বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

ছাত্রদের ওপর কোথাও গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ কোথাও রাজনৈতিক কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের উপর কোথাও কোথাও পুলিশ আবার কোথাও কোথাও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা গুলি ছুঁড়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের প্রসিকিউটর সাইমুল রেজা তালুকদার।

গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি একথা জানান। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান।

সেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল চট্টগ্রাম নগরীতে সংগঠিত সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা তদন্তের অংশ হিসাবে আন্দোলনে থাকা ও আহতদের সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানায় প্রসিকিউশন টিম।

প্রসিকিউটর রেজা তালুকদার বলেন, ‘শহরে যারা আন্দোলন করেছেন তাদের মধ্যে প্রথমে আমরা প্রায় ৩০ জনের সঙ্গে কথা বলেছি, যার মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিও ছিলেন। বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি, কী ধরনের অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। সেগুলোর মাধ্যমে সঠিক চিত্র বোঝার চেষ্টা করছি যাতে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হয়।’

‘গত জুলাই-আগস্টে সরকার পতন আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনাকে গণহত্যা বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। যে আদালতটি ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে স্থাপন করা হয় মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণআন্দোলনে সরকার পতনের পর ট্রাইব্যুনালে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। বিচারক পালটানো হয়েছে, তদন্ত সংস্থাতেও এসেছে নতুন মুখ। সংশোধন করা হয়েছে আইনও।’
প্রসিকিউটর রেজা বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার বিরুদ্ধে যে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে সেটার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে রায়ের দিকে ধাবিত হওয়া আমাদের লক্ষ্য। সেটার জন্য প্রয়োজন সাক্ষ্য প্রমাণাদি এবং আইনের আলোকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে সেটির শুনানির জন্য প্রস্তুত করা। তারই অংশ হিসেবে আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে যেখানে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত হয়েছে সেখানে যাচ্ছি।’

প্রসিকিউটর রেজা বলেন, ‘গুম, খুনসহ কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে সারা দেশব্যাপী তথ্য নিয়ে আমরা প্রমাণ করব যে সুপরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি ছিল। মানে এখানে কারো দিক থেকে একটা সুপ্রিম কমান্ড এসেছে এবং বাকিরা সিস্টেমেটিকলি এটা পালন করেছে।’

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মামলা বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানবতা বিরোধী অপরাধ এটা ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস’। এটার একটা বিশেষ সংজ্ঞা আছে। হত্যাকাণ্ড বা গুরুতর জখম বা নৃশংস আচরণ যখন সারা দেশব্যাপী সিস্টেমেটিক প্যাটার্নে হবে তখন সেটা আন্তর্জাতিক অপরাধের আলোকে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত হবে। সারা দেশে জুলাই গণঅভূত্থ্যানের সময় যে অপরাধ হয়েছে সেগুলো বেশকিছু মামলা পুলিশ স্টেশন এবং ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হয়েছে। সেগুলো আমাদের এখতেয়ারভুক্ত নয়।’

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর