সড়ক পথে নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি, অতিরিক্ত ভাড়াসহ নানান অব্যবস্থাপনার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের যাত্রীরা এক প্রকার বিষিয়ে উঠেছিলো।
এমন পরিস্থিতিতে গেল ঈদুল ফিতরের সময়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে কক্সবাজার স্পেশাল নামে একটি ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়।
খুব দ্রুত যাত্রী সাধারণ সীমিত সুবিধার এই ট্রেনটির প্রতি ঝুঁকছিলেন। তাছাড়া অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রেনটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে যাত্রী বান্ধব বাহনে পরিণত হয়।
ফলে ঈদের পর নির্ধারিত সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় রেল প্রশাসনের মাঠ জরিপ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রেনটি চলাচলের সময়সীমা দুই দফা বাড়ানো হয়েছে।
তখন বাস মালিকেরা একে একে সব পরিবহনে যাত্রী সংকট দেখা দিলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রী প্রতি বাস ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়।
তারপরেও বাসে যাত্রী না পাওয়ায় বাস মালিকেরা রেল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ফেলেছে বলে এই রুটে যাত্রীদের অনেকেই মনে করেন।
তাই বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের জনপ্রিয় ট্রেন সার্ভিস কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হচ্ছে।
অভিযোগগুলো উপস্থাপন করেছেন যাত্রী অধিকার সুরক্ষায় নিয়জিত সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
অন্যথায় এপথের যাত্রী সাধারণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সংগঠনের বিবৃতিতে জানা যায়, দেশের ট্রেন সার্ভিসগুলোর মধ্য অন্যান্য আন্তঃনগর ট্রেনের তুলনায় ঢাকা-কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রীর চাহিদা বেশি এবং আয়ও বেশি।
এছাড়া ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রেলপথে কয়েক জোড়া রেল চালানো না গেলে বিনিয়োগের কিস্তি ওঠানো সক্ষম হবে না। এতে রেল কর্তৃকপক্ষের লোকসানের বোঝা দিনদিন ভারী হয়ে উঠবে।
কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে দুটি করে ট্রেন সার্ভিস চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই সার্ভিস বন্ধ করা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
রেলওয়ে একশ্রেণির কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকারের আকাঙ্ক্ষার বাইরে গিয়ে কেবল বাস মালিকদের লাভবান করার মানুষ এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তাই অনতিবিলম্বে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এলাকার যাত্রী সাধারণকে সরকারের অনন্য অবদান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
চচ/আরপি