দেশের অন্যতম বৃহত্তম শিল্পগ্রুপ এস আলমের মালিকানাধীন নয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে একদিনেই বেকার হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছেন ১৩ হাজার শ্রমিক। এর আগেও ৫ আগস্টের পর ওসব কারখানা থেকে শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছিল।
এদিকে আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) গ্রুপটির মানব সম্পদ ও প্রশাসন প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের সই করা একাধিক প্রজ্ঞাপনে কারখানাগুলো বন্ধের বিষয়টি জানার পর ৬টি কারখানার শ্রমিক তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় তাদের তোপের মুখে শীর্ষ কর্মকর্তারা অফিস কক্ষ ছাড়তে বাধ্য হন।
বন্ধ ঘোষিত কারখানাগুলো হলো- এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম স্টিলস লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং মিলস লিমিটেড, চেমন ইস্পাত লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড (এনওএফ), এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড এবং ইনফিনিটি সিআর স্টিপস লিমিটেড। এসব কারখানা চিনি, স্টিল, ব্যাগ ও বিদ্যুৎ খাতের।
এস আলম গ্রুপের মানব সম্পদ ও প্রশাসন প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনিবার্য কারণবশত আগামী ২৫ ডিসেম্বর হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে, নিরাপত্তা বিভাগ, ডেলিভারি সেকশন ও জরুরি বিভাগ (ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক) খোলা থাকবে।
এ বিষয়ে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের এক কর্মকর্তা জানান, কাঁচামাল সংকটে গত দুই-তিন মাস ধরে কারখানার উৎপাদন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। সে প্রেক্ষিতে আজ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো।এখন আমরা পরিবার–পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়ে গেলাম।
পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুল ও ইছানগরে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে কারখানাগুলোর অবস্থান। মোট নয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এর মধ্যে কর্ণফুলীর ছয়টি কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। পরবর্তীতে মালিকপক্ষের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা ফিরে যান। এছাড়া এস আলম স্টিলস লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং মিলস লিমিটেড ও চেমন ইস্পাত লিমিটেড এই তিনটি কারখানায় কোনো বিক্ষোভ পরিলক্ষিত হয়নি।
কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বলেন, শ্রমিকরা জড়ো হওয়ায় আমাদের দুটি টিম কাজ করেছে। পাশাপাশি এস আলম কর্তৃপক্ষ এসে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছে। এরপর তারা চলে যান। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এস আলম গ্রুপের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বন্ধ ঘোষণা করা কারখানা নয়টিতে কর্মকর্তা ও শ্রমিক মিলিয়ে অন্তত ১৩ হাজার লোক কাজ করেন। বর্তমানে কারখানা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এস আলম গ্রুপকে এলসি খোলার ক্ষেত্রে কোনো ব্যাংক যথাযথ সহযোগিতা করছে না। এমতাবস্থায় সাময়িকভাবে কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এনইউ/জই