মিরসরাই উপজেলার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর বোনের শ্বশুর বাড়ীতে প্রবাসী ভাই মোঃ মফিজ প্রকাশ মহিউদ্দিন হত্যা মামলার প্রধান আসামী ভগ্নিপতি মোঃ শেখ ফরিদ প্রকাশ শরিফ’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম।
শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শেখ ফরিদ প্রকাশ শরিফ (৩৫) উপজেলার ৭নং কাটাছড়া ইউনিয়নের নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ।
জানা গেছে, নিহত মোঃ মফিজ প্রকাশ মহিউদ্দিন (৪৫) দীর্ঘ দিন যাবত ওমান প্রবাসী ছিলেন এবং কিছু দিন পূর্বে দেশে ফিরে আসেন।
প্রায় ৪ বছর পূর্বে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পার্শ্বর্বতী এলাকার শেখ ফরিদ এর সাথে মহিউদ্দিনের ছোট বোন তাহমিনা আক্তার কলির বিবাহ হয়।
বিবাহের পর হতে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিন্ডার সৃষ্টি হয়। নিহত মহিউদ্দিন বোনের সংসারে সুখের কথা চিন্তা করে প্রবাসে অবস্থানকালে বোন জামাই শেখ ফরিদ উদ্দিন’কে ব্যবসার জন্য ১৫ লাখ টাকা প্রদান করেন।
পরর্বতীতে মহিউদ্দিন দেশে অবস্থানকালে তার বোনের কাছে প্রদানকৃত ১৫ লাখ টাকা ফেরত চান। উক্ত বিষয়ে মহিউদ্দিনের বোন তার স্বামী শেখ ফরিদ উদ্দিন’কে টাকা ফেরত প্রদানে বিষয়ে অবহিত করলে শেখ ফরিদ উদ্দিন এবং তার পরিবার টাকা ফেরত প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়।
মহিউদ্দিনের বোন টাকা ফেরত প্রদানে অস্বীকৃতির কথা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার ভাইকে অবহিত করলে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় নিহত মহিউদ্দিন তার বোনের শ্বশুড়বাড়ী নোয়াপাড়া এলাকায় হাজির হয়ে তার প্রদানকৃত ১৫ লাখ টাকা ফেরত প্রধানে অস্বীকৃতির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করিলে বোন জামাই শেখ ফরিদ এবং তার পরিবারে অন্যান্য লোকজনের সাথে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে বোন জামাই শেখ ফরিদ এবং তার পরিবারে অন্যান্য লোকজন উত্তেজিত হয়ে প্রবাসী মহিউদ্দিন’কে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরত্বর রক্তাক্ত জখম করে।
পরর্বতীতে স্থানীয় লোকজন এবং মহিউদ্দিনের বোন ঘটনাস্থল থেকে মহিউদ্দিনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মহিউদ্দিনকে মৃত ঘোষনা করেন।
উক্ত ঘটনায় নিহত মহিউদ্দিনের বোন তাহমিনা আক্তার কলি বাদী হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি জোরারগঞ্জ থানায় ৪ জনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতানাম ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা (নং ১৩) দায়ের করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত মামলার এজাহারনামীয় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখেন। গোয়েন্দা নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে আসামী শেখ ফরিদ প্রকাশ শরিফকে গ্রেফতার করে।
সে মামলা হওয়ার পর থেকে আইনশৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃত আসামী শরিফকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে র্যাব-৭।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, র্যাব-৭ হত্যা মামলার আসামী শরিফকে গ্রেফতার করে থানায় হস্তান্তর করার পর রবিবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চাটগাঁর চোখ/এআই