ইঞ্জিন সংকটের অজুহাতে বন্ধ থাকার পর অবশেষে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেল চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে লোকাল ট্রেনটি। একই ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে পটিয়া রুটে চলাচলরত ডেমু ট্রেনটিও। এই দুটি ট্রেন আর চলবে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
প্রায় সাড়ে তিন বছর ইঞ্জিন সংকটের অজুহাতে বন্ধ থাকার পর অবশেষে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেল চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে লোকাল ট্রেনটি। একই ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে পটিয়া রুটে চলাচলরত ডেমু ট্রেনটিও। এই দুটি ট্রেন আর চলবে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে চলাচলকারী ২ জোড়া যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়। রুটে যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও প্রথমে ইঞ্জিন সংকটের কারণে লোকাল ট্রেনটি ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল বন্ধ করে দেয়া হয়। সাড়ে ৩ বছরের মাথায় এসে ট্রেনটি একেবরেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে আর কোনো লোকাল ট্রেন চলবে না । অপরদিকে চট্টগ্রাম-পটিয়া রুটের ডেমু ট্রেনটিও একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এখন এই রুটের যাত্রীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনে করে যাতায়াত করবে বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি চট্টগ্রামের পর থেকে প্রতিটি স্টেশনে থামে এবং যাত্রী ওঠা-নামা করা হয়। এই ব্যাপারে রেলওয়ের চট্টগ্রাম স্টেশনের ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান আজাদীকে বলেন, দোহাজারী রুটে আগে একটি লোকাল ট্রেন চলাচল করতো।
ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে সন্ধ্যায় দোহাজারীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেত এবং পরের দিন সকালে চট্টগ্রাম আসত। একইভাবে পটিয়া রুটে একটি ডেমু ট্রেন চলত। অনেক দিন দোহাজারী লোকাল ট্রেন এবং পটিয়া পর্যন্ত ডেমু ট্রেনটি বন্ধ আছে। দোহাজারী লোকাল ট্রেন আর চলবে না। ডেমুও আর চলবে না ।
চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটের বেশ কয়েকজন যাত্রী গতকাল আজাদীকে বলেন, দোহাজারী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১২টি স্টেশনের অন্তত ১০ হাজার যাত্রী রেল সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে এ ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন শুনছি একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটা দুঃখজনক। দোহাজারী রুটের ট্রেনের যাত্রী চন্দনাইশের সৈয়দ শিবলী সাদিক কফিল বলেন, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে লোকাল ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়ায় এই রুটের ১০ হাজারের বেশি যাত্রী বঞ্চিত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার রেল লাইন আধুনিকায়ন হয়েছে। এখন ট্রেনে যাত্রীদের চাহিদা বেড়েছে। রেলের রাজস্ব আয় হতো বেশি। সেই সময়ে রেলওয়ে লোকাল ট্রেনটি বন্ধ করে দিয়েছে। শিক্ষক মিন্টু কুমার দাশ বলেন, কক্সবাজার রেল লাইনের সুবাদে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেল লাইন নতুন করে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এখন ট্রেনের যাত্রী বেড়েছে।
বাসের চেয়ে যোগাযোগ আরামদায়ক হওয়াতে এবং সাশ্রয়ী হওয়াতে মানুষের ট্রেনের প্রতি আগ্রহ বেশি। এখন ট্রেন চালালে রেলওয়ে লাভবান হতো। অথচ রেলওয়ে এই রুটের ২ জোড়া লোকাল ট্রেন একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য দুঃসংবাদ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটের মধ্যে স্টেশন রয়েছে ১২টি। স্টেশনগুলো হল ঝাউতলা, ষোলশহর, জানালী হাট, গোমদন্ডি, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, পটিয়া, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চননগর, খানহাট ও হাশিমপুর। এ সকল স্টেশন থেকে আগের লোকাল ট্রেনটিতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ হাজার বেশি যাত্রী যাওয়া-আসা করতো।
গত সাড়ে ৩ বছর ধরে লোকাল ট্রেনটি বন্ধ থাকায় এই রুটে এসব মানুষ রেল সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। শুধু দোহাজারী স্টেশন থেকেই প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ জন যাত্রী যাওয়া আসা করতো।
চন্দনাইশের স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, লোকাল ট্রেনটি দিয়ে আমাদের দোহাজারী থেকে প্রতিদিন ভোরে মত শত মানুষ নিরাপদে চট্টগ্রাম শহরে যেতেন এবং আসতেন। এই রুটে লোকাল ট্রেনগুলো বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে ।
বাঁশখালীর যুবককে ঢাকায় নিয়ে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ
বাঁশখালীর মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন সাইমন (২২) নামে এক যুবককে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে কৌশলে খুন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড উত্তর জলদী রুহুল্লাহপাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউনুসের পুত্র। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
বাঁশখালীর মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন সাইমন (২২) নামে এক যুবককে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে কৌশলে খুন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড উত্তর জলদী রুহুল্লাহপাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউনুসের পুত্র। ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ গতকাল শুক্রবার তার লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। রাতে তার লাশ বাঁশখালী নিয়ে আসা হবে বলে পারিবারিক সূত্র জানায়। নিহতের শরীরে আগুনে দগ্ধ হওয়ার ক্ষত চিহ্ন ছিল ।
বাঁশখালী থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, বোরহান উদ্দিন সাইমন আগে কারাগারে থাকার সময় ঢাকার এক বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়। সেই বন্ধু জেল থেকে বের হয়ে সাইমনকে ভাল বেতনে চাকরি আছে বলে খবর দিয়ে ঢাকায় যেতে বলে।
গত সোমবার সাইমন ঢাকায় যাওয়ার পর থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ ছিল। পরিবারের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ বাঁশখালী থানায় বোরহান উদ্দিন সাইমনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি জানালে সাইমনের পরিবার ঢাকায় গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ি থানা থেকে লাশ বুঝে নেয়।
পরিবার জানায়, কেন সাইমনকে হত্যা করা হল তারা বুঝতে পারছেন না । তবে যে বা যারা তাকে খুন করুক না কেন সেটা পরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, যাত্রাবাড়ি থানা থেকে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি বাঁশখালী থানাকে জানানোর পর আমরা সাইমনের পরিবারকে খুঁজে বের করি।
এদিকে নিহতের আত্মীয় মো. কামাল উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাতে লাশ এসে পৌঁছালে জানাযা শেষে দাফন করা হবে ।
চলে গেল ফ্লাই দুবাইও
গেল পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করেছে দুবাইভিত্তিক বিমান সংস্থা ফ্লাই দুবাইয়ের ফ্লাইট। এ নিয়ে গেল আট মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রাম থেকে তিনটি বিদেশি বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট চলাচল তুলে নিল। এটি দৈনিক পূর্বকোণের খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
এবার চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রম | বন্ধ করেছে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের বিমান ফ্লাই দুবাই। গেল পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করেছে দুবাইভিত্তিক বিমান সংস্থা ফ্লাই দুবাইয়ের ফ্লাইট।
এ নিয়ে গেল আট মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রাম থেকে তিনটি বিদেশি বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট চলাচল তুলে নিল। যদিও ফ্লাই দুবাইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- এয়ারক্র্যাপ্ট সংকটের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য চট্টগ্রাম রুটের ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও হঠাৎ ফ্লাই দুবাই বন্ধের ঘোষণায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এ অঞ্চলের যাত্রীদের। পাশাপাশি এর প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্য রুটের বিমান ভাড়াও ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন যাত্রী ও এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টরা।
খবর নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম-দুবাই রুটে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট দিয়ে যাত্রী পরিবহন শুরু করে ফ্লাই দুবাই। যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় ওই বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকা-দুবাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে বিমান সংস্থাটি। বর্তমানে ঢাকা থেকে প্রতিদিন দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে চট্টগ্রাম রুটে হঠাৎ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েন চট্টগ্রামের দুবাই প্রবাসী ও পর্যটকরা।
যদিও এর আগেও ২০১৮ সালে একবার তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে ফের ফ্লাইট কার্যক্রম শুরু করে ফ্লাই দুবাই। কিন্তু এবারের বন্ধের কারণ অনেকটাই ‘রহস্যময়’ বলে ধারণা সেবা প্রদানকারী এজেন্সিগুলোর।
জানতে চাইলে ফ্লাই দুবাই চট্টগ্রামের ম্যানেজার (সেল্স) মো. মোরশেদ আলম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাই দুবাইয়ের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকা থেকে যথারীতি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে। নতুন এয়ারক্র্যাপ্ট যুক্ত হবে। তিন মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
এদিকে, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পরিচালিত হওয়া ফ্লাই দুবাইয়ের বেশিরভাগ যাত্রী মধ্যপ্রাচ্যগামী বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী এবং ওমরা যাত্রী। কিন্তু চাহিদা থাকার পরও এমন ছন্দপতনের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের রুটে ভাড়া বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে। পাশাপাশি ওমরাহ যাত্রীদেরও চড়ামূল্যে টিকেট ক্রয় করতে হবে।
হজ্জ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) চট্টগ্রাম জোনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, চট্টগ্রামের সিংহভাগ প্রবাসীর অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে। যারা চট্টগ্রাম থেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু এভাবে এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট বন্ধ হতে থাকলে প্রবাসীরা আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি চরমদুর্ভোগেও পড়তে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের রুটের টিকেটের মূল্যও অনেক বেড়ে যাবে।’
চাটগাঁর চোখ ডেস্ক