সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক পিএলসি ও ইসলামি ব্যাংক পিএলসির পর এবার কর্মকর্তা ছাঁটাই করল ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকার সময় চাকরি পাওয়া ২৬২ জন কর্মকর্তাকে বর্তমান পর্ষদ চাকরিচ্যুত করেছে।
সোমবার ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. কবিরুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচ্যুতরা ট্রেইনি অ্যাসিসট্যান্ট অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তাদের অধিকাংশের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায় বলে জানা গেছে।
চিঠির সূত্রে জানা যায়, তারা গত এপ্রিল মাসে যোগদান করেছিলেন। তবে কোন অপরাধে তাদের গণহারে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তা উল্লেখ নেই চিঠিতে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে একই কায়দায় ১ নভেম্বর থেকে চাকরির অবসান ঘটে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের ৬শ’র অধিক কর্মকর্তার। এছাড়া ইসলামি ব্যাংকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র পাওয়া সাড়ে ৩শ’ কর্মকর্তাকে এসএমএসের মাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট জানিয়ে দেয়া হয়, তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকেও শতাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হয়েছে, যাদের অধিকাংশের বাড়ি চট্টগ্রামে।
চাকরিচ্যুতরা বলছেন, আগের পরিচালনা পর্ষদের ক্ষোভ তাদের উপর মেটানো হচ্ছে। যা কখনো কাম্য নয়। তাছাড়া যারা ইতোমধ্যে ব্যাংকে যোগদান করে চাকরিচ্যুত হয়েছেন- তাদের অনেকে আগে অন্য জায়গায় চাকরি করতেন। এখন তারা দুকূল হারিয়ে বিপদে পড়েছেন। এছাড়া অনেকের ব্যাংকে চাকরি হওয়ায় তারা বয়স থাকতে অন্য কোথাও চাকরির জন্য আবেদন করেননি বা পরীক্ষা দেননি। এখন তাদের বয়সও চলে গেছে। তাহলে এখন তাদের কী হবে?
চাকরি হারানো ব্যাংকাররা ইতোমধ্যে চাকরি ফিরে পেতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। সেখানে তারা বলেছেন, তাদের অধিকাংশই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স পাস করা। কিন্তু তাদেরকে এমনভাবে হেয় করা হচ্ছে, যেন তাদের কোনো যোগ্যতাই নেই। তারা বলছেন, যদি অযোগ্য কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে বর্তমান পর্ষদের মনে হয়, তাহলে তারা যেন আবার সনদ যাচাই-বাছাই করেন। তাছাড়া পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ নিয়ে পর্ষদের আপত্তি থাকলে তারা যেন আগে ছাঁটাই না করে পরীক্ষা নেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে তারা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানান। তারা আনুরোধ করেন, এভাবে একের পর এক ব্যাংক থেকে প্রতিহিংসার বশঃবর্তী হয়ে যেন ছাঁটাই করা না হয়। তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এনইউ/জই