সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের সার্ভে শুরু

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে মেট্রোরেল নির্মাণের সার্ভে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে সার্ভে চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেট্রোরেল নির্মাণের বিভিন্ন বিষয়ে ট্রাফিক ট্রান্সপোর্ট সম্পর্কিত সার্ভে করা হবে। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর। 

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে মেট্রোরেল নির্মাণের সার্ভে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে এ সার্ভে চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেট্রোরেল নির্মাণের বিভিন্ন বিষয়ে ট্রাফিক ও ট্রান্সপোর্ট সম্পর্কিত সার্ভে করা হবে। বর্তমানে সড়কগুলোতে কোন কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করে, কোন শ্রেণির মানুষ কোন সড়কে বা কোন যানবাহনে চলাচল করে কিংবা বিভিন্ন সড়কের পরিসংখ্যানসহ মোট ১৩ ধরনের সার্ভে করা হবে বলে জানান ট্রান্সপোর্ট প্রফেশনাল অ্যালায়েন্স (টিপিএ) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. নুরুল হাসান। টিপিএ নগরীর মেট্রোরেলের সার্ভের কাজ করছে।

কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর, সিটি গেট থেকে শহীদ বশিরুজ্জামান চত্বর এবং অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গী বাজার হয়ে পাঁচলাইশ একেখান মোড়। এই তিনটি রুটকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। তিনটি রুটের ৫০ কিলোমিটারের মেট্রোরেলের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রী উঠানামার জন্য মোট ৪৭টি পয়েন্ট থাকবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ দ্রুত করতে উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) সম্মেলন কক্ষে একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীর অভ্যন্তরে বা মূল শহরে মাটির নিচে এবং শহরের আশপাশে মাটির উপরে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্দেশ্য নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ৬২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। সরকার ও কোরিয়া আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার অর্থায়নে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত।

ট্রান্সপোর্ট প্রফেশনাল অ্যালায়েন্স (টিপিএ) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. নুরুল হাসান বলেন, আমাদের টিম সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে কাজ করেছে। আমরা আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের সার্ভের কাজ শেষ হবে। আমরা মূলত ১৩ ধরনের সার্ভে করবো। যানবাহন, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিষয়ের উপর প্রশ্ন থাকবে। এছাড়া, যাত্রী ও পথচারীদের যাত্রার উদ্দেশ্য, সময়, ব্যয় ইত্যাদি বিষয় থাকবে।

মেট্রোরেল নির্মাণে ট্রাফিক ও ট্রান্সপোর্ট সম্পর্কিত যে ১৩ ধরনের সার্ভে করা হবে- সড়কের সমীক্ষা (রোডের ইনভেনটরি): সড়কটি কতটুকু চউড়া, কয়টা লিংক রয়েছে, পাশে পার্কিং রয়েছে কিনা, অবৈধ পার্কিং রয়েছে কিনা, কতটুকু ফুটপাত রয়েছে, সড়কটি আবাসিক নাকি বাণিজ্যিক এলাকার পাশে। ইনভেনটরি জরিপে এই তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। বাসা-বাড়ির ইন্টারভিউ (হাউসহোল্ড ইন্টারভিউ সার্ভে): চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আওতাধীন এলাকায় এই হাউসহোল্ড সার্ভে করা হবে। প্রায় ১৪ হাজার বাসায় গিয়ে গিয়ে সার্ভেয়াররা ইন্টারভিউ করবে। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট। তারা মূলত কিভাবে যাতায়াত করে এবং কোন কোন পরিবহন ব্যবহার করে তা জানার জন্যই এই সার্ভে।

যানবাহনের সংখ্যা (ট্রাফিক ভলিউম কাউন্ট): সড়কের একটি লোকেশনে কোন কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করে এবং কোন যানবাহনটি ওই এলাকায় কী পরিমাণ চলাচল করে তা জানার জন্যই এই ট্রাফিক ভলিউম কাউন্ট সার্ভে। সেসাথে ওই সড়কে পথচারী কেমন চলাচল করে তাও কাউন্ট করা হবে। নগরীর ৫২টি পয়েন্টে এই সার্ভে করা হবে।

যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসা (রোড সাইড ইন্টারভিউ): ২৭টি পয়েন্টে যানবাহন থামিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, তারা কোথায় থেকে যাত্রা শুরু করেছে এবং কোথায় গিয়ে থামবে। প্রতিটি গাড়িতে কতজন যাত্রী রয়েছে তাও কাউন্ট করা হবে। ট্রাক থেকে শুরু করে সব ধরনের যানবাহনকে এই ইন্টারভিউ’র আওতায় আনা হবে।

পথচারীর সংখ্যা (পেডিস্ট্রেয়ান ভলিউম): নগরীর ৪২টি পয়েন্টে এই সার্ভে করা হবে। কী পরিমাণ পথচারী রাস্তা পারাপার হচ্ছে তা জানা যাবে।

আলাদা আলাদা পছন্দ (স্টেটেড প্রেফারেন্স): ভ্রমণের উদ্দেশ্য, কোথায় যাচ্ছে এবং কোথা থেকে যাচ্ছে, নতুন যানবাহনে চলার ইচ্ছেপোষণ করবে কিনা এবং নতুন ভ্রমণের অতিরিক্ত অর্থ খরচের ইচ্ছে আছে কিনা এসব তথ্য এই সার্ভের মাধ্যমে নেয়া হবে। শহরের বাইরে ভ্রমণ (পাবলিক ট্রানজিট, ইন্টার সিটি): এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাত্রীরা কোন কোন সমস্যার সম্মুখীন হয় তা জানা যাবে। মেট্রোরেল হলে তাদের কি কি সুবিধা হতে পারে তাও মতামত নেয়া হবে। নগরীর ৬টি ব্যস্ততম সড়ককে এই সার্ভের আওতায় আনা হবে। যেখানে যাত্রীরা কোথা থেকে উঠে বা কোথায় কোথায় গিয়ে নামে এবং নির্ধারিত সময়ে যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে কিনা এসব জানার জন্য প্রশ্ন করা হবে।

শহরের মধ্যে ভ্রমণ (পাবলিক ট্রানজিট, ইন্ট্রা সিটি) : চারটি বড় বাস টার্মিনালের সার্ভে করা হবে। সেখানে যাত্রীদের একটি স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যেতে কত সময় লাগে তা জানতে যাত্রীদের প্রশ্ন করা হবে। এছাড়া, যাত্রীদের ভ্রমণের উদ্দেশ্য, সময়, খরচ বিষয়ে সার্ভে করা হবে।

পাবলিক ট্রানজিট (রেল এন্ড এয়ার): চট্টগ্রাম রেল স্টেশন, শাহ আমানত বিমান বন্দরের যাত্রীদের ভ্রমণের উদ্দেশ্য, সময়, খরচ এসব বিষয়ে সার্ভে করা হবে।

পাবলিক ট্রানজিট (ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট): নগরীর বিমান বন্দর এলাকার ১৫ নম্বর ঘাট ও কালুরঘাটের ফেরী ঘাটের যাত্রীদের নিয়ে এই সার্ভে। সেখানেও যাত্রীদের ভ্রমণের উদ্দেশ্য, সময়, খরচ এসব বিষয়ে সার্ভে করা হবে।

পণ্য পরিবহন (ফ্রেইট): এই সার্ভেটা হবে মূলত চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি টার্মিনাল, চারটি আইসিডি, সরকারি দুটি ইপিজেডে । প্রতিদিন ভোর সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এই সার্ভে করা হবে।

ইপিজেড (এক্সোর্ট প্রসেসিং জোন): সরকারি দুটি ইপিজেডের মেইন গেটে এই সার্ভে করা হবে। সেখানে যানবাহন প্রবেশ ও বাহিরের সময় সার্ভে করা হবে।

যানবাহনের গতি (ভেহিকেল স্পিড): নগরীর ৩৩ সড়কে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত যানবাহন পর্যবেক্ষণ করা হবে। সেখানে যানবাহনের গতি, উদ্দেশ্য, সময়মত পৌঁছানোর বিষয়ে এই সার্ভে করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন পায় এ প্রকল্পটি। ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কনস্ট্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৭০ কোটি ৬২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার (জিওবি) ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৫৮ হাজার এবং কোরিয়ান সংস্থা কোইকা ৫৭ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে।


চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির নির্বাচনী কার্যক্রম ‘স্থগিত’ রাখতে বলেছে চট্টগ্রাম সমাজসেবা অধিদপ্তর। গত বুধবার সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের (অননুমোদিত) কাছে সংক্রান্ত পত্রও পাঠিয়েছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলম। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির নির্বাচনী কার্যক্রম ‘স্থগিত’ রাখতে বলেছে চট্টগ্রাম সমাজসেবা অধিদপ্তর। গত বুধবার সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের (অননুমোদিত) কাছে এ সংক্রান্ত পত্রও পাঠিয়েছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলম। প্রসঙ্গত, আগামী ৫ অক্টোবর সমিতির নির্বাচন (২০২৫-২০২৮) হওয়ার কথা রয়েছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পত্রে বলা হয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির বর্তমানে কোনো অনুমোদিত কার্যকরী কমিটি নেই। এছাড়া ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর সমিতির তৎকালীন কমিটিকে সাময়িক বরখাস্তপূর্বক স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর বিধান মোতাবেক প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। কাজেই সংস্থার অননুমোদিত কার্যকরী সাধারণ সভা আহ্বান ও নির্বাচন আয়োজনের কোনো বৈধতা নেই ।

পত্রে আরো বলা হয়, সমিতির কার্যক্রম বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন ( নম্বর ১৬১০/২০২৩) চলমান আছে। তাই আদালতের চূড়ান্ত রায় না পাওয়া পর্যন্ত ডায়াবেটিক চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলম আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির বৈধ কোনো কমিটি নেই । তাই অননুমোদিত কমিটিকে নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়।

জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সমিতির নির্বাচনী সিডিউল ঘোষণা করা হয়। সিডিউল অনুযায়ী, ১৯, ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ এবং ২২ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। ২৮ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ‘স্থগিত’ রাখার নির্দেশনা দিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের চিঠি দেওয়ার পরও নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতি নির্বাচন কমিশন (২০২৫-২০২৮) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন চৌধুরী গত রাতে আজাদীকে বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কোনো চিঠি পাইনি। পেলে নিয়ম অনুযায়ী আগাব। তবে আমরা নির্বাচন আয়োজনের কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।


কমিটি বিলুপ্তির পরপরই পদ প্রত্যাশীদের তৎপরতা শুরু

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্তির রেশ না কাটতেই শুরু হয়েছে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা। সম্ভাব্য কমিটিতে পদ প্রত্যাশীরা শুরু করেছেন লবিং। সংগঠনের দায়িত্বশীলদের কাছে তদবির করতে গতকাল শনিবার অনেকে ছুটে গেছেন রাজধানী। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্তির রেশ না কাটতেই শুরু হয়েছে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা। সম্ভাব্য কমিটিতে পদ প্রত্যাশীরা শুরু করেছেন লবিং। সংগঠনের দায়িত্বশীলদের কাছে তদবির করতে গতকাল শনিবার অনেকে ছুটে গেছেন রাজধানী। বাদ নেই স্থানীয় নেতাদের কাছে ধর্ণা দেওয়াও। সংগঠনটির একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত মধ্য রাতে বিলুপ্ত করা হয় নগর যুবদলের সাংগঠনিক কমিটি। একইসঙ্গে বিলুপ্ত করা হয় মহানগরের আওতাধীন সবগুলো থানা ও ওয়ার্ড কমিটিও কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত করা হয়েছে । শীঘ্রই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে ।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ জুন কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল পাঁচ সদস্যের নগর যুবদলের কমিটি। এতে মোশাররফ হোসেন দিপ্তীকে সভাপতি এবং মো. শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। পরবর্তীতে একই বছরের ৪ অক্টোবর কমিটির আকার বৃদ্ধি করে ২৩১ সদস্যে উন্নীত করা হয় । দুই বছরের জন্য গঠিত ওই কমিটি ৬ বছর সাড়ে তিন মাসের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করে। দায়িত্ব পালনকালে নগরের ১৫ থানা ও ১৭টি ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় । বিলুপ্ত কমিটির পূর্বে ২০১১ সালের ১৯ নভেম্বর কাজী বেলালকে সভাপতি ও মোশাররফ হোসেন দিপ্তীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্যের নগর যুবদলের কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সংসদ। তবে কমিটি ঘোষণার সাথে সাথেই চট্টগ্রাম বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরোধিতায় ওইদিন রাতেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা এই কমিটি স্থগিত করতে নির্দেশ দেন। তবে কিছুদিনের মধ্যে সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে ১৯৯৬ সালে গঠিত কমিটি ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে।

পদ প্রত্যাশীদের তৎপরতা : নতুন কমিটি বিলুপ্তির পর তৎপরতা শুরু করেছেন নতুন কমিটিতে পদ প্রত্যাশীরা। এ রকম ৯ জনের তথ্য এসেছে আজাদীর কাছে। এর মধ্যে সভাপতি পদ প্রত্যাশীরা হচ্ছেন বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, সহসভাপতি ইকবাল হোসেন ও শাহেদ আকবর। এছাড়া নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজও সভাপতি পদের জন্য তদবির করছেন বলে জানা গেছে। সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা হচ্ছেন বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ফজলুল হক সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা ও বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম রাসেল। কেউ কেউ বলছেন, নতুন কমিটিতে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী ও সাধারণ সম্পাদক  মো. শাহেদকে আবারও একই পদে রাখা হতে পারে। নগর যুবদলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন সাধারণ সম্পাদক পদের হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু চান্দগাঁওয়ে টার্ফ দখলের ঘটনার পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তার সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা ক্ষীণ হয়ে এসেছে।

কী বলছেন সাবেক দুই নেতা : বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী আজাদীকে বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। নিশ্চয়ই সংগঠনের ভালোর জন্য তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে যতদিন দায়িত্বে ছিলাম চেষ্টা করেছি সংগঠনকে এগিয়ে নিতে। থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছি। বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ আজাদীকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান আমাদের অভিভাবক। তিনি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটাই চূড়ান্ত। দায়িত্ব পালনকালে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি।

কী বলছেন পদ প্রত্যাশীরা : বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি সাহেদ আকবর আজাদীকে বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে যারা অ্যাকটিভ ছিলেন তাদের নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং যারা সক্রিয় ছিলেন না তাদের বাদ দেওয়া হবে। যাদের যোগ্যতা আছে তারাই নতুন কমিটির নেতৃত্বে আসবেন। বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বহাল রেখেই নতুন কমিটি ঘোষণা করলে ভালো হবে। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত। যদি মোশাররফ হোসেন দিপ্তীকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে সভাপতি করা হয় সেক্ষেত্রে আমিও সভাপতি হতে আগ্রহী ।

এমদাদুল হক বাদশা আজাদীকে বলেন, আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিলাম । মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। সংগঠনের জন্য সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করেছি। আশা করছি দল মূল্যায়ন করবে।

ফজলুল হক সুমন আজাদীকে বলেন, বিগত সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম। অনেক মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, পরিবারও হামলার শিকার হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, আমি মহানগর যুবদলের মূল দায়িত্বে থেকে সংগঠনের জন্য কাজ করি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় চাইলে সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে রাজপথের সহকর্মীদের নিয়ে সংগঠনের কাজ করতে চাই। এইচ এম রাশেদ খান আজাদীকে বলেন, বর্তমানে যে পদে আছি সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে পূর্ণ মনোনিবেশ করছি। এরপরও দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে অন্য কোনো দায়িত্ব দেয় সেটাও পালন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব । গাজী সিরাজ আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ মামলার আসামি হয়েছি এবং দীর্ঘ সময় কারাভোগও করেছি। দল নিশ্চই এ ত্যাগের মূল্যায়ন করবে। বিএনপি থেকে যুবদলের পদ প্রত্যাশা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, সাধারণত ছাত্রদলের পর যুবদলের রাজনীতি করা হয়। কিন্তু দল আমাকে বিএনপির দায়িত্ব দেয়। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। এখন দল উপযুক্ত মনে করে যুবদলের দায়িত্ব দিলে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে চাই ।

নগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি শেখ ইয়াসিন নওশাদ আজাদীকে বলেন, আশা করছি দ্রুত সময়ে যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হবে। যুবদলের নতুন কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যাশা করেন বলেও জানান তিনি।


বহিরাগতদের প্রবেশ করতে না দেওয়ায় উত্তেজনা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঢুকতে না পেরে ঢিল ছুড়েছে বহিরাগতরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চমেকের শাহ আলম বীরউত্তম মিলনায়তনের প্রধান ফটকের সামনে ঘটনা ঘটে। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর। 

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঢুকতে না পেরে ঢিল ছুড়েছে বহিরাগতরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চমেকের শাহ আলম বীরউত্তম মিলনায়তনের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘এভয়ড রাফা’ নামে ব্যান্ডের গান শোনার জন্য বহিরাগতরা নিজেদের সমন্বয়ক এবং সাধারণ ছাত্র পরিচয় দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল। কিন্তু চমেকের নিজস্ব অনুষ্ঠান

হওয়ায় তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা। এসময় বহিরাগতরা চমেকের ফটকে ভাঙচুর চালায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তারা স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে সড়কও অবরোধের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও চমেক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডা. ইমরোজ উদ্দিন জানান, শনিবার ছিল অনুষ্ঠানের শেষদিন। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সাংস্কৃ তিক অনুষ্ঠান ছিল। সন্ধ্যার দিকে বহিরাগত লোকজন অনুষ্ঠানে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এসময় তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর-অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ জানান, মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কনসার্ট চলছিল । সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পাস দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় বহিরাগত লোকজন অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে চাইলে আয়োজনকারীরা তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি। এ ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে সামান্য উত্তেজনা বিরাজ করে। পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীরা একটা কনসার্টের আয়োজন করেছে। সেই কনসার্ট দেখার জন্য বাইরের মানুষজন ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছে। পরে আমরা গেট বন্ধ করে দিয়েছি। এ কারণে বাইরে থেকে ওরা ঢিল ছুড়েছে।’

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর