চট্টগ্রামে বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিন পেয়েছেন ৬৫ জন আইনজীবী। আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। জামিন পাওয়া আইনজীবীদের মধ্যে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আইনজীবী শুভাশিস শর্মাও রয়েছেন
আজ সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে তাদের জামিন আদেশ দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ার। এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন ওই আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, এ মামলায় যে আইনজীবীদের আসামি করা হয়েছে, তারা ঘটনায় সম্পৃক্ত নন। যিনি মামলা করেছেন, তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে ছিলেন না। আলামতও মামলাতে দিতে পারেননি। ফলে আদালত শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে চার্জশিট বা পুলিশ রিপোর্ট না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের জামিন দিয়েছেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সামশুল আলম বলেন, এ ধরনের বিস্ফোরক আইনের মামলায় অতীতে জজ কোর্ট থেকে জামিন দেয়ার রেকর্ড নেই। তবে আদালত জামিনের আদেশ দিয়েছেন।
এদিক জামিনের আদেশের পর আইনজীবীদের একাংশ নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান আদালত প্রাঙ্গণে। তবে সকাল থেকে আদালতে ছিল কড়া নিরাপত্তা। আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যও মোতায়েন ছিল।
এই মামলায় আসামিদের মধ্যে মোট ৬৮ জন আইনজীবী। তিনজন বিদেশে থাকায় ৬৫ জন আইনজীবী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সনাতনী সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়। সেদিন সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনার চার দিন বাদে আলিফের ভাই খানে আলম চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেন। ভাঙচুর, বিস্ফোরণ ও জনসাধারণের উপর হামলার অভিযোগে করা ওই মামলায় ১১৬ জনকে আসামি করা হয়।
পরে বাংলাদেশ সনাতনী সম্মিলিত জাগরণ জোটের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, চিন্ময়ের জামিন শুনানিতে অংশ নিতে যাতে না পারেন, সেজন্যই হিন্দু আইনজীবীদের নামে মামলা হয়েছে।
এনইউ/জই