বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

তেল পেঁয়াজ সবজিতে স্বস্তি, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

এই শীতকালে বাজারে প্রতিটা শাক-সবজির সরবরাহ বেড়েছে। দামও কিছুটা সাধ্যের ভেতর। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাজারে আলুর দামও পড়তির দিকে। তবে ব্রয়লার মুরগি এক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। যা নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কিন্তু মুরগির ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। চালের দরও বাড়তি যা এক সপ্তাহ ধরে হেরফের হয়নি। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, রিয়াজুদ্দিন বাজার, বকশিরহাট এবং অক্সিজেন কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রিয়াজুদ্দিন বাজারে দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে। তবে নগরীর অলিগলিতে ভ্রাম্যমাণ দোকানে একই পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানান, ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ এক সপ্তাহের মধ্যে অনেক গুন বেড়েছে। যার কারণে গত সপ্তাহে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা থাকলেও এখন সেটা প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। তবে চট্টগ্রামের বাজারে এখনও দেশি পেঁয়াজ তেমন আসেনি। পাকিস্তানি পেঁয়াজ থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় সেগুলোর চাহিদা কম। বিক্রেতারা আরো জানান দেশি পেঁয়াজ আসতে আরো সপ্তাহ দুয়েক লাগতে পারে। তখন হয়তো পেঁয়াজের বাজার আরো স্থিতিশীল হতে পারে।

সপ্তাহ জুড়েই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির দাম আকাশচুম্বী । বাজার অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগি এক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের।

ব্রয়লার মুরগি এক সপ্তাহ ধরে প্রতিকেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নগরীর চকবাজারের দোকানগুলোতে কোথাও ১৯০ টাকা, আবার কোথাও ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কাজির দেউড়ি বাজারে ২০০ টাকায় প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতিডজনে অন্তত ২৫- ৩০ টাকা কমে ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালী মুরগি, দেশি মুরগি, গরুর মাংস, খাসির মাংসের দাম হেরফের হয়নি।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আলুর দাম অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। শীতকালীন নতুন আলু প্রতিকেজি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল আলু, সাদা আলু, বগুড়ার আলু, মুন্সিগঞ্জের আলুও দাম কমে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিভিন্ন ধরনের চালের দাম গত সপ্তাহে ২৫ কেজির বস্তায় ১০০ টাকা ও ৫০ কেজির বস্তায় ১৫০ টাকা বেড়েছিল। সেই দর এখনও একই আছে। চালের মধ্যে কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২১০০ টাকা, জিরাশাইল ৫০ কেজির বস্তা ৩৯৫০ টাকা, বেতি আতপ ৫০ কেজির বস্তা ৩৫০০ টাকা, হাফসিদ্ধ নাজিরশাইল ২২০০ টাকা, পাইজাম আতপ ১৮২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ নিয়ে চট্টগ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে কিছুটা সংকট হয়েছিল। কিন্তু এ সপ্তাহে সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও পর্যাপ্ত তেল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তবে বাজারে সরকার নির্ধারিত দামেই বোতলের সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। দোকানদাররা জানান, তারা চাহিদা অনুযায়ী যে পরিমাণ তেল অর্ডার করছেন, সে পরিমাণ পাচ্ছেন না।
বাজারে শাকসবজি, মাছসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এক সপ্তাহের মধ্যে তেমন কোনো হেরফের হয়নি। বাঁধাকপি-ফুলকপিসহ অধিকাংশ শীতকালীন সবজির দাম প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে আছে। ঝিঙা, বরবটিসহ বারোমাসি সবজিগুলোর দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে দেখা গেছে। তাছাড়া বাজারে মাছের মধ্যে আকারভেদে প্রতিকেজি রুই ও কাতলা,কালিবাউশ ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৬০০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোয়াল প্রতিকেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাষের কৈ প্রতিকেজি ২৫০-৩০০, টেংড়া ৬০০-৬৫০,বাঠা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর