মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

মাদক সিন্ডিকেটে র‍্যাবের হানা

কক্সবাজারে র‍্যাবের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে তিন লাখ ১৪ হাজার ইয়াবা, দুই কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, দুটি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও চারটি গুলি সহ আটক হয়েছে ২ ‘মাদক কারবারি’ও চক্রের হোতা ।
আটক দুই ব্যাক্তি হলেন মো. রফিক আহম্মেদ ওরফে বার্মাইয়া রফিক এবং তার সহকারী ফরিদ আলম।
র‌্যাবের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার গহীন পাহাড়ের আস্তানা থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এ সাজ্জাদ হোসেন।
শুক্রবার বেলা ১২টায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিইয়য়ে তিনি এসব কথা জানান।

আটকদের মধ্যে রফিক আহম্মেদ সীমান্তে চোরাচালান ও মাদকপাচারের ‘রোহিঙ্গা গডফাদার খ্যাত’ নবী হোসেনের অন্যতম সহযোগী। ফরিদ আলম রফিকের সহযোগী হিসেবে সীমান্তে মাদকের চালান লেনদেনসহ পরিবহনের কাজ করত বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
অভিযানে তাদের আস্তানা থেকে তিন লাখ ১৪ হাজার ইয়াবা, দুই কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, দুটি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও চারটি গুলি জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন জানান, রঙ্গিখালী এলাকার গহীন পাহাড়ের আস্তানায় মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের বড় চালানসহ রফিক আহম্মেদের সিন্ডিকেটের লোকজন অবস্থান করছে খবরে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিশেষ অভিযান শুরু র‌্যাবের একটি দল।
“রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র‌্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহজনক লোকজন পাহাড়ে দিগ্‌বিদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। এতে ধাওয়া দিয়ে দুই জনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়।”
এ সময় সেখানকার পাহাড়ী আস্তানায় বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায় বিপুল মাদক ও দেশীয় অস্ত্র। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, “অন্তত ৩০/৩৫ বছর আগে রফিক আহম্মেদ বাবা-মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন। সেই থেকে তারা পরিবারসহ হ্নীলা ইউনিয়নের সুইচপাড়া ওয়াব্রাং এলাকায় বসবাস করছেন।
“জীবিকার তাগিদে নাফ নদীতে মাছ ধরতেন রফিক। এক পর্যায়ে নদীপথে মাদকপাচারে জড়িয়ে পড়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন তিনি।” সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এ সাজ্জাদ হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ বলেন, “রফিকের চাহিদা মাফিক মাদকের চালান জোগাড় করে সীমান্তে পৌঁছে দেয় নবী হোসেন। সেখান থেকে মাছ ধরার ট্রলারে হ্নীলার গহীন পাহাড়ের আস্তানায় এনে মজুদ রাখা হত। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে ওইসব মাদক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করত। “ সাজ্জাদ হোসেন জানান, মাদক বিক্রির টাকা বিভিন্ন দেশে পাচার করতে একটি সিন্ডিকেটও গড়ে তুলেছিলেন রফিক। তিনি বলেন, “রফিক আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে এজেন্টদের কাছ থেকে মাদক বিক্রির টাকা সংগ্রহ করতো। পরে সংগৃহীত টাকা স্থানীয় ব্যবসায়িদের সহায়তায় বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে টেকনাফের হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করত। “হুন্ডি ব্যবসায়ীরা সেই টাকা বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের শাখায় প্রেরণ করতো। পরবর্তীতে ওইসব টাকা ডলারে রূপান্তর করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হত।“আটকদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর