চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২৪ সালে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫ হাজার ৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যেখানে গতবছর রাজস্ব আয় হয়েছিল ৪ হাজার ১৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। বাড়তি আয় ৮৯০ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের বছরের চেয়ে এবার আয়ে প্রবৃদ্ধি ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
২০২৪ সালে বন্দর রাজস্ব ব্যয় করেছে ২ হাজার ১০৭ কোটি ২ হাজার টাকা। যা আগের বছরের চেয়ে ৮৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কম। গতবছর বন্দর ব্যয় করেছিল ২ হাজার ২২ কোটি ৮ হাজার টাকা। এ বছর ব্যয় গতবছরের চেয়ে ৪ দশমিক ২ শতাংশ কম।
বন্দরের তহবিলে জমা পড়েছে ২ হাজার ৯৪৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। গতবছর জমা ছিল ২ হাজার ১৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। উদ্ধৃত্তের পরিমাণ ৮০৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বেশি। গতবছরের চেয়ে এবার ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি উদ্ধৃত্ত হয়েছে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম মনিরুজ্জামান আজ এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রগতি তুলে ধরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন।এসময় সিটি ইয়ার্ডে তিনি বলেন, ‘বন্দরকে আরও কীভাবে গতিশীল করা যায়, আমরা সেই চেষ্টা করছি। এ বছর রাজস্ব আয় বেশি হয়েছে, ব্যয়ও হয়েছে কম। আমাদের লক্ষ্য আগামীতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ২ থেকে ৩ মিলিয়ন টিইইউস বাড়ানো। এজন্য আমরা কাজ করছি।’
বন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৭ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৮৬ হাজার ১৪ মেট্রিকটন কার্গো (পণ্য) হ্যান্ডলিং করেছে। আগের বছরের তুলনায় কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে ৩ দশমিক ১১শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ এসেছে ৩ হাজার ৮৬৭টি। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গত পাঁচ মাসে বন্দরে জাহাজের অপেক্ষার সময় একদিনে নেমে এসেছে। অথচ ছয়মাস আগেও একটি জাহাজকে বন্দরে এসে পণ্য খালাস বা বোঝাইয়ের জন্য ৫-৬দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হতো।
রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে যে রেকর্ড, এটা কিন্তু অতীতে কখনো হয়নি। এটি একটি বিশাল অর্জন। গত বছরের আগস্টে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় ছয় থেকে আট দিন পর্যন্ত ছিল, সেটা আমরা একদিনে নামিয়ে আনতে পেরেছি। এখন জাহাজ সরাসরি বন্দরে চলে আসতে পারছে, যা বন্দরের ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি।’
চেয়ারম্যান আরও জানান, বন্দরের ভেতরে কনটেইনার খুলে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কনটেইনার জাহাজ থেকে নামার পর সরাসরি বন্দরের বাইরে অফডকে নিয়ে ডেলিভারির অনুমতি দেওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ প্রস্তাব অনুমোদন হলে বন্দরের প্রায় এক মিলিয়ন টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে।
এনইউ/এমএ