বাঁশখালীর ঐতিহ্যবাহী জলকদর খাল রক্ষায় বহুল প্রতীক্ষিত ডিজিটাল সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। সার্ভে রিপোর্ট ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাঁশখালীবাসী এ পদক্ষেপকে আশাজাগানিয়া বলে মনে করছেন।
দখলে ভরাটে প্রায় বিপন্ন এ খাল এক সময় নৌ যোগাযোগে বাঁশখালীবাসীর প্রধান মাধ্যম ছিল। ভরা যৌবনা এ খাল ছিল নৌকা- সাম্পান আর মাঝি মাল্লার গানে মুখর। অথচ নানা কারণে এ খাল বিবর্ণ প্রাণহীন হতে চলেছিল।
জানা যায়, জলকদর রক্ষার জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে সীমানা নির্ধারণের জন্য ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৬ জন সার্ভেয়ার নিয়োগ করা হয়।
উপজেলা ভূমি অফিস উক্ত ৬ জন সার্ভেয়ারসহ ১ জন ডিজিটাল সার্ভেয়ার এবং ডিজিটাল সার্ভের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ সমাপ্ত করে সম্প্রতি প্রতিবেদন (সি এস ও বি এস নকশা/ম্যাপ) প্রদান করেছেন। নির্ভুল সীমানা নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে অবৈধ দখল সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে উপজেলা প্রশাসন জলকদর খালের সীমানা নির্ধারণের কাজটি ম্যানুয়ালি না করে ডিজিটাল সার্ভের মাধ্যমে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয় বলে জানা যায়। দীর্ঘদিনের কার্যক্রম শেষে গত ২১নভেম্বর উপজেলা প্রশাসন হতে জেলা প্রশাসনের নিকট সার্ভে রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার।
তিনি বলেন, বাঁশখালীতে তাঁর যোগদানের কিছুদিন পর সংশ্লিষ্ট নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে জলকদর খালের সীমানা নির্ধারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বাঁশখালীর খানখানাবাদ ও সাধনপুরের সংযোগস্থল ঈশ্বর বাবুর হাট থেকে কুতুবখালী চ্যানেল পর্যন্ত বয়ে চলা জলকদর খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে খালটিকে আগের রুপে ফিরিয়ে আনা ছিলো বাঁশখালীর আপামর জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ করেছি।
মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের আদেশ মোতাবেক চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এর নির্দেশনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর তত্ত্বাবধানে উপজেলা ভূমি অফিস বাঁশখালীর সহায়তায় সার্ভে কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
সার্ভে রিপোর্ট গত বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন হতে জেলা প্রশাসনে প্রেরণ করা হয়েছে। জানা গেছে, জেলা প্রশাসন পানি উন্নয়ন বোর্ডে সার্ভে রিপোর্ট হস্তান্তর করবেন।
অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, খননসহ জলকদর খালের রক্ষণাবেক্ষণের যেকোনো উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান।
বাঁশখালীর বিস্তীর্ণ এলাকায় যোগাযোগ, অনেক মানুষের জীবন-জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ এ খাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যেরও এক অপূর্ব নিদর্শন।
এনইউ/ এমএ