কক্সবাজার সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাতলী মাছুয়াখালী খালের উপর নির্মিত অবৈধ বাঁধ কেটে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য উম্মুক্ত করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
গত ১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকালে পাতলী মাছুয়াখালী খালের অবৈধ বাঁধ কেটে আওয়ামী প্রভাবশালীর দীর্ঘদিনের দখল মুক্ত করলেন- ইউএনও ।
শুধু তাই নয়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ধারা লংঘন করে খালের উপর বাঁধ নির্মাণের অপরাধ স্বীকার করেন জনৈক আওয়ামী প্রভাবশালী নুরুল আবছার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী সৃষ্ট অপরাধের কারণে আবছারকে খালের উপর আর যাতে কোনদিন বাঁধ নির্মাণ করে মৎস্য চাষ করার মতো দুঃসাহস না করেন এ জন্য সতর্ক করেন এবং ১০ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত করেন।
এ সময় উপজলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী,বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী শাহ কিবরিয়া মাহবুব তন্ময়, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা– ধরা’র কক্সবাজার জেলার যুগ্ম আহবায়ক এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন, বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সওকত আলী সবুজ, ধরা’র সদর উপজেলা আহবায়ক মোঃ হাসান পিএমখালীর তহশিলদার জাহেদ হোসেন,পিএমখালী ৬ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দীন ও আনসার ভিডিপির সদস্যদের উপস্থিতিতে পিএমখালী খালের উপর অবৈধ ভাবে দেয়া দু’টি বাঁধ অপসারণ করা হয়।
উল্লেখ্য উক্ত পিএমখালী খালের পানি দিয়ে শতশত একর জমির চাষাবাদ হয়। এবং এলাকার নিম্ন আয়ের লোকজন দীর্ঘ আড়াই কিলোমিটার খালে জাল দিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো।
গত ৩/৪ বছর ধরে জনৈক নুরুল আবছার আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই খালে দু’ টি বাঁধ দিয়ে মৎস্যচাষ করে এলাকার লোকজনকে খাল ব্যবহারে বাঁধা সৃষ্টি করে আসছিল। ফলে ব্যাহত হয় চাষাবাদ,জেলেরা খালের মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়।উক্ত খালের বাঁধ কেটে দেয়ার দাবীতে এলাকাবাসী পরিবেশবাদী সংগঠন ধরা’ কে সাথে নিয়ে খালপাড়ে একাধিক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করে আসছে।
এমনকি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন একাধিকবার লিঁখিত অভিযোগ ও দিয়েছিলেন। ক্ষমতার দাপটের কারণে বাঁধ কাটা সম্ভব হয়নি এতদিন।
১৯৭৮ সালে সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথম পাতলী মাছুয়াখালী খাল খনন করেছিলেন। এর পর গত ৫/৬ বছর পরপর বিএডিসি এই খাল খনন করে আসছে চাষাবাদ মৎস্যজীবীদের সুবিধার্থে। ২০১৭ সালে ও এই খাল খনন করা হয়েছিল তখন এই খাল ছিল উম্মুক্ত।
২০২০ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আবছার এই খালে বাঁধ দিয়ে শুরু করে মাছচাষ।তারপর থেকে সর্বসাধারণের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয় এই খালে।এমনকি চলতি বছর ৩০ মে সর্বশেষ পাতলী মাছুয়াখালী খালের খনন কাজের উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান। তখন তিনি বলেছিলেন এই খাল সর্বসাধারণের জন্য উম্মুক্ত থাকবে।
১৫/১৬ দিনের মধ্যে খনন কাজ শেষ হলে জনৈক নুরুল আবছার আবারো খালের দুই প্রান্তে দু’টি বাঁধ দিয়ে শুরু করেন মৎস্যচাষ।
এমএ/ জই