চাদে ভয়াবহ বন্যায় জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৫০৩ জন প্রাণ হারিয়েছে ও প্রায় ১৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার জাতিসংঘ দেশটির দুর্যোগের সর্বশেষ মূল্যায়নে একথা জানিয়েছে।
চাদে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানায়, বন্যায় দেশটির ২ লাখ ১২ হাজার ১১১টি বাড়ি ধসে গেছে, ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮৩২ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে ও ৬৯ হাজার ৬৫৯টি গবাদি পশু ডুবে মারা গেছে।
চাদের পানি ও জ্বালানি মন্ত্রী মার্সেলিন কানাবে পাসালে শনিবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, সব প্রদেশে বন্যা দেখা দিয়েছে। লোগোন ও চারি নদীর পানি সংকটজনক উচ্চতায় পৌঁছেছে।
সামনের দিনগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে পারে বলে পাসালে সতর্ক করেছেন। চাদের রাজধানী এন’জামেনা লোগোন এবং চারি নদীর মোহনায় অবস্থিত।
এন’জামেনা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পাসেল কূপের পানি খাওয়ার আগে ক্লোরিন দিয়ে বিশুদ্ধ করার সুপারিশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলো মূল্যায়ন করার জন্য একটি বন্যা পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নদীর পানির স্তর বৃদ্ধির সাথে সাথে খাবার পানিতে দূষণের ঝুঁকি বাড়ছে।
জাতিসংঘ সেপ্টেম্বরের শুরুতে অনেক অঞ্চলে বিশেষত চাদে ‘প্রবল বর্ষণ ও বন্যা’ সম্পর্কে সতর্ক করেছিল।
জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ ও অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক বর্ষা মৌসুমে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার যে দেশগুলোতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়, চাদ তাদের মধ্যে অন্যতম।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ১৭ সেপ্টেম্বর সতর্ক করে জানিয়েছে, ১৪টি দেশের ৪০ লাখের বেশি লোক বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের ধারণা, এ বন্যায় আগস্টের শেষ নাগাদ ক্যামেরুনে ২০ জনের মৃত্যু এবং ২ লাখ ৩৬ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাদের প্রতিবেশী দেশ নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহরে ব্যাপক বন্যা হয়েছে। মাইদুগুরিতে অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছে ও অঞ্চলটির ৪ লাখ লোক বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, আফ্রিকার সর্বাধিক জনবহুল দেশটিতে বন্যায় ২২৯ জনের প্রাণহানি এবং ৩ লাখ ৮০ হাজার জনের বেশি লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে। অঞ্চলটিতে প্রায়ই ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা দেখা দেয়। এটি এ অঞ্চলের স্বাভাবিক ঘটনা।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করেছেন যে, মানবসৃষ্ট জীবাশ্ম জ্বালানী নির্গমন বৃদ্ধি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ আর এ জন্যই আরও চরম আবহাওয়ার সময়কাল দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বিশ্বব্যাপী রেকর্ড তাপমাত্রা, তাপপ্রবাহ, খরা ও বড় ধরনের বন্যার দেখা দিয়েছে।
এমএ/ জই