বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

কুবি প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

যোগ্যতা না থাকা শিবির নেতাও ডাক পেলেন নিয়োগ পরীক্ষায়

চাটগাঁর চোখ ডেস্ক

যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মো. মোবারক হোসাইনকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রভাষক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ডাকা নিয়ে সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দুই দফা দাবি জানিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা আগামী রোববারের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসন এবং প্ল্যানিং কমিটির ব্যাখ্যা দাবি করেন। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—যে প্রক্রিয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম হচ্ছে, সেটি প্রকাশ করা ও নিয়োগে এখন পর্যন্ত যেসব বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোর যথাযথ ব্যাখ্যা দেওয়া এবং রোববারের মধ্যে এই দুই দাবি মানতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ চাওয়া হয়। কিন্তু সে যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও জিপিএ-৩.৯ প্রাপ্ত ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ডাকা হয়। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে গুগল ট্রান্সলেট করা লেখা গবেষণাপত্রে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান রহিম বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুনেছি আগে ২৫-৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ হতো, রাজনৈতিক ইন্ধনে নিয়োগ দেওয়া হতো। এখন সেভাবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করলে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারবেন না। পূর্বে নিয়োগে হস্তক্ষেপ করা ইলিয়াস গং, তাহের গং, রানা গং, কাজী আনিছ গংরা আর কোনো শিক্ষক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। নিয়োগ পরীক্ষাটা হচ্ছে অত্যন্ত হাস্যকর পদ্ধতিতে, এই পদ্ধতি আর না থাকুক।’
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ওসমান গণি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর নিয়োগ পাওয়া প্রশাসন অনেক ভুল করছে, আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে কোনো ধরনের বেইমানি আপনারা করবেন না। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নতুন করে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সাংবাদিকতা বিভাগে মাত্র তিনজন শিক্ষক আবার অনেক বিভাগে ১০–১৫ জন শিক্ষক—আমরা এই বৈষম্য আর চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আশা করব, প্রশাসন স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেবে। আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াইনি, আমরা আমাদের দাবিগুলো জানাতে দাঁড়িয়েছি এবং রোববারের মধ্যে প্রশাসন সঠিক জবাব না দিলে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।’
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফ ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্র-জনতা রাজপথে যে রক্ত ঝরিয়েছে, সেটি ছিল একটু সুষ্ঠু ও সুন্দর বাংলাদেশের লক্ষ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নতুন প্রশাসন এসেছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা অতীতে দেখেছি বউকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে।’

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর