বেড়েছে গরু-খাসির মাংসের দাম। দৈনিক সুপ্রভাতের শিরোনাম এটি। গরুর যোগান থাকার পরও হঠাৎ চড়া গরুর মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০০ টাকা। এ সংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- কোরবানির ঈদের পর আরেক দফা বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। পর্যাপ্ত গরুর যোগান থাকার পরও হঠাৎ চড়া গরুর মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০০ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে সবজি ও সোনালি মুরগির দামও। অন্যদিকে চড়া দরের পর স্থিতিতে রয়েছে ডিম ও মুদিপণ্যের দাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর অন্যতম কাঁচাবাজার রেয়াজউদ্দিন ও বকসিরহাট ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পর যে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছিল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় তা গতকাল কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা। মহিষের মাংসের দামও বেড়েছে। ৭০০ টাকার মহিষের মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা। বেড়েছে খাসির দামও। কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রেয়াজউদ্দিন বাজারের মাংসের দোকানের মালিক শফিকুর রহমান বলেন, ঈদের সময় গরুর দাম বেড়েছে যা আর কমেনি। আমাদের বাড়তি দরে গরু কিনতে হচ্ছে। তাই বর্তমান হাড় ছাড়া গরুর মাংস ১ হাজার টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব নয়। একই বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো. জসিম বলেন, হাটে গরুর দাম না কমানো পর্যন্ত সস্তায় বিক্রি করা সম্ভব না। খামারিরাও গরুর দাম বাড়িয়েছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমতির দিকে হলেও সোনালি ও দেশি মুরগির দাম আরও বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা।
সোনালি মুরগি ১২০ থেকে ৩৩০ টাকা যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩১০ টাকা। পাশাপাশি দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬৫০ টাকা।
স্থিতিতে রয়েছে ডিমের দাম। বাজারে প্রতি ডজন লাল ফার্মের ডিম ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা কমলেও মাসের ব্যবধানে এখনো ডিমের দাম বাড়তি ডজনপ্রতি প্রায় ৩০ টাকা। মুরগি বিক্রেতারা বলেন, ফার্মে সোনালি মুরগির উৎপাদন কমায় বাজারে ঘাটতি রয়েছে যার কারণে দাম বেড়েছে।
এদিকে বৃষ্টির পরপরই সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। কোন ধরনের সবজি ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে নেই।
এক মাস আগে বেগুন, টমেটো, পটল, পেঁপেসহ যেসব সবজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। আর বরবটি, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গে, কাকরোল এর মতো গ্রীষ্মকালীন সবজির দামও দ্বিগুণ বেড়েছে। বকসিরহাটের ব্যবসায়ী মো. রুবেল বলেন, অন্যান্য বছর এসময় গ্রীষ্মকালীন সবজি আমরা ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতাম। সেসব সবজি এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা । আড়তদারেরা বলেছে, বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গে কৃষকদের ফলন নষ্ট হয়েছে সেজন্য সবজির দাম বেড়েছে।
বাজারে পাঙাশ ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। রুই-কাতলা সাইজভেদে ২৮০ থেকে ৫০০ টাকা। পাবদা মানভেদে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।
অপরদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায়সব মুদিপণ্যের বাজার। ছোট মসুর ডাল কেজি ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৫০ টাকা, ময়দা দুই কেজি প্যাকেট ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা।
দফায় দফায় পুলিশের লাঠিচার্জ শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ। দৈনিক পূর্বকোনের শিরোনাম এটি। গতকালও নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে কোটাবিরোধীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে। এ সংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়-সকল গ্রেডে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করার এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দফায় দফায় লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। তবে লাঠিচার্জ উপেক্ষা করে তিন ঘণ্টাব্যাপী দুই নম্বর গেট অবরোধ করেন তারা।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের অবরোধে নগরে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। দীর্ঘ যানজটে পরিবহন যাত্রী ও চালকদের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। যদিও রাত আটটার কিছু পর নগরীতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা ও সাড়ে
পুলিশ দুই দফা আমাদের উপর হামলা করে, টাইগারপাস মোড়ে আমার বোনদের উপরও হামলা করা হয়: আন্দোলনকারী নয় বলে দাবি পুলিশের তিনটার শাটলে চট্টগ্রাম বটতলী স্টেশনে পৌঁছান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রথমে তারা স্টেশনে অবস্থান করেন। এরপর মিছিল নিয়ে নগরীর টাইগারপাস মোড়ের দিকে এগিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। টাইগারপাস মোড়ের কাছাকাছি গেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়। প্রায় আধঘণ্টাব্যাপী কথা-কাটাকাটির পরে শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকেন। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠিচার্জে দুই ছাত্রীসহ ছয়জন আহত হন। ছত্রভঙ্গ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে দুই নম্বর গেটে আসলে সেখানেও পুলিশের আক্রমণের শিকার হন। পুলিশের লাঠিচার্জে শিক্ষার্থীরা দিকবিদিক পালিয়ে যান।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজারো শিক্ষার্থী দুই নম্বর গেটে জড়ো হন। পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা উপেক্ষা করে বিকেল সাড়ে ৫টায় তারা দুই নম্বর গেটে অবস্থান নেন। এ সময় হাজারো শিক্ষার্থী দুই নম্বর গেট মোড়ে যান চলাচল পুরো বন্ধ করে দেন। শিক্ষার্থীরা রাত ৮টা পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান।
_ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী মশিউর রহমান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর- ছিলাম। পুলিশ দুই দফা আমাদের উপর হামলা করে। টাইগারপাস মোড়ে আমার বোনদের উপরও হামলা করা হয়। দুই নম্বর গেটে লাঠিচার্জ করা হয়। এ সময় পুলিশের সাথে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা যোগ দেয়। তারা যদি ভেবে থাকে হামলা-মামলা করে আমাদেরকে আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে, তাহলে তারা ভুল করছে। ছাত্রসমাজকে দাবিয়ে রাখা যায় না, যাবে না।
চবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, পুলিশ আমাদের তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিল । কিন্তু আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা, আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবো না। আজকে থেকে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, আমরা টাই- গারপাস এলাকা ব্যারিকেড দেওয়ার চেষ্টা করি। পরে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে চলে যান। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলেন তিনি ।
চাল বরাদ্দ না পাওয়ায় এ মাসে চট্টগ্রামে শুরু হয়নি টিসিবির পণ্য বিক্রি। দৈনিক আজাদীর শিরোনাম এটি। চট্টগ্রামেও চলতি মাসের পণ্য বিক্রি শুরু হওয়ার কথা ছিল।
টিসিবি চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে চলতি মাসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে চাল বরাদ্দ না পাওয়ায় গতকাল পর্যন্ত এই কর্মসূচি শুরু করা যায়নি। এ সংক্রান্ত খবর এটি। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়- চাল বরাদ্দ না পাওয়ায় চট্টগ্রামে চলতি মাসের কর্মসূচি শুরু করতে পারেনি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সরকার নির্ধারিত ৮ জুলাই থেকে চট্টগ্রামেও চলতি মাসের পণ্য বিক্রি শুরু হওয়ার কথা ছিল।
টিসিবি চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে চলতি মাসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে চাল বরাদ্দ না পাওয়ায় গতকাল পর্যন্ত এই কর্মসূচি শুরু করা যায়নি। আর চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে ডিসি অফিস থেকে বরাদ্দপত্র না পাওয়ায় চাল বরাদ্দ দেয়া হয়নি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে বরাদ্দপত্র পাওয়ার সাথে সাথেই চাল বরাদ্দ দেয়া হয় বলে জানানো হয়েছে। টিসিবি মাসের কর্মসূচি মাসে ঠিক মতো শুরু করতে পারে না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
চাল বরাদ্দে দেরি হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী আজাদীকে বলেন, এখনো বরাদ্দপত্র পাওয়া যায়নি। বরাদ্দপত্র পাওয়ার পর বরাদ্দ দেয়া হবে । দুই-একদিন দেরি হচ্ছে।
এই ব্যাপারে টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, আমরা এখনো ক্যালেন্ডার (ক্যালেন্ডার হচ্ছে-কোন তারিখ কোথায় কোথায় বরাদ্দ দেয়া হবে তার সময়সূচি বা তালিকা; এটা ডিসি অফিস থেকে করা হয়) এবং চাল বরাদ্দ পাইনি। ডিসি অফিস থেকে বরাদ্দের তালিকা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে গেলে উনারা চাল সরবরাহ করবেন। চাল বরাদ্দ রবিবার থেকে হবে। এবারের বরাদ্দে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ২ কেজি মসুর ডাল ও ৫ কেজি চাল কিনতে পারবেন উপকারভোগীরা। প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম পড়বে ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ৬০ টাকা ও প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৩০ টাকা। এবার মোট প্যাকেজ মূল্য ৪৭০ টাকা।
প্রতিবারের মতো এবারও চট্টগ্রামে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫০ জন ফ্যামিলি কার্ডধারী ব্যক্তিরা পণ্য কিনতে পারবেন বলে জানায় টিসিবি। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ৩ লাখ ১ হাজার কার্ডধারী ফ্যামিলি টিসিবির পণ্য পাবেন। ওয়ার্ড ভিত্তিক স্থানীয় কাউন্সিলররা যাদের তালিকা করে কার্ড দিয়েছেন তারাই টিসিবির পণ্য পেয়ে থাকেন।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরী) মো. ফখরুল আলম বলেন, ডিসি অফিস থেকে এখানো বরাদ্দপত্র দিতে পারেনি। ডিসি অফিস থেকে বরাদ্দপত্র পাঠালে আমরা বরাদ্দ দিয়ে দেব।
টিসিবি জানায়, সারাদেশে নিম্ন আয়ের এক কোটি উপকারভোগী কার্ডধারী পরিবারের মাঝে সাশ্রয়ীমূল্যে প্রতি মাসে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও চাল) বিক্রি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করেন ডিলাররা।
চাটগাঁর চোখ/ এইচডি