চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সদস্যদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হয়েছেন। কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে তার আসল কারণ উদঘাটনে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কিছু পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।
চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ফেসবুক ঘুরে দেখা যায়, তিনি ইসকন নিষিদ্ধসহ সংগঠনটির নানা বিষয় নিয়ে সরব ছিলেন।নিজের ফেসবুকের ইন্ট্রোতে আলিফ লিখেছেন, ‘আমি আমার মতোই আর এভাবেই থাকতে চাই, কারণ আমি মুখোশ পরি না, আর মুখোশধারীদের পছন্দও করি না।‘
গত ৭ নভেম্বর ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়ে মো. ওবায়দুল আকবরের একটি পোস্ট শেয়ার করেন আইনজীবী আলিফ। সেখানে লেখা ছিল, ‘ইস্কন আর সনাতন এক নয়। সনাতন একটা ধর্ম! ইস্কন হলো সংগঠন। দেশকে উগ্রবাদী অস্থিতিশীল করার চেষ্টাকারী উক্ত সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা অতীব জরুরি। দেশপ্রেমিক সনাতনী ভাইয়েরাও আওয়াজ তুলুন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর টেরিবাজার এলাকায় হাজারী গলিতে ইসকন সদস্যের হামলার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে সোচ্চার ছিলেন আইনজীবী আলিফ। ওই ঘটনায় পুলিশের ব্রিফিংয়ের ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে আলিফ লেখেন, ‘এখানে যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হউক।’
হাজারী গলিতে সহিংসতার একটি ভিডিও গত ৬ নভেম্বর ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশনে ওই আইনজীবী লেখেন, ‘কত বড় স্পর্ধা হিন্দুদের, জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে মুসলমানের দোকানে হামলা, এখন কিছু করলে তারা নিজেদের কে সংখ্যালঘু বলে কান্নাকাটি শুরু করে দিবে। মাইরের উপর কোনো ঔষধ নেই।’
ইসকনের বহিস্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়, এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন আইনজীবী আলিফ। এ ছাড়া দেশের নানা ইস্যুতে ফেসবুকে সোচ্চার ছিলেন তিনি।
‘ভালো উদ্যোগ’ লিখে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটে ফেসবুকে সবশেষ একটি পোস্ট শেয়ার করেন এই আইনজীবী। ওই পোস্টে লেখা ছিল, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল ছাত্র সংগঠন একসাথে হয়ে আগামী এক সপ্তাহ “জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ” পালন করবে। ৫ই আগস্টের পর এই প্রথম সব ছাত্র সংগঠন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একই কর্মসূচি পালন করবে।’
আইনজীবী আলিফের নিহতের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সরওয়ার হোসেন লাভলু বলেন, ইসকন সদস্যরা আদালতে তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা এক আইনজীবীকে কুপিয়ে ও পাথর মেরে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দ্রুত ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
তবে এসব পোস্টের পাশাপাশি আরেকটা পোস্ট ভাইরাল হয়। ফেনী-কুমিল্লা অঞ্চলের বন্যার সময় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ত্রাণ বহন করা একটি ছবি দিয়ে নিচে লিখেন, ‘এই অসাম্প্রদায়িক বন্ধন কখনো ছিন্ন হওয়ার নয়।’। সবকিছু মিলিয়ে তার মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্বজনরা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এনইউ/জই