যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার (১০০) মারা গেছেন। স্থানীয় সময় রোববার (২৯ ডিসেম্বর) জিমি কার্টার সেন্টার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জো বাইডেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ দেশটির রাজনীতিবিদরা।
ডেমোক্র্যাট দল থেকে নির্বাচিত জিমি কার্টার ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দেশটির ৩৯ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি।
কার্টারের যাত্রা শুরু হয়েছিল জর্জিয়ার একটি ছোট্ট শহর প্লেইন্সে। তিনি সেখানে ১ অক্টোবর, ১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে একজন অফিসার হিসেবে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের পারমাণবিক সাবমেরিন বহরের উন্নয়নে সহায়তা করেছিলেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে কার্টার পারিবারিক চিনাবাদাম চাষের ব্যবসা চালানোর জন্য ১৯৫৩ সালে তার নিজ শহরে ফিরে আসেন।
জিমি ১৯৬০-এর দশকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন, ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রাজ্যের ৭৬তম গভর্নর হওয়ার আগে জর্জিয়ার প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কার্টার জেরাল্ড ফোর্ডের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যিনি ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে রিচার্ড নিক্সন পদত্যাগ করার পরে রাষ্ট্রপতির পদে অভিষিক্ত হন। কার্টার ফোর্ডকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী রোনাল্ড রিগ্যানের কাছে পরাজিত হন জিমি।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে নির্বাচিত জিমি কার্টার ক্ষমতায় এসেছিলেন আমেরিকান জনগণের কাছে কখনো মিথ্যা না বলার অঙ্গীকার করে। আলোচিত ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পর জর্জিয়ার সাবেক এই বাদাম চাষিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো নেতা যিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তির মধ্যস্থতা করেছেন তিনি। তবে, ইরান জিম্মি সংকট নিয়ে চুক্তি করতে এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন ঠেকাতে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে।
উল্লেখ্য, দেশটির ইতিহাসে জিমিই প্রথম শতবর্ষী প্রেসিডেন্ট। মৃত্যুকালে চার সন্তান ও ১১ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন তিনি। তার স্ত্রী রোসালিন ২০২৩ সালে মারা যান।
এনইউ/জই