বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ছাপিয়ে দেয়া হলো সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা

রোববার থেকে স্বাভাবিক হচ্ছে ৬ ব্যাংকের লেনদেন

বিশেষ প্রতিনিধি

তারল্য সংকটে থাকা ৬ ব্যাংকের লেনদেন অবশেষে স্বাভাবিক হচ্ছে। ২২ হাজার ৫০০ কো‌টি টাকা ছাপিয়ে তাদেরকে সহায়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব‌্যাংক। এর ফলে আগামী রোববার থেকে ব‌্যাংকগু‌লোতে টাকা পাবেন গ্রাহকরা। তবে চাহিদার চে‌য়ে বে‌শি অর্থ না তোলার পরামর্শ বাংলাদেশ ব্যাংকের।

ব‌্যাংকগুলো হলো— ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ‌্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
বৃহস্প‌তিবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব‌্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা জানান। এ সময় ব‌্যাংকগু‌লোর চেয়ারম‌্যানরা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।
গভর্নর বলেন, আগামী রোববার থেকে কোনো গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা না পেয়ে ফেরত যাবেন না। ছয় ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে। গ্রাহকদের অনুরোধ, যেটুকু প্রয়োজন সে পরিমাণে টাকা তুলুন।

আগে টাকা ছাপানোতে রাজি না হলেও সিদ্ধান্ত প‌রিবর্তনের বিষয়ে গভর্নর জানান, আমি বলেছিলাম টাকা ছাপাব না। কিন্তু সেটা থেকে সাময়িকভাবে সরে এসেছি। বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সেই টাকা তুলে নিয়ে আসব। কিন্তু মনিটরিং পলিসি আগের মতো টাইট থাকছে। এখানে নেট মানি ক্রিয়েশন হচ্ছে না। একদিকে সহায়তা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বন্ডের মাধ্যমে তুলে নিচ্ছি। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী এই সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমাকে ডিপোজিটর ও মূল্যস্ফীতি দুটিই রক্ষা করতে হবে। টাকা ছাপাব না বলেছিলাম। কিন্তু মানুষের অবস্থানের কি পরিবর্তন হয় না? আগের সরকারও টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করেছিল, আবার দেওয়া হচ্ছে, তাহলে তফাৎ কী— এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, এখন টাকা চুরি বন্ধ হয়েছে। প্রত্যেকটা ব্যাংক ম‌নিট‌রিং করা হচ্ছে। ব্যাংক থেকে এখন আর টাকা চুরি হচ্ছে না। আগে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দেওয়ার পরও টাকা পাচার হ‌য়ে চলে যেত। কিন্তু এখন জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রত্যেকটা ব‌্যাংকে ম‌নিট‌রিং করা হ‌চ্ছে। বোর্ড প‌রিবর্তন করা হয়েছে।

ব্যাংকে গ্রাহকের আমানত পুরোপুরি সুরক্ষিত আছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, সবাই তাদের টাকা ফেরত পাবে। কোনো ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের পাশে দাঁড়াবে। ১ ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকে অনেক পরিবর্তন পাবেন গ্রাহকরা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকারদের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও তারা আক্ষেপ করে বলছেন, গত সাড়ে ৩ মাসে ব্যাংকার ও গ্রাহকদের মধ্যে যে একটা বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সিদ্ধান্তটা আগে নিলে তা হয়তো হতো না। বিগত কয়েক মাসে চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় উক্ত ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকের আস্থায় যে ছেদ ঘটেছে, তা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে বলেও দাবি ব্যাংকারদের। তবে দেরিতে হলেও তারল্য সহায়তার সিদ্ধান্তকে তারা সাধুবাদ জানান।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর