বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাধীন ঘুমধুম-তুমব্রুর ৪ কিলোমিটার সীমান্তের পয়েন্টে পয়েন্টে চৌকি বসিয়েছে ৩৪ বিজিবি। যাতে করে এ পয়েন্ট দিয়ে যে কোন মতে চোরাচালান ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে। অর্থাৎ বিজিবি যেমন কাজ তেমন সুফল পাচ্ছে এ পয়েন্ট দিয়ে। যার কারণে বিজিবি জোয়ানরা এ পয়েন্ট দিয়ে গত ১ মাসে অন্তত ৩০ কোটি টাকার মিয়ানমারের চোরাই পণ্য জব্দ করেছে বলে সূত্র নিশ্চিত করে ।
সূত্র মতে, গত কদিনে উল্রেখযোগ্য অভিযানের মধ্য ছিল জব্দ করা হয় ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে অকটেন,সোয়াবিন তেল,খাদ্য সামগ্রী। ১৫ সেপ্টেম্বর জব্দ করেন ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট,১৪ সেপ্টেম্বর জব্দ করেন ৩ শত বস্তা সারসহ ২ পাচারকারী আটকের ঘটনা,১১ সেপ্টেম্বর স্বর্ণ,টাকা ও খাদ্য সামগ্রী,৩১ সেপ্টেম্বর জব্দ করেন ৮০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট। এভাবে প্রায় প্রতিদিন-সপ্তাহে এ ধরণের চোরাইপণ্য জব্দ করেন ৩৪ বিজিবি জোয়ানরা।
এছাড়া জব্দকৃত অন্যান্য পণ্যের মধ্যে এ দেশের কৃষকের ভূর্তকির সার,ইয়াবা ট্যাবলেট,স্বর্ণ, খাদ্য পণ্য,অকটেনসহ শতাধিক পণ্য এপার-ওপার পাচার হয়ে আসছিল।
স্থানীয়রা জানান,এ সীমান্ত পয়েন্টটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ঘেষা। হাত বাড়লেই পাওয়া যেত সব কিছু। এ সীমান্তের মাত্র একশত গজ দুরে মিয়ানমার চোরাকারবারীরা খুলে বসান বিশাল চোরাইপণ্যের হাট। যে টি মিয়ানমার সীমান্তের রাইট ক্যাম্প ( বিওপি,যা বর্তমানে বিদ্রোহী আরকান আর্মি নিয়ন্ত্রন করে) এর অতি নিকটে।
তারা আরো জানান,দু’দেশের চোরাকারবারীরা এ হাট-বাজার থেকে স্বর্ণ,ইয়াবা ট্যাবলেট,সিগরেট, বিদেশী মদ,গবাদী পশুসহ অনেক পণ্য এদেশে পাচার করত। আর এ দেশ থেকে ওপারে নিয়ে যেত সার, ঔষধ, চাল, ডাল, চকলেট চিপস,পলথিন,সোয়াবিন তেল, অকটেনসহ শত প্রকার পণ্য।
এমতাবস্থায় ৩৪ বিজিবিতে অধিনায়ক হিসেবে যোগদানের পর লে: কর্ণেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকি এ সব অপকর্ম বন্ধে নানাবিদ উদ্যোগ নেন। তারই অংশ হিসেবে এ পয়েন্টটি চোরাকারবারের জোন হিসেবে চিহ্নিত করে ঘুমধুমের নয়াপাড়া,বেতবুনিয়া,জলপাইতলী,তুমব্রু পশ্চিমকূল সীমান্তে পয়েন্টে পয়েন্টে অস্থায়ী চৌকি বসানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। যাতে করে চোরাকারবারী দল নড়াচড়া করলেই টেরপান জোয়ানরা। কঠোর এ নজরদারীতে পড়ে চোরাকারবারী দল কোনঠাসা হয়ে এ সীমান্ত ত্যাগ করে এখন সীমান্তের চাকঢালা পয়েন্টে চলে আসে। তারা বর্তমানে স্থানীয় কয়েকজন রাঘব বোয়ালের সাথে জোট করে কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ।
ঘুমধুম ও তুমব্রু এলাকার সমাজ সেবক
ছৈয়দুল বশর,মাস্টার হামিদুল হক ও আবদুল করিম জানান, ঘুমধুম -তুমব্রু সীমান্তে পয়েন্টে পয়েন্টে বিজিবি সীমান্ত চৌকি বসানোর কারণে তাদের এ এলাকা দিয়ে চোরাচালান এখন প্রায় বন্ধ। যা গত বেশ কিছু দিন ধরে দেখতে পাচ্ছেন তারা কেননা বিজিবি জোয়ানরা এখানে খুবই কঠোর অবস্থানে আছেন। পাতা পড়লেও
জানতে পারেন তারা। এমতাবস্থায় কারবারীদের সেই চোরাই হাট এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে:কর্ণেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকি বলেন,অভিযান চলমান আছে -থাকবে।
যা হচ্ছে দায়িত্বের দাগিদেই করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তার অধিনস্থ সব ক’টি পয়েন্টে সবধরণের অপরাধ দমন ও বন্ধে কঠোর অবস্থানে ৩৪ বিজিবি জোয়ানরা।
এমএ/ জই