শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৫৭৯ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত

নিজস্ব প্রতিবেদক

এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত পর্ষদের নিয়োগ পাওয়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড পিএলসির (এসআইবিএল) ৫৭৯ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছে ব্যাংকটির নতুন পর্ষদ।

গণহারে এভাবে চাকরিচ্যুত করার ঘটনা ব্যাংকটির ইতিহাসে প্রথম। এনিয়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা যায়।

তবে কোন অপরাধে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং বিধি মেনে করা হয়েছে কিনা সেটি স্পষ্ট নয় বলে দাবি চাকরি হারানো কর্মকর্তাদের।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এসআইবিএলের মানব সম্পদ বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) হেড অফিস ডিভিশনের মো. শাহরিয়ার খান স্বাক্ষরিত ৫৭৯ জন কর্মকর্তার নামে ইস্যুকৃত প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি থেকে আপনার পরিষেবার অবসান। নিয়োগ পত্রের ১০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, আপনার পরিষেবা এতদ্বারা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি থেকে ১ নভেম্বর ২০২৪ থেকে বন্ধ করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে আপনার পরিষেবা বন্ধ করা সত্ত্বেও আপনার চাকরির সময়কালে আপনার কাজ, ভুলে যাওয়া, অবহেলা বা কোনো ত্রুটির কারণে ভবিষ্যতে ব্যাংকের যেকোনো ধরনের ক্ষতির জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।’

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় চাকরিচ্যুত এসব কর্মকর্তাদের চলতি বছরে চট্টগ্রামের পটিয়া ও আশপাশের উপজেলা থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক বোর্ড সভায় তাদের নিয়োগ বাতিল করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে চাকরিচ্যুত করার কথা জানানো হয়েছে।

বর্তমানে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের সারা দেশে ১৮৬টি শাখায় ৪ হাজার ৭০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী চট্টগ্রামের পটিয়া ও আশপাশের উপজেলা থেকে এস আলম গ্রুপের নিয়োগপ্রাপ্ত।

এদিকে এসআইবিএলের গণহারে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ৫ আগস্টের আগে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাংকারদের বিভিন্ন গ্রুপে এটি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক করতে দেখা যায়।

একপক্ষ এটিকে ভবিষ্যতের জন্য ‘সতর্কতামূলক বার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করলেও অন্যপক্ষ বলছেন, এভাবে এতগুলো মানুষ ও তাদের পরিবারকে বিপদে ফেলা উচিত হয়নি। তারা বলছেন, এতগুলো মানুষ ও তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবারের রুটি-রুজির বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ‘বিকল্প মানবিক পন্থা’ অবলম্বন করতে পারতেন। তারা দাবি করছেন, আগের পরিচালনা পর্ষদ অপরাধ করলে সেই শাস্তি কর্মকর্তাদের দেয়া উচিত হয়নি। তারা সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে পাঁচজন নতুন পরিচালক নিয়োগ পান।

এনইউ/জই

 

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর