাতি : এতদিন সন্ধ্যা নামলে হাতি বের হতো। কিন্তু গতকাল বিকাল ৫টার দিকে দল বেঁধে হাতিগুলো সড়কে নেমে আসে। এ সময় কেইপিজেডের কারখানাগুলো ছুটি হয় । শ্রমিকেরা প্রাণ ভয়ে দৌড়াতে থাকেন।

দেয়াং পাহাড় নিয়ে জাইকার প্রতিবেদন : কেইপিজেড প্রতিষ্ঠার আগে দক্ষিণ চট্টগ্রামে শিল্পায়ন করতে সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরির জন্য জাপান সরকারের জাইকাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেয়াং পাহাড় নিয়ে জাইকা তাদের সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, এই প্রকল্পের স্থানটি পাহাড়ি এলাকা। এখানে খুব কম গাছ বা সবুজ আচ্ছাদন রয়েছে। এখানে মূল্যবান প্রজাতি বা স্থানীয় প্রাণী এবং গাছপালা নেই। সুতরাং শিল্পায়ন করতে গেলে এখানে পরিবেশে প্রভাব পড়বে না। এ প্রতিবেদনে তৈরির সময় জাইকা দেয়াং পাহাড়ে হাতির অস্তিত্ব বা বসবাসের কথা উল্লেখ করেনি। চট্টগ্রামের বিশেষায়িত এসব অঞ্চল নিয়ে সরকারের কাছে জাইকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৎকালীন সরকার কেইপিজেডকে শিল্পায়নের জন্য অনুমোদন দেয়।

হাতির বিরুদ্ধে শতাধিক জিডি : হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তরা আনোয়ারা ও কর্ণফুলী থানায় শতাধিক জিডি করেছেন।

চারপাশে সাগর নদী ও খাল : ১১ ইউনিয়ন নিয়ে আনোয়ারা উপজেলা গঠিত হয়েছে। আনোয়ারার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণে শঙ্খ নদী, পূর্বে চানখালী ও উত্তরে কর্ণফুলী উপজেলা। কর্ণফুলী উপজেলা পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই উপজেলার পূর্বে শিকলবাহা খাল, উত্তর ও পশ্চিমে কর্ণফুলী নদী, দক্ষিণে আনোয়ারা উপজেলা। তাই উপজেলার চারপাশ সাগর, নদী ও খাল দিয়ে ঘেরা।

দেয়াং পাহাড় : আনোয়ারা উপজেলার বটতলী, বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাঁও, বৈরাগ ইউনিয়ন ও কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দেয়াং পাহাড় অবস্থিত। এটি একটি লালমাটির ডিবি, উপজেলা ভূমি অফিসে এটার শ্রেণি টিলা হিসেবে রয়েছে, স্থানীয়দের কাছে এটি দেয়াং পাহাড় নামে পরিচিতি হলেও আসলে এটি লাল মাটির টিলা।

দেয়াং পাহাড়ের সাথে বনাঞ্চলের সংযোগ নেই : আনোয়ারা ও কর্ণফুলী দুই উপজেলার চারপাশে সাগর, নদী আর খাল থাকায় কোনো বনাঞ্চলের সাথে এর কানেক্টিভিটি বা সংযোগ নেই। হাতিগুলো খাবারের সন্ধানে চুনতি অভয়ারণ্য থেকে এসে পাহাড়ে অবস্থান করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেইপিজেডের এক কর্মকর্তা বলেন, ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে দেয়াং পাহাড়ে বনের কোনো কানেক্টিভিটি নেই। আনোয়ারার চারপাশে সাগর ও নদী। তাছাড়া দেয়াং পাহাড়টা ছিল লাল মাটির ডিবি। এখানে বন বিভাগের কোনো বনায়ন নেই। টানেল চালুর আগে থেকে শিল্প সম্ভাবনা বিবেচনায় এখানে শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে। কয়েকটি হাতি এই শিল্প এলাকার মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছে।

দুইশ বছরের ইতিহাসে হাতি দেখেনি মানুষ : স্থানীয় বাসিন্দা ও দক্ষিণ জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ওসমান গনী জানান, বিগত দুইশ বছরের ইতিহাসে দেয়াং পাহাড়ের টিলা কিংবা এই এলাকায় কখনো হাতি বসবাস করেনি। কেইপিজেড প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর বিগত সাত-আট বছর ধরে হাতিগুলো অবস্থান করা শুরু করেছে। কেননা আগে এখানে পানি ছিল না। এখন কেইপিজেড বড় বড় লেক তৈরি করেছে। গাছপালা রোপণ করে সবুজায়ন করায় হাতিগুলো এসে আর ফিরছে না।

দুই লাখ বাসিন্দা, ৩০ হাজার শ্রমিকের আতংক : স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী শাকিল বিন ইসলাম বলেন, বর্তমানে হাতিগুলো আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বসবাসরত দুই লক্ষাধিক মানুষ এবং কেইপিজেডে কর্মরত ত্রিশ হাজার শ্রমিকের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাতিগুলো আমাদের জন্য যেন যমদূত। হাতির কারণে আমরা সারাক্ষণ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে থাকি।

হাতির কারণে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত : কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানায়, হাতির কারণে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এলাকাবাসী মনে করে, হাতিগুলো কেইপিজেড লালন পালন করছে। এলাকার কোথাও হাতি হামলা করলে লোকজন কেইপিজেড অবরোধ করে, আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর চড়াও হয়। অথচ হাতির আক্রমণে কেইপিজেডের বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে শ্রমিক-কর্মচারীরা আহত হচ্ছে। কেইপিজেডের বাগান ধ্বংস করছে, স্থাপনার ক্ষতি করে যাচ্ছে। হাতির কারণে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে : হাতির আক্রমণ আর আতঙ্ক থেকে বাঁচার কোনো উপায় না দেখে এলাকাবাসী বিভিন্ন ব্যানারে আন্দোলন করছেন। ইতোমধ্যে হাতিগুলো সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে তারা সোচ্চার হয়েছেন। ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় মইনুদ্দিন বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা এলাকায় আর হাতি দেখতে চাই না। নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে বন বিভাগ ও প্রশাসনকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ শুরু করেছে।


মনি লালের টাকায় ‘লাল’ স্ত্রী!

সেপিকা দাশ। পেশায় গৃহিণী হলেও তাঁর রয়েছে মাছ চাষের ব্যবসা। এর ফাঁকে করেন কমিশন ব্যবসাও। এসব ব্যবসা পরিচালনা করে মাত্র কয়েক বছরেই সম্পদ গড়েন কোটি টাকার। অথচ বাস্তবে মাছ চাষ কিংবা কমিশন ব্যবসার মতো কোন কিছুই নেই সেপিকা দাশের সরকারি চাকুরিজীবী স্বামী মনি লাল দাশের ‘অবৈধ’ আয়েই কোটিপতি বনেছেন তিনি। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

সেপিকা দাশ। পেশায় গৃহিণী হলেও তাঁর রয়েছে মাছ চাষের ব্যবসা। এর ফাঁকে করেন কমিশন ব্যবসাও। এসব ব্যবসা পরিচালনা করে মাত্র কয়েক বছরেই সম্পদ গড়েন কোটি টাকার । অথচ বাস্তবে মাছ চাষ কিংবা কমিশন ব্যবসার মতো কোন কিছুই নেই সেপিকা দাশের সরকারি চাকুরিজীবী স্বামী মনি লাল দাশের ‘অবৈধ’ আয়েই কোটিপতি বনেছেন তিনি। স্ত্রী-ই কোটিপতি তা নয়, মনি লাল দাশেরও রয়েছে পৌনে এক কোটি টাকার সম্পদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

মনি লাল দাশ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) হিসেবে দায়িত্ব
পালন করছেন। একইসঙ্গে তিনি দায়িত্বে আছেন সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকানার স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল লিমিডেটের (এসএওসিএল) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে।

দুদক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক মনিলাল দাশ বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দীর্ঘ অনুসন্ধানে মনিলাল দাশ ও তার স্ত্রী সেপিকা দাশের নামে আড়াই কোটি টাকারও বেশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এ জন্য স্বামী স্ত্রী দুজনের নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

জানা যায়, মনি লাল দাশ ১৯৯৯ সালে সহকারী ব্যবস্থাপক (এমআইএস) হিসেবে বিি পসিতে যোগদান করেন। এরপর ধাপে ধাপে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে মহাব্যবস্থাপক অর্থ হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি এসএওসিএল’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। দুদকের অনুসন্ধানে ওঠে আসে, মনি লাল দাশের দায় বাদে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ৩ কোটি ২৩ লাখ ১৩ হাজার ৮০৪ টাকা। পাশাপাশি তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় হয় ৯৪ লাখ ১০ হাজার ৪০৩ টাকা। সবমিলিয়ে তাঁর ৪ কোটি ১৭ লাখ ২৭ হাজার ২০৭ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এর বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৩ কোটি ৪০ লাখ ৯২ হাজার ১৯৩ টাকা। বাকি ৭৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৪ টাকার সম্পদ তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন বলে দুদকে অনুসন্ধানে ওঠে আসে।

অন্যদিকে, মনি লাল দাশের স্ত্রী সেপিকা দাশের পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ পাওয়ায় যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬১ হাজার ৯২৭ টাকার।.

এর বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায়। মাত্র ৫৭ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭২ টাকা। বাকি ১ কোটি ৮৭ লাখ ১৭ হাজার ২৫৫ টাকা আয়ের উৎস কম পাওয়া যায়। যা তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন পূর্বক ভোগ দখলে রেখেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে ওঠে আসে।

স্বামীর অবৈধ আয় বৈধ করতে স্ত্রী বনে যান ব্যবসায়ী : মনি লাল দাশ সরকারি চাকুরিজীবী হলেও তার স্ত্রী সেপিকা দাশ একজন গৃহিণী। কিন্তু তিনি ২০১০-২০১১ করবর্ষ হতে সরকারের একজন নিবন্ধিত করদাতা। সকল সম্পদের হিসেবে তার আয়কর নথিতেও উল্লেখ রয়েছে। তাতে নিজেকে কমিশন ব্যবসা হতে আয়, সঞ্চয়পত্রের সুদ, এফডিআরের সুদ, শেয়ার ব্যবসা ও মৎস্য চাষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

তবে দুদকের অনুসন্ধানে বলা হয়, সেপিকা দাশ নিজেকে কমিশন ব্যবসায়ী কিংবা মৎস চাষী হিসেবে উল্লেখ করলেও বাস্তবে তিনি কখনোই কোন প্রকার কমিশন ব্যবসায়ে যুক্ত ছিলেন না। এছাড়া মৎস্য চাষী হিসেবে দাবি করলেও দুদকের কাছে মৎস্য চাষের স্বপক্ষে কোন প্রকার তথ্য প্রমাণ উপস্থাপনও করতে পারেননি। কিংবা এ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্রও তিনি দাখিল করতে পারেননি। বরং স্বামীর অবৈধ অর্থ তার নামে আয়কর নথি খুলে বৈধ করার ফন্দি ছিল।

স্বামী-স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী দাখিলের সুপারিশ : আলোচ্য কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল করেছে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ । প্রতিবেদনে বিস্তারিত উল্লেখের পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী দু’জনের সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ের সুপারিশ করা হয়।

দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, ‘কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি বিপিসির এ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর নামে পাওয়া জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এসব সম্পদের তালিকাসহ একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। যেখানে আলোচ্য সম্পদগুলোর জন্য পৃথকভাবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের সুপারিশ করা হয়।

ষড়যন্ত্রের শিকার, দাবি মনি লাল দাশের বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) ও এসএওসিএলর সিইও মনি লাল দাশ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারা দুদকসহ বিভিন্ন জায়গায় ভিত্তিহীন চিঠি দিয়ে যাচ্ছে। যার কোন সত্যতা নেই । অত্যন্ত সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। একসময় টিউশনিও করেছি। চট্টগ্রামে আমার বহু শিক্ষার্থী আছে। অনেক পরিচিত উচ্চবংশের পরিবারের ছেলে-মেয়ে আমার শিক্ষার্থী ছিল। সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। দুর্নীতির করার কোন প্রশ্নই আসে না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।


স্বস্তিতে নেই ব্যবসায়ীরা

উচ্চ সুদহার আর জ্বালানি সংকটে ব্যবসা ও শিল্প চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে গেছে মূল্যায়ন করে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে একটি সংলাপে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাজাবে কে? সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি সামাল দেওয়ার নীতি কতটা সফল হবে, সেই প্রশ্ন তুলে ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে গ্যাসের সংকট, অন্যদিকে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। এই অবস্থায় জীবন হয়ে যাচ্ছে কঠিন। এটি দৈনিক সুপ্রভাতের খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

উচ্চ সুদহার আর জ্বালানি সংকটে ব্যবসা ও শিল্প চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে গেছে মূল্যায়ন করে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে একটি সংলাপে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাজাবে কে? সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি সামাল দেওয়ার নীতি কতটা সফল হবে, সেই প্রশ্ন তুলে ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে গ্যাসের সংকট, অন্যদিকে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। এই অবস্থায় জীবন হয়ে যাচ্ছে কঠিন।

গতকাল শনিবার ঢাকায় ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ: অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রসঙ্গ’ বিষয়ে সংলাপে এসব কথা বলা হয়। খবর বিডি নিউজের। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সম্মেলন কক্ষে এই সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ-সিজিএস।

ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-বিসিআই-এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘বর্তমানে কেউ স্বস্তিতে নাই। যেখানে আছি, সেখান থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি। মূল্যস্ফীতি একটা কারণ। উৎপাদনের খরচ বাড়ছে। গ্যাসের সরবরাহ নাই, উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

‘এর সাথে যুক্ত হয়েছে ইন্টারেস্ট রেট। প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এই অনিশ্চয়তা থাকলে কেউ ব্যবসায়
আসবে না।’

এখন অনেকে ‘এক্সিট পলিসি চায়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আস্থা বাড়ানো উচিত। সবার সুরক্ষা লাগবে।’

ব্যবসায়ীরা আগের সরকারের সুবিধাভোগী- এমন প্রচার নাকচ করে পারভেজ বলেন, ‘গণহারে সবাই বেনিফিট নিয়েছে বলা হচ্ছে, আমি তো বেনিফিট নেই নাই। ৯৯ শতাংশই নেয় নাই।’ সুদের চাপে ব্যবসা কঠিন হয়ে পড়েছে- এই ধারণায় একমত এফবিসিসিআইয়ের সাবেক অপর সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ‘নীতি সুদহার বাড়ানো হচ্ছে। বেনিফিট কোন ব্যবসায়ী পাবে? এগুলোকে অ্যাড্রেস করতে হবে। কোনো ইন্ডাস্ট্রি এত পারসেন্ট ইন্টারেস্ট দিয়ে টিকে থাকতে পারে?’ সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির বিরোধিতা করেন এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “আমি যখন দেখি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়ে বাজারে অর্থ সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো হবে, তখন অবাক হই। এটি একটি টুল কিন্তু আমরা শুনি কারওয়ান বাজারে এক কোটি টাকার চাঁদা ওঠে। যাত্রাবাড়ী ও গাবতলীতেও তাই এসব বিবেচনায় না নিয়ে মূল্যস্ফীতি কমবে না।’
বর্ধিত দাম দিয়েও বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।

জানিয়ে মীর নাসির বলেন, ‘আমি বলি ৬-৯ সুদের হার যৌক্তিক ছিল না। কিন্তু সকল খাতের সহনীয় ক্ষমতা এক না। এখন এত চাপ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলবে না।’
বর্তমান বিনিয়োগই চালানো যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘নতুন বিনিয়োগ তাহলে কীভাবে করবে?’

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাজাবে কে?”

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সংস্কার প্রশ্নে বলেন, “বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাজাবে কে? এখানে তো নাইই, সরকারেও কেউ আছে, দেখছি না।’ সব সংস্কার যদি উনারা সরকার করতে যায় তাহলে একটাও করতে পারবে না’ মত দিয়ে তিনি বলেন, অগ্রাধিকার ঠিক করে ‘কিছু’ সংস্কার করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের দাবি করেন।

ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এরাই (ব্যবসায়ী) সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত। বিনিয়োগের জন্য প্রথম দরকার সামাজিক মূলধন। সামাজিক শৃঙ্খলা । সামাজিক ঐক্য।’

সব সরকারই “বিভক্তি’ই তৈরি করেছে মত দিয়ে মিন্টু বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শত্রু হয়ে যায়। ফলে বিনিয়োগের পরিবেশ নাই।’

বছরের পর বছর মূল্যস্ফীতি মজুরির উপর থাকে তাহলে সঞ্চয় হবে কীভাবে?- এই প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘সঞ্চয় কমে গেলে বিনিয়োগ আসবে কোত্থেকে? সঞ্চয় বাড়াতে হবে এবং সামাজিক মূলধনের ঘাটতি কমাতে হবে। তাহলে বিনিয়োগ এমনই আসবে।’

বিনিয়োগ হলে কর্মসংস্থান বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চাকরি না বাড়াতে পারলে বৈষম্য বাড়তে থাকবে। চুরি, মারামারি বেড়ে যাবে। গ্যাং সংস্কৃতি বেড়ে যাবে।’
রাজনীতি যতক্ষণ ঠিক না হবে ততক্ষণ কিছুই হবে না বলেও মত দেন মিন্টু।

অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলকে যদি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয় তাহলে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষমতাগুলোকেও এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়।’

দেবপ্রিয় মনে করেন অর্থনীতির পরিস্থিতিই নির্ধারণ করবে কত দ্রুত বা দেরিতে নির্বাচন করা যাবে। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করেন আমরা শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বা নির্বাচনি সংস্কারের কথা বলব, অর্থনৈতিক বিষয়গুলো তার মতে চলবে, তাহলে আমরা ভুল বুঝতে পারছি।’

সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। বলেন, ‘আমাদের এখন নতুন সুযোগ, আমরা যে সমস্যার কথা বলেছি এগুলো সমস্যা সধান করতে হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশিদের সহায়তায় সবগুলো সমস্যা সমাধান করে দেবে ভাবি, তাহলে আমরা ভ্রান্ত জগতে বসবাস করি।’

প্রয়োজন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা

অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ এম আবু ইউসুফ বলেন, ‘এখনকার সবচেয়ে প্রয়োজন ম্যাক্রোইকোনমিক স্ট্যাবিলিটি করা।

সরকারি তথ্যের সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি যেভাবে বেড়ে গেছে সেটার রিফ্লেকশন রাস্তায় নামলে দেখি না। যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইনফ্লেশন এবং ডিমান্ড এর এস্টিমেট করছি, সেই তথ্য সত্য কিনা, দেখা উচিত। চাল বা অন্যান্য পণ্যের চাহিদা, জিডিপির সাইজ এবং পপুলেশন এর তথ্য রিচেক করা উচিত।’

শ্বেতপত্রের কাজ করতে গিয়ে যেসব অসঙ্গতি পেয়েছেন তাও তুলে ধরে বলেন তিনি। বলেন, ‘সিপিআই ইনফ্লেশনের যে তথ্য দেয় বিবিএস, বাজারে গিয়ে সেই তথ্য মেলে না। তথ্যের এই অসামঞ্জস্যের সুরাহা দরকার।’

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বাংলাদেশের পুরো পরিসংখ্যানের ভিত্তিই রং এবং মিথ্যা।’

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “শ্বেতপত্রের প্রথম অধ্যায় তথ্য-উপাত্ত নিয়ে। আমরা দেখেছি, জাতীয় আয় নিয়ে কীভাবে ‘খেলাধুলা’ করা হয়েছে। ওখানে কীভাবে আমাদের মূল্যস্ফীতির তথ্য বিকৃতি করা হয়েছে, কীভাবে খানা জরিপের বিভিন্ন বিষয়ে ঘটনা ঘটেছে। কীভাবে রপ্তানি এবং রপ্তানি আয়ের সাথে পার্থক্য করে কীভাবে আমাদের ব্যালেন্স অব পেমেন্টের সমস্যা করা হয়েছে।

‘আমরা ওগুলো যথেষ্ট মনোযোগ সহকারে দেখেছি। সরকারি লোকজনকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের ‘অসহায়ত্ব’ শুনলে পরে আপনাদের আরও (খারাপ) লাগবে।’

আয়োজক সংগঠন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এর চেয়ার মুনিরা খানের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, সায়মা হক বিদিশা; আবু আহমেদ, শাহিদুল ইসলাম জাহিদ; এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিসিআই-এর সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম হেলাল, এনবিআর এর সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ; অর্থনীতিবিদ জামাল উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই-এর স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম; রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর সংগঠন বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক; ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সবুর খান; ইষ্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসীও।

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর