বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

আইআইইউসির ১০ কোটা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নদভীর বিরুদ্ধে, তদন্তে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (আইআইইউসি) থেকে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে অভিযোগটি তদন্তে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এরই অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি নদভীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ নুরুল ইসলামের আদালতে আবেদন করে। আদালত সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) নদভীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।

আবেদনে দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক (ডিডি) নাজমুচ্ছায়াত  উল্লেখ করেন, আইআইইউসির সাবেক চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সম্মানির নামে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আমাকে নিয়োগ করা হয়। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার বর্ণিত পদের অপব্যবহার করে ও রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নদভীর বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আবশ্যক।

এ বিষয়ে দুদকের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, ‘সাবেক এমপি নদভীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্তের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে অভিযুক্তের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত নদভীর বিরুদ্ধে সরকার পতনের পরবর্তীতে একাধিক মামলা হয়েছে এবং তিনি গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তিনি এসব মামলায় জামিন পেয়ে বিদেশ চলেও যেতে পারেন। এজন্য অনুসন্ধানের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই আবেদন করেছেন।’

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২১ সালে বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান হয়ে নদভী একটি বলয় তৈরি করেন। আইআইইউসি টাওয়ার থেকে সম্মানির নামে নেজামউদ্দিন নদভী বিধিবহির্ভূতভাবে একাই ১০ লাখ ৯ হাজার টাকা নিয়েছেন।

এছাড়া তাঁর স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী ৩ লাখ ৩৭ হাজার, প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মুহাম্মদ ৬ লাখ ৩০ হাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী ২ লাখ টাকা, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ৪৫ হাজার, এসিএফডি পরিচালক আফজাল আহমদ ৪৫ হাজার, ড. মুহাম্মদ মাহী উদ্দীন ৪৫ হাজার, রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ শফীউর রহমান ৪৫ হাজার, সরওয়ার আলম ১০ হাজার, জিয়াউর রহমান ১০ হাজার, মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ১০ হাজার, মিডিয়া উপদেষ্টা খালেদ মাহমুদ ১ লাখ, প্রসেফর মোহাম্মদ সালেহ জহুর ১ লাখ, প্রফেসর ফসিউল আলম ৫০ হাজার এবং প্রফেসর আবদুর রহিম ২৫ হাজার টাকা মাসিক সম্মানি হিসেবে নিয়েছেন। সম্মানির নামে টাওয়ার ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৬ জন তিন বছরে ১০ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া নদভী গাড়ি ক্রয়ের জন্য ৬৫ লাখ টাকা ঋণ, ছেলের বিদেশ যাওয়ার জন্য ঋণ, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য অর্থ খরচ করেছেন ইচ্ছামতো।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করা হয় নদভীকে।  এরপর গত ১১ জানুয়ারি নদভীকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর