প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে আজ রোববার দেশের অর্থনীতি বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক বৈঠকের পর তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, দেশে ইপিজেড নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে একটা বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। জমি জটিলতার কারণে তারা বিনিয়োগ করতে পারছিল না। পতিত স্বৈরাচারেরা এই সমস্যা তৈরি করেছিল। এখন এই ভূমির সমস্যা সমাধানে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কোরিয়ান ইপিজেডকে গত তাদের ভূমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন এখানে বিনিয়োগে কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, এই ইপিজেডে কোরিয়ার বিভিন্ন বড় কোম্পানি রয়েছে। আশা করছি, সমস্যা সমাধানের ফলে সেখানে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি কোরিয়ান ইপিজেডকে (কেইপিজেড) সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের কেন্দ্রে রূপান্তর করতে সেখানকার জমি দ্রুত নিবন্ধন ও বন্ড লাইসেন্সের প্রক্রিয়া সহজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে কেইপিজেডের গভর্নিং বোর্ডের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে কেইপিজেডের গভর্নিং বোর্ডের সভাটি হয়েছে। গত ৯ বছরের মধ্যে সরকারপ্রধানের সভাপতিত্বে এটিই কেইপিজেডের প্রথম গভর্নিং বোর্ডের সভা। সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
সভায় কেইপিজেডের ভূমি ব্যবহারের অধিকার, বন্দর ও কাস্টমস, শ্রম আইন ও বিনিয়োগকারীদের সহায়তার ব্যবস্থাসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটি যত দ্রুত সম্ভব অবশিষ্ট জমি কেইপিজেডের কাছে হস্তান্তরের নির্বাহী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া বন্ড লাইসেন্সের প্রক্রিয়া সহজ ও শ্রম আইন নিয়ে খোলামেলা আলোচনার সিদ্ধান্তও হয়েছে বৈঠকে। একই সঙ্গে কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও সেবা দ্রুত প্রাপ্তির জন্য কেইপিজেডকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বেজায় হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি বার্তা পাঠাবে যে বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত।
১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মধ্যে কেইপিজেড স্থাপনের চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান এই ইপিজেড স্থাপনের অনুমোদন পায়। ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কেইপিজেডের জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়। তবে জমি নিবন্ধন ও নামজারি না হওয়ায় অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগ করতে পারছেন না।
ইয়াংওয়ান করপোরেশন পরিচালিত কেইপিজেডে বর্তমানে ৪৮টি শিল্পে ৩৪ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আড়াই হাজার একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এই কেইপিজেডের ৫২ শতাংশই সবুজ।
চাটগাঁর চোখ /জই