শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ দাবি

প্রেস রিলিজ

মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) ধর্ষণের মহামারি বন্ধে প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।

৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণ সহ নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের মতো মানবিক বিপর্যয় রুখে দিতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ)।

সংস্থার চেয়ারপার্সন এডভোকেট এলিনা খান, মহাসচিব,এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, ট্রাষ্টিবোর্ড মেম্বারগণ যথাক্রমে এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, মোহাম্মদ ওমর ফারুক,সালমা আদীল, রোজিনা আক্তার, এডভোকেট অংশু আসিফ পিয়াল, ফাতিমা যাহরা আহসান রাইসা কতৃক প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে ধর্ষণের মতো মানবিক বিপর্যয় রুখে দিতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন ও জন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ, এবং পোশাক বা জীবনযাত্রার কারণে নৈতিক পুলিশিংয়ের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। প্রতিদিন যেভাবে নারী নিপীড়িত হতে হচ্ছে, তা প্রমাণ করে যে আমরা একটি ধর্ষণের মহামারির মধ্যে রয়েছি।

নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, অথচ রাষ্ট্রীয় ও সমাজ ব্যবস্থা এ ব্যপারে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে।

নারী অধিকার ও নিরাপত্তার পরিবর্তে ভিকটিম ব্লেমিং, নৈতিক পুলিশিং এবং ধর্ষকদের পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি চলছে—যা অপরাধীদের আরও উৎসাহিত করছে।

তারা আরো বলেন, রাস্ট্র নীরব দর্শক হয়ে এই অপরাধের অংশীদার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই।

বিচারহীনতার ফলে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে, নতুন নতুন অপরাধ ঘটাচ্ছে। এহেন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) সরকারের প্রতি এ অপরাধ সমূলে উৎখাত করতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার দাবি জানায়।

ধর্ষণ মহামারি বন্ধে অবিলম্বে নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে তারা সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

দ্রুত ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা – ধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ও ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট স্থাপন করতে হবে। বিচার বিলম্বিত হওয়া মানে বিচার অস্বীকার করা। আলামত ও সাক্ষ্য সাবূদ নষ্ট করা।

নৈতিক পুলিশিং ও ভিকটিম ব্লেমিং বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা – নারীর পোশাক বা জীবনযাত্রার ওপর কটাক্ষ করা এবং ধর্ষণকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে – পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতি, অনৈতিকতা, এবং মামলা গ্রহণে অনীহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

ধর্ষণ প্রতিরোধে ব্যাপক সচেতনতামূলক কর্মসূচি – সম্মতি ও লিঙ্গ সমতার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে, ধর্ষণ সংস্কৃতি ও নারী পুরুষ বৈষম্যতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে হবে।

নারী অধিকারকর্মী ও প্রতিবাদকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা – ধর্ষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা নারী ও মানবাধিকার কর্মীদের হুমকি ও হয়রানি করা চলবে না; বরং তাদের কণ্ঠকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সমর্থন দিতে হবে।

সাম্প্রতিককালে মাগুরায় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া কিছু নারী ও শিশু ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তারা উৎকন্ঠা প্রকাশ করেন।

চাটগাঁর চোখ/এমএ/এইচ আই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর