সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি

বঙ্গভবন ঘিরে রাতভর উত্তেজনা, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম

বিশেষ প্রতিনিধি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের আশপাশে রাতভর উত্তেজনা বিরাজ করেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বঙ্গভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কিছু পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছার চেষ্টা করেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের একটি অংশ পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ভ্যানের ওপরও হামলা চালানো হলে পুলিশ সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তখন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।
একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা বঙ্গভবনের ভেতরে চলে যান। হামলার মুখে কয়েকজন পুলিশ সদস্য অস্ত্র ফেলে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেন। এ সময় সেনাসদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে নিরাপত্তা ব্যারিকেডে কড়া অবস্থান নেয় সেনাবাহিনী।
এর আগে বিকালে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জোরদার হলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তবে সেখানে কী কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। এদিকে বুধবার সকালে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের সাথে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সেখানে সাংবাদিকরা তার কাছে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এবং বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তা এড়িয়ে যান অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এ সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা, সংবিধান বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও সেই পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। বরং, সন্ধ্যার পর থেকে উত্তেজিত জনতা ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এ সময় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাঁধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীরা বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে ধাওয়া দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই সময় অন্তত পাঁচ জন আহত হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১১টার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় চেয়ে তাদেরকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর