শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী চান মমতা

ওটা মমতা ব্যানার্জি ধরনের মন্তব্য : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার সেই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বলেছেন, মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যকে আমরা ‘মমতা ব্যানার্জি ধরনের’ মন্তব্য হিসাবেই দেখতে চাই। মমতা যেটা করেছেন সেটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ‘তার অবস্থানের জন্য সহায়ক হবে না’ বলেও মতপ্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

সোমবার বিকালে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব মন্তব্য করেন তিনি।

ভারতের সঙ্গে আগামী দিনগুলোর সম্পর্ক কেমন হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, পাঁচ তারিখের আগের আর পরের সরকারের সঙ্গে কিছু তফাৎ আছে। সেটার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে কেউ কিছু সময় নিতে পারে। কিন্তু বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে, বাস্তবতা মেনে নিয়েই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। পরস্পরের স্বার্থ ঠিক রেখে আমরা ভারতের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক ভালো সুসম্পর্ক চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকভাবে খারাপ অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে- এমন একটি ধারণা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে রয়েছে। সেই প্রচেষ্টা যেন সফল না হয় সেজন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানত ভারতের মিডিয়া এই ধরনের ধারণা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে এবং আরো কিছু দেশের মিডিয়া ভারতের মিডিয়ার বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে একই ধরনের খবর প্রকাশ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কোন পরিস্থিতিতে গ্রেফতার করা হয়েছে ও তার জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে, সেই বিষয়টিও কূটনীতিকদের বিস্তারিত জানিয়েছেন বলে জানান তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের যে অবস্থান, সেটা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি। এটা অবশ্যই তারা তাদের দেশে রিপোর্ট করবেন, যেটা নিয়ম।

কূটনীতিকদের কিছু কিছু বিষয়ে প্রশ্ন ছিল, সেগুলোর উত্তর দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এসব আলোচনায় তারা ‘কনভিন্সড’ বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেও কূটনীতিকদের বার্তা দিয়েছেন বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এর আগে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় দেয়া বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বলেছেন, জাতিসংঘ যাতে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠায়, সেজন্য তাদের সাথে আলোচনা করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তিনি অনুরোধ জানাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে এই বিষয়ে ভারত সরকার কথা বলুক যাতে সেখানে তারা শান্তি বাহিনী পাঠাতে পারে। আমাদের এই বিষয়ে অনুরোধ রইল।

সোমবার দুপুরে বিধানসভার অধিবেশনে তিনি আরো বলেন, বর্ডার সিকিউরিটি কেন্দ্রের আওতায়। আমাদের এক্তিয়ার বা দায়িত্বে নেই। আমরা হাউজের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী যেন সংসদে বাংলাদেশের বিষয়ে কথা বলেন। যদি প্রধানমন্ত্রীর অসুবিধা থাকে কোনও ব্যাপারে তাহলে বিদেশমন্ত্রী যেন সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানান যে কেন্দ্র এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমার দ্বিতীয় পরামর্শ যদি এ জাতীয় ঘটনা (সহিংসতার) ঘটতে থাকে তাহলে আমরা আমাদের লোকদের ফিরিয়ে আনব। সরকার উদ্যোগ নেবে। তারা ফিরে আসলে থাকার, খাওয়ার কোনও সমস্যা হবে না। কোনও ভারতীয়ের উপর অত্যাচার হবে সেটা আমরা হতে দিতে পারি না।

তবে ‘ভারতীয়দের উপর অত্যাচার’ বলতে তিনি কাদের বুঝিয়েছেন, তা ওই বক্তব্যে পরিষ্কার করেননি। দুই দেশের মধ্যে বর্তমান টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যে উদ্বেগের আবহাওয়া রয়েছে, সেই আবহে সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে রাজ্য কী করতে পারে সে বিষয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে পরামর্শও চেয়েছেন তিনি।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর