কক্সবাজারে পাহাড় ধসে একদিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুই নারী ও দুই শিশু রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে শহরের কলাতলী সৈকতপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ে একই পরিবারের আটজন মাঠি চাপা পড়ে। এঘটনায় বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের জীবিত উদ্ধার করা গেলেও মিম নামের এক শিশুকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাঈদ আনোয়ার বলেন, গাছ এবং পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৮ জন মাটির নিচে চাপা পড়ে ।
পরে পুলিশ, ফায়ারসার্ভিস এবং স্থানীয়রা মিলে ওই পরিবারের ৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও মিম নামের এক শিশুকে বাঁচানো যায়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সদরের ঝিলংজায় লায়লা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূ পাহাড় ধসে নিহত হন। তিনি দক্ষিণ মহুরিপাড়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী।
এঘটনায় তাদের ২ বছরের শিশু মোহাম্মদ জুনায়েদ গুরুতর আহত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টার দিকে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু হয়।
শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের পূর্ব পল্যান কাটা এলাকায় বসতঘরে পাহাড় ধসে স্থানীয় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা বেগম (৩০) নিহত হয়েছেন।
এছাড়া শহরের ৭ নং ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় সাইফুলের ছেলে মো হাসানের (১০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান।
তিনি বলেন, কক্সবাজারে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই নারী ও দুই শিশু নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৩৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আগামী দুদিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মধ্যরাত থেকে কক্সবাজারে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বাকখালী ও মাতামুহুরি নদীসহ বিভিন্ন ছোট বড় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজার সদর, রামু, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফ এবং কক্সবাজার পৌরসভার অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে পর্যটন শহরের কলাতলী সড়কসহ অসংখ্য ছোট- বড় সড়ক, বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবেশ করেছে ।
এছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকা হোটেল- মোটেল জোনে বৃষ্টির পানির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
কলাতলী সড়ক, বাজারঘাটা, বাস টার্মিনাল, উপজেলা বাজার ও লিংকরোড় এলাকায় সড়কে বন্যার পানি জমে যায়।
সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এসব এলাকায় বন্যার পানির কারণে যানচলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।