মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এশিয়ায় প্রথম এমপক্সের নতুন প্রাণঘাতী ধরন শনাক্ত থাইল্যান্ডে

অনলাইন ডেস্ক

মাঙ্কিপক্স বা এমপক্সের নতুন প্রাণঘাতী ধরনের সংক্রমণ শণাক্ত হয়েছে থাইল্যান্ডে। এশিয়ার ভেতরে এমপক্স ধরা পরার ঘটনা এটিই প্রথম।

আর আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে এমপক্স শনাক্ত হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা এটি।

থাইল্যান্ডের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ বলছে, এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তি একজন ইউরোপিয়ান, যার বয়স ৬৬ বছর। তিনি গত ১৪ই অগাস্ট আফ্রিকার একটি দেশ থেকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে পৌঁছান। আফ্রিকান ওই দেশটির নাম জানা যায়নি।

পরদিন তার দেহে এমপক্সের কিছু লক্ষণ দেখা দিলে তিনি সাথে সাথে হাসপাতালে যান। তখন জানা যায় যে তিনি এমপক্সের নতুন ধরন ‘ক্লেইড ওয়ানবি’ তে আক্রান্ত হয়েছেন।

থাইল্যান্ডে অবতরণ করার পর মোট ৪৩ জন ওই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলো। তাদের সবাইকে এখন ২১ দিনের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

বিশ্বের মোট ৪২টি দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে থাইল্যান্ড। তাদের থাইল্যান্ডে আসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

মূলত, গত বছর গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে এই রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে অন্তত ৪৫০ জন মানুষ এমপক্সে মারা গেছে।

এরপর কঙ্গো থেকে এটি আশেপাশের আরও কয়েকটি দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। যেমন– বুরুন্ডি, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও উগান্ডা। এসব দেশে আগে কেউ এমপক্সে আক্রান্ত হয়নি।

ক্লেইড ওয়ানবি শুরুতে কঙ্গোর পূর্ব দিকে শনাক্ত হয়েছিলো। কিন্তু এখন তা সীমান্তবর্তী ও আশেপাশের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে।

এক সপ্তাহ আগে এশিয়া মহাদেশের বাইরে ক্লেইড ওয়ানবি সর্বপ্রথম ধরা পড়ে সুইডেনে। যে ব্যক্তির দেহে এটি শনাক্ত হয়, তিনিও সম্প্রতি আফ্রিকার কোনও দেশ থেকে সুইডেনে গিয়েছিলেন বলে জানায় দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এবার এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে প্রথম এমপক্সের ক্লেইড ওয়ানবি ধরনের সংক্রমণ ধরা পড়লো।

ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ, যেমন– যৌন সম্পর্ক, গায়ে গায়ে লাগা, মুখের কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে এমপক্স ছড়ায়।

তবে আফ্রিকার দিকে এমপক্সের নতুন সংক্রমণের বিস্তার ও এর উচ্চ মৃত্যু হার বিজ্ঞানীদের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এমপক্স কী এবং এর লক্ষণ

গুটিবসন্তের একই গোত্রীয় ভাইরাস হলেও এমপক্স সাধারণত অনেক কম ক্ষতিকারক।

প্রথমে এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছিল। কিন্তু এখন এটি মানুষ থেকে মানুষেও ছড়ায়।

এই রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যথা।

আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ্বর উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে হাতের তালু এবং পায়ের তলদেশসহ শরীরের অন্যান্য অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে।

অত্যন্ত চুলকানো বা ব্যথাদায়ক এই ফুসকুড়িগুলো পরিবর্তন হয় এবং বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে স্ক্যাব বা গোল গোল পুরু আস্তরে পরিণত হয়ে শেষে পড়ে যায়। এর ফলে দাগ সৃষ্টি হতে পারে।

সংক্রমণের ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এটি নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে।

তবে ছোট শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য কিছু ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত মারাত্মক।

এর আক্রমণের কারণে গুরুতর ক্ষেত্রে মুখ, চোখ এবং যৌনাঙ্গসহ পুরো শরীরে ক্ষত তৈরি হতে পারে।

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর