স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে প্রস্তাবিত ‘চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (ক্যাচমেন্ট ২ ও ৪)’ শীর্ষক প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভায় পয়ঃনিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্প ছাড়া আরো ৪টি নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন এবং ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্প; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘যুব উদ্যোক্তাদের উন্নীত করার জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রজেক্ট (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প। এ ছাড়া ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে ২টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
জানা যায়, চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (ক্যাচমেন্ট ২ ও ৪)’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৫২ কোটি টাকা। মোট ব্যয়ের মধ্যে জাইকার ঋণ ৪ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৯ কোটি টাকা। বাকি ৯৬৯ কোটি টাকা দেবে সরকার। প্রকল্পটি চলতি বছর শুরু হয়ে ২০৩১ সালে শেষ হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্যানিটেশন অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে মহানগরীর প্রায় ৪ লাখ বাসিন্দাকে উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আওতায় আনা, পরিবেশগত উন্নয়ন। প্রকল্পের আওতায় ভূমি উন্নয়ন, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, মেইন স্যুয়ারেজ লাইন, ব্রাঞ্চ লাইন ও ম্যানহোল, কনস্ট্রাকশন পাইপ লাইন এবং হাউস কানেকশনসহ বিভিন্ন নির্মাণকাজ করা হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবের বিষয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রণীত স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যানে চট্টগ্রাম শহরকে ছয়টি ক্যাচমেন্টে বিভক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে কালুরঘাট ক্যাচমেন্টে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি-২) ও বাকলিয়া ক্যাচমেন্টে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি-৪) নির্মাণের লক্ষ্যে যথাক্রমে কালুরঘাট অঞ্চলে চাঁদগাঁও মৌজা ও পাঁচলাইশ থানার অধীনে ৭৪ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ডিপিপি অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জাইকার বিশেষজ্ঞ দলের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, একনেক সভায় প্রায় ৫ হাজার ৯১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এনইউ/জই