সরবরাহ সংকটের অজুহাতে বাড়ছে সবজির দাম। দৈনিক আজাদীর শিরোনাম এটি। বৃষ্টিতে সরবরাহ সংকটের অজুহাতে প্রতিটি সবজির দাম ১০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ। সবজির পাশাপাশি বেড়েছে মুরগির দামও। এসংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- সরবরাহ সংকটের অজুহাতে বাড়ছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। গত এক সপ্তাহে ব্যবধানে প্রতি কেজি সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। সবজি ছাড়াও ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও মাছের বাজারও। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকে সবজির সরবরাহ ব্যহত হয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে।
গতকাল নগরীর চকবাজার ও ২নং গেট কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, কাকরল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, তিতা করলা ৮০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, টমেটো ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২২০-২৫০, গাজর ২০০-২১০, বেগুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আলু ৬৫ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা।
অন্যদিকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায় । ২নং গেট কর্ণফুলী কমপ্লে সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ হাসান বলেন, বাজারে সবজির দাম নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকার বাজার থেকে সবজি এনে বিক্রি করি। সবজি পচনশীল পণ্য। চাইলেই মজুদ করে রাখা যায় না। আমি পাইকার বাজার থেকে যখন সবজি কিনে আনি, সেগুলো বাছাই করে বিক্রি করতে হয়। কারণ পাইকারি দোকান থেকে আনার পর অনেক সবজি নষ্ট পড়ে। এতে আমাদের কেজিপ্রতি কেনার খরচও বেড়ে যায়। এছাড়া পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহ ধরে সবজির সরবরাহ কমেছে। তাই দামেও প্রভাব পড়েছে।
অন্যদিকে মাছের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, পাঙাশ ২০০-২৪০ টাকা, রুই আকারভেদে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, শিং ৫৫০ টাকা, মাগুর ৬৫০ টাকা এবং কৈ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় ।
মাছ বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বাজারে মিঠাপানির মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। কোরবানির পর থেকে মাছের দাম বাড়েনি ।
অপরদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। এছাড়া সোনালী মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০ থেকে ৭৩০ টাকা ও লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। অ্যদিকে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়।
ফরিদ উদ্দিন নামের এক ক্রেতা জানান, শুধু সবজির বাজার বলে কথা নয়, বাজারে এখন প্রত্যেকটি ভোগ্যপণ্যের দামই চড়া। যেভাবে খরচ বেড়েছে, সেভাবে কারো আয় বাড়েনি। এতে নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকজনকে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে। আমাদের দেশে কেবল রমজান মাস আসলে বাজারে কিছুটা মনিটরিং হয়। এরপর সারা বছর আর কোনো খবর থাকে না। সেই সুযোগটাই ব্যবসায়ীরা সব সময় নেয়।
পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে শিক্ষার্থীর ঢল। দৈনিক আজাদীর শিরোনাম এটি। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও চবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীতে এ বিক্ষোভ মিছিলের শুরু করা হয়। এসংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- বৃহস্পতিবার কোটা পদ্ধতি সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়ে নগরজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও চবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে নগরীতে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ষোলশহর থেকে মিছিলের শুরু হয়। যতদূর চোখ যায় শুধু শিক্ষার্থী আর শিক্ষার্থী । এ যেন জনসমুদ্র; শিক্ষার্থীর ঢল । মাথায় জাতীয় পতাকা, হাতে প্ল্যাকার্ড ও মুখে স্লোগান। আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই; বোনের ওপর হামলা কেন, পুলিশ জবাব চাই। সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্দোলনকে দমন করতে বৃহস্পতিবার পুলিশের লাঠিচার্জ উল্টো বাড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনের তীব্রতা। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ বিক্ষোভ মিছিল এক ভিন্ন চট্টগ্রাম দেখলো নগরবাসী নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে মিছিল নিয়ে ২ নম্বর গেটে আসেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টার শাটল ট্রেনে চড়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে ষোলশহর রেলস্টেশনে আসেন চবি শিক্ষার্থীরা। বিকেল সোয়া ৫টায় শিক্ষার্থীরা ২ নম্বর গেট থেকে চকবাজার মিছিল নিয়ে যায়। এরপর চকবাজার থেকে জামালখান, কাজির দেউড়ি, লালখান, ওয়াসা, জিইসি ও পুনরায় ২ নম্বর গেট গিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় অবস্থান করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে, লেগেছে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই । আমরা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের দাবি না মেনে নিয়ে উল্টো আমাদেরকে আহত করা হচ্ছে। পুলিশ অন্যায়ভাবে আমাদের ওপর হামলা করছে। আমরা এসব মেনে নিব না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাজপথে আন্দোলনে নেমেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর আক্রমণ করবে কেন? কেন তাদের উপর লাঠিচার্জ করবে? পুলিশকে এ অধিকার কে দিয়েছে ? আমরা আন্দোলনে এসেছি আমাদের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য, আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষা করার জন্য। যাদের ভোগান্তি হচ্ছে তারা আমাদেরই মা-বোন আমাদেরই প্রতিবেশী, তারা আমাদের আন্দোলনকে সমর্থন দেয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি দেশে ৫৬ শতাংশ কোটার কোনো মানেই হয় না। আমাদের দাবি কোটার বিরুদ্ধে নয়। আমরা চাই কোটার সংস্কার করা হোক এবং ন্যূনতম ৫ শতাংশ কোটা রাখা হোক। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এই পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
সড়কে মৃত্যুর মিছিল পাঁচ কারণে। দৈনিক পূর্বকোনের খবর এটি। সড়ক দখলের কারণে প্রশস্ততা কমে যাওয়া, দীর্ঘসময় বিরতিহীন গাড়ি চালানো, অব্যবস্থাপনা, ভাঙাচোরা সড়ক টেকসই পদ্ধতিতে মেরামত না করা এবং ছোট যানবাহনের আধিক্য। এ সংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- কোনোভাবেই মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না সড়কে। নানা কারণে প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় একের পর ঝরে পড়ছে তরতাজা প্রাণ। সড়কে এত প্রাণহানির জন্য পাঁচটি কারণের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এরমধ্যে রয়েছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের দখলের কারণে সড়কের প্রশস্ততা কমে যাওয়া, দীর্ঘ সময় বিরতিহীন গাড়ি চালনা, অব্যবস্থাপনা, ভাঙাচোরা সড়ক টেকসই পদ্ধতিতে মেরামত না করা এবং সড়কে ছোট যানবাহনের আধিক্য। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গেল ১ মাসে চট্টগ্রামের সড়কে ১৪ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অন্তত ১৭ জনের, আহত হয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫টি দুর্ঘটনা ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও টেম্পোর সংঘর্ষের কারণে ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন।
এরমধ্যে দুটি ঘটনায় সর্বোচ্চ ৬টি প্রাণহানি ঘটেছে পটিয়ায়। সর্বশেষ গেল বৃহস্পতিবার রাতে পটিয়ায় ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হন। এর আগের দিন হাটহাজারীতে ট্রাকচাপায় নিহত হন এক স্কুল শিক্ষক। ৮ জুলাই সাতকানিয়ায় ট্রাকচাপায় নিহত হন দুই বাইক আরোহী তরুণ । ৬ জুলাই আনোয়ারায় অটোরিকশা উল্টে নিহত হন একজন, এই ঘটনায় আহত হন আরও ৬ জন। আবার ৪ জুলাই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এক শিশুকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায় একটি মোটরসাইকেল। এই ঘটনায় শিশুটি গুরুতর আহত হলেও প্রাণ যায় মোটরসাইকেল চালকের। একই দিন সীতাকুণ্ডে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে আহত হন তিন জন। এর দু’দিন আগে নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকার শুলকবহরে কাভার্ডভ্যান চাপায় প্রাণ হারান এক মোটরসাইকেল আরোহী যুবক।
গেল জুন মাসের শেষ দিনে রাত ১২ টার দিকে সড়ক বিভাজকে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় আহত হন তিন তরুণ । ২৯ জুন সীতাকুণ্ডে যাত্রীবাহী বাস উল্টে এক যাত্রী নিহত ও তিনজন আহত হন। এর আগের দিন বাকলিয়ায় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান এক যুবক। ২৫ জুন পটিয়ায় ট্রাক ও টেম্পোর মুখোমুখি সংঘর্ষে দু’জন নিহত ও দু’জন আহত হন। ২২ জুন হাটহাজারীতে উল্টোপথে আসা একটি বাস সড়কে দাঁড়ানো কয়েকটি যানবাহনকে ধাক্কা দেয়, এতে আহত হন ১২ জন । একই দিন লোহাগাড়ায় প্রাইভেট কার ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে আরও ৫ জন আহত হন। এর আগে ১৬ থেকে ২০ জুন ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড ও বায়েজিদে পৃথক চারটি দুর্ঘটনায় প্রাণ যায়
চারজনের। আহত হন একজন।
চট্টগ্রামে একমাসেই এত প্রাণহানির কারণ বিশ্লেষণ করে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিত বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান কারণগুলো হলো ভাসমান ব্যবসায়ীদের দখলের কারণে সড়কের প্রশস্ততা কমে যাওয়া, দীর্ঘসময় বিরতিহীন গাড়ি চালনা, অব্যবস্থাপনা, ভাঙাচোরা সড়ক টেকসই পদ্ধতিতে মেরামত না করা এবং সড়কে ছোট যানবাহনের আধিক্য। এছাড়াও আমাদের দেশে জনসচেতনতার ঘাটতি আছে, এটা বাড়ানো দরকার।’ তবে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ তিনটি। সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির কথা যদি বলি, সেখানে একটি গর্ত ছিল । এটা সড়কের ত্রুটি। আবার ওই সিএনজি অটোরিকশার যে চালক তার ঘাড়ে কয়েক লাখ টাকার ঋণের বোঝা ছিল, সপ্তাহের প্রতিদিনই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হতো তাকে। এতে বাড়তি উপার্জনের একটি চাপ ছিল, দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা গাড়ি চালতে হতো তাকে। শুধু এটা নয়, অধিকাংশ দুর্ঘটনাই ঘটে চালকদের বিরতিহীন দীর্ঘসময় গাড়ি চালনো ও সড়কের ত্রুটির কারণে।
সড়কের অনিয়ম নিয়ে সরব এই সমাজকর্মী বলেন, প্রধান এই দুই সমস্যার সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দামের চাপ। চালকরা যখন গাড়ি চালান, তখন বাসা থেকে স্ত্রী ফোন করে জানান, তেল নেই, চাল নেই। এটা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে । এগুলো চালকদের বাড়তি মানসিক চাপ তৈরি করছে। এটাও দুর্ঘটনা ঘটার অন্যতম প্রধান কারণ এখন ।
পরিবহন খাতকে শিল্পের আওতায় এনে চালকদের কর্মঘণ্টা ও পারিশ্রমিক নির্দিষ্ট করা, ত্রুটিপূর্ণ সড়কের টেকসই মেরামত এবং সড়ক দুর্ঘটনায় দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করলে সড়কে দুর্ঘটনা কমানো যাবে বলে মত তার।
ওয়াসার আরেকটি বড় প্ৰকল্প। দৈনিক পূর্বকোনের খবর এটি। অপচয় রোধ, নিরবচ্ছিন্ন ও সুষম চাপে পানি সরবরাহ নিশ্চিত এবং রাজস্ব আদায় বাড়াতে ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন প্রকল্পে’র মাধ্যমে নতুন করে আরও একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ওয়াসা। এ সংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- নগরীতে আরও ৪০০ কিলোমিটার নতুন পাইপলাইন প্রতিস্থাপন করবে চট্টগ্রাম ওয়াসী। একইসাথে অটোমেটেড স্মার্ট মিটারিংসহ ডিএমএ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। অপচয় রোধ, নিরবচ্ছিন্ন ও সুষম চাপে পানি সরবরাহ নিশ্চিত এবং রাজস্ব আদায় বাড়াতে ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন প্রকল্পে’র মাধ্যমে নতুন করে আরও একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ওয়াসা। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বর্তমানে সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
ওয়াসাসূত্র জানায়, পানির সরবরাহ ব্যবস্থাপনার পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম শহরকে ছয়টি হাইড্রোলিক জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। জোনসমূহের মধ্যে একটি জোন কর্ণফুলী সার্ভিস এরিয়া (কেএসএ), যা শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। কর্ণফুলী সার্ভিস এরিয়ায় (কেএসএ) জাইকা এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ প্রকল্পের আওতায় নগরীতে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার (সর্বনিম্ন ৪ ইঞ্চি থেকে সর্বোচ্চ ৪৪ ইঞ্চি) পাইপলাইন প্রতিস্থাপন এবং ডিস্ট্রিক্ট মিটারিং এরিয়া (ডিএমএ) ব্যবস্থা চালু করা হয়। তাতে এ এলাকায় প্রায় ৪৬ হাজার সার্ভিস কানেকশনে নিরবচ্ছিন্নভাবে সুষম চাপে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ওয়াসার ১০ শতাংশ সিস্টেম লস কমেছে। কেএসএ জোন ব্যতীত বাকি পাঁচটি সেক্টর পতেঙ্গা, খুলশী, এ কে খান, বায়েজিদ, অক্সিজেন, কালুরঘাট, চাক্তাই প্রভৃতি এলাকার পুরাতন জরাজীর্ণ পাইপলাইন, লিকেজ, ম্যানুয়াল মিটারিং ব্যবস্থা, অবৈধ সংযোগ প্রভৃতি কারণে বিদ্যমান ৪০ হাজার সার্ভিস কানেকশনে নিরবচ্ছিন্ন ও সুষম চাপে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে এসব এলাকায় সিস্টেম লস ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। তাই এসব এলাকায় সুষম চাপে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং সিস্টেম লস কমিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন প্রকল্পের আওতায় পাইপলাইন প্রতিস্থাপন, অটোমেটেড স্মার্ট মিটারিংসহ ডিএমএ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পটির অধীনে নগরীর জন্য একটি পানি সরবরাহ মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে।
জানতে চাইলে ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন প্রকল্পে’র মাধ্যমে শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে । সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ প্লাটফর্মে আসবে ওয়াসা। প্রকল্পের মাধ্যমে ম্যানুয়ালি মিটারিং পরিবর্তন করে ৯০ হাজার গ্রাহককে ডিজিটাল মিটারের আওতায় আনা হবে। ওয়াসার আওতাধীন পানি শোধনাগার পাইপলাইনসহ সকল সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় জিআইএস বেজড এসেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে। হালিশহর এবং নাসিরাবাদ স্টোরের জায়গায় নতুন আধুনিক স্টোর কাম ওয়্যার হাউস নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে নগরীর নতুন নতুন এলাকায় পাইপলাইন স্থাপন ও পুরাতন পাইপলাইনের পরিবর্তে নতুন পাইপলাইন বসানো হবে। তাছাড়া ওয়াসার সিস্টেম লস কমিয়ে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং ওয়াসার পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ আধুনিকায়নসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইতিবাচক মিয়ানমার : ড. হাছান মাহমুদ। মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় রিট্রিটে যোগদানের পাশাপাশি ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার এ মনোভাব ব্যক্ত করেন।
রিট্রিটের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ড. হাছান মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাদের পূর্বের আলোচনাগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মিয়ানমার দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, তারা তাদের দেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফেরত নিতে সম্মত আছে। কিন্তু এটি কার্যকরের কোনো চিহ্ন এখনো দেখা যাচ্ছে না।
‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হলেই কেবল মিয়ানমার তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার নজির রাখতে পারে’ উল্লেখ করে বিষয়টির ওপর গভীর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুই এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেন এবং তার সরকারের সাথে আলোচনা করে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর অভিপ্রায় পুণর্ব্যক্ত করেন।
এদিকে রিট্রিটের শেষ দিন শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিমসটেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এ দিন সকালে নয়া দিল্লির কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পঞ্চবটিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ রিট্রিটে যোগদানকারী ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ও নেপালের পররাষ্ট্র সচিব ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭টি দেশের আঞ্চলিক জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক)’ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই রিট্রিটে বিমসটেক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কার্যকর অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও সংক্ষিপ্ত পার্শ্ববৈঠকে নিত্যপণ্য আমদানি সুবিধা অব্যাহত রাখা ও তিস্তা প্রকল্পের জন্য কারিগরি দল পাঠানোর বিষয়সহ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করেন।
চাটগাঁর চোখ/ এইচডি