বাজারে গত কিছুদিন ধরে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমায় সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া শবে বরাতকে কেন্দ্র করে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। একই সাথে মুরগির দামও কিছুটা বেড়েছে বরে দাবি ক্রেতাদের। আজ শুক্রবার নগরীর বহদ্দার হাট, চকবাজার ও কাজীর দেউড়ি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
বিক্রেতারা জানান, আগে শবে বরাতকে কেন্দ্র করে বেচা-বিক্রি জমজমাট থাকলেও এখন ভোজ্যতেলের সংকটে বাজারে বিক্রি কিছুটা কম। অনেকেই তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। ক্রেতারা জানান, সংকটের সুযোগ নিয়ে কিছু বিক্রেতা বোতলজাত তেলের প্রতি লিটারে ৩-৫ টাকা বেশি নিচ্ছেন। এ ছাড়া খোলা তেলের দাম সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি, যা ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে চিনি, ডাল, সুজি, ছোলা ও চিনিগুঁড়া চালের দাম আগের মতো থাকলেও বিক্রি কমে গেছে। সাধারণত শবে বরাতে এসব পণ্যের চাহিদাই বেশি থাকে। বিক্রেতারা জানান, আগে শবে বরাতের আগে প্রতিদিন ৫০-৬০ প্যাকেট সুজি বিক্রি হতো, এবার মাত্র ৪ প্যাকেট বিক্রি করেছি। তেল, চিনি, বুটের ডাল, ছোলাসহ অন্য পণ্যের চাহিদাও বেশি ছিল। সকাল থেকে কথা বলারও সময় পেতাম না। কিন্তু এখন এসব পণ্যের চাহিদাও খুব বেশি নেই।
তবে শবে বরাতকে কেন্দ্র করে গরুর মাংসের চাহিদা বেড়েছে। ফলে দামও ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁদেরও মূল্য বাড়াতে হয়েছে। একই সাথে ব্রয়লার মুরগিও ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব মুরগির দাম ১৮০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম ৩০০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেত দেখা গেছে।
আলুর দাম কমলেও পেঁয়াজে ঝাঁজ বেশি: গত কয়েকদিন ধরে আলুর দাম কিছুটা কমলেও ভরা মৌসুমে বেড়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ হয় না। এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে। বিকল্প বাজার থেকেও আমদানি হচ্ছে না পেঁয়াজ। এতে ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম না কমে বেড়ে চলছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে দেশি মুড়িকাটা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা।
বিক্রেতা বলছেন, তারা পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকারও বেশি দামে কিনে থাকেন। এর পর বিভিন্ন খরচ যোগ হয়ে প্রতি কেজিতে ৯৫ টাকার বেশি খরচ হয়ে থাকে। এ জন্য এক কেজি পেঁয়াজ ১০০ টাকার কম বিক্রি করলে তারা কোনো লাভ করতে পারেন না।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাজারে প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
এদিকে আশার কথা হচ্ছে, আমদানির খবরে কমছে আলুর দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলুতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এদিকে এক মাস আগে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
এনইউ/জই
আলুর দাম কমলেও পেঁয়াজে ঝাঁজ বেশি
সয়াবিন তেলে সংকট, দাম বেশি গরুর মাংসে
নিজস্ব প্রতিবেদক