সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

একমাস পর উৎপাদনে ফিরেছে মাতারবাড়ী কেন্দ্র

জাতীয় গ্রিডে আবারো যোগ হচ্ছে ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বিশেষ প্রতিনিধি

কয়লা না থাকায় দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় বন্ধ ছিল মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তবে গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৯ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ মাতারবাড়ী বন্দরে ভিড়ে। ওই জাহাজ থেকে পর্যাপ্ত কয়লা খালাসের পর আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকাল থেকে উৎপাদনে ফিরে ১২শ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট।

বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ে। একই দিন বুধবার বিকেল থেকে কয়লা খালাসের কার্যক্রম শুরু হয় । এ ছাড়া কাল রোববার (১ ডিসেম্বর) ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আরেকটি জাহাজ মাতারবাড়ীতে আসবে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত কয়লা খালাস প্রক্রিয়া শেষের দিকে। আগামীকাল আরও একটি কয়লাবাহী জাহাজ বন্দরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটি কয়লার প্রথম চালান। খালাস প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হওয়ায় শনিবার বিকেল থেকে ১২শ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষম দুই ইউনিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালু হয়েছে। তিনি আরও জানান, কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে। ফলে লোডশেডিং অনেকাংশে কমবে।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর কয়লা সংকটের কারণে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুই ইউনিটের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা সরবরাহ আগের চুক্তি আগস্টে শেষ হয়। নতুন কয়লা কেনার দরপত্র আহবানে বিলম্ব হওয়ায় কয়লার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, তিন বছরের জন্য কয়লা সরবরাহের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হলেও দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জটিলতা সৃষ্টি হয়।  বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রো কনসোর্টিয়ামের অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট গত জুলাই মাসে কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে কয়লা আমদানি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ফলে আইনি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়লা আমদানিতে সময় লেগে যায় নভেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কয়লার চাহিদা পূরণ হওয়ায় উৎপাদনে ফিরেছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। ফলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। এছাড়া শীতও চলে এসেছে। ফলে লোডশেডিং অনেকাংশে কমবে।

উল্লেখ্য, ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা নিয়ে দেশের অন্যতম বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প। এর প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ডিসেম্বর মাসে চালু হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর