মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ, রাষ্ট্রপতির শাসন জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং পদত্যাগ করার পর নতুন কোনো মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি। এই অচলাবস্থার মধ্যে রাজ্যটিতে জারি হয়েছে রাষ্ট্রপতির শাসন। সেভেন সিস্টার্স ভুক্ত রাজ্যটিতে দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা ও সাংবিধানিক সংকট চলছিল। ফলে একপর্যায়ে গত চারদিন আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং পদত্যাগ করেন।
জানা যায়, প্রায় ২১ মাস ধরে মণিপুরে সংঘর্ষ, সহিংসতা আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫০ জন। এর শিকার হয়েছেন আরও হাজারও মানুষ। বারবার রাজ্যের পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থতার অভিযোগের মুখে গত ৯ ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। তার পদত্যাগের পর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নতুন কোনও মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে একমত হতে পারেনি এবং কোনও নামও ঘোষণা করতে পারেনি। এই অচলাবস্থার মাঝেই বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বরাত দিয়ে বলা হয়, মণিপুরের রাজ্যপালের কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়েছি। সেই রিপোর্ট দেখে এবং অন্য তথ্যর ভিত্তিতে আমার মনে হয়েছে, সংবিধান অনুসারে সেখানকার রাজ্য সরকার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে না।
ভারতীয় পত্রিকা এনডিটিভি লিখেছে, ১৯৫১ সালের পর মণিপুরে ১১তমবারের মতো রাষ্ট্রপতি শাসন কার্যকর হল। রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং গত রোববার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করার পর রাজ্য প্রশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এতে তিনি বলেছিলেন, মণিপুরের মানুষের সেবা করা আমার জন্য সম্মানের বিষয়। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা সময়োপযোগী পদক্ষেপ, উন্নয়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের স্বার্থ রক্ষা করেছে।
পাঁচ দিন আগে, সুপ্রিম কোর্ট সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবকে একটি ফাঁস হওয়া অডিও টেপের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয়, যেখানে বীরেন সিংকে রাজ্যে জাতিগত সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যের পরিস্থিতি। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পরিস্থিতি সামলাতে মণিপুরের বেশ কিছু জেলায় কার্ফু জারি করা হয়, ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করা হয়। মণিপুরে অশান্তির কারণে গত বছরের শেষ দিনে মণিপুরবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন বীরেন। একইসঙ্গে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ২০২৫ সালে রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরবে।
এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর