বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

তীব্র জনবল সংকটে সিডিএ, বিএইচআরএফের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-তে তীব্র জনবল সংকট উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন-বিএইচআরএফ।

সংগঠনটির মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, জেলা সেক্রেটারি এডভোকেট এ.এইচ.এম জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম চৌধুরী এবং সেক্রেটারি এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন যৌথ বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সিডিএর মতো জনগুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠানে অবিলম্বে জনবল সংকট নিরসনে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বিবৃতিদাতারা বলেন, অতীতে প্রতিষ্ঠানটির নিচের দিকে প্রচুর লোকবল নিয়োগ দেয়া হলেও উপরের দিকে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে বর্তমান সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানের বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে প্রায় ৬০০ জনের মত জনবল ঘাটতি থাকায় বিদ্যমান কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত কাজের চাপে সঠিকভাবে তাঁরা দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।

মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রাম দেশের ২য় বৃহত্তম শহর, প্রধান বন্দরনগরী ও বাণিজ্যিক শহর হলেও সিডিএ তে আছে মাত্র ১ জন আর্কিটেক্ট। ২টি অথরাইজড কমিটির একটিতে কোনো আর্কিটেক্ট নেই। বিবৃতিতে তারা প্রশ্ন রাখেন, আর্কিটেক্ট ছাড়া অথরাইজড কমিটি কিভাবে প্ল্যান অনুমোদন দেয়? ফলে প্ল্যান অনুমোদন অনেক সময় বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। পুরো শহরে প্ল্যান অনুযায়ী নির্মাণ কাজ হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য পর্যাপ্ত পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) নেই। মাত্র ৩ জন পরিদর্শক দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সিডিএ। ফলে মহানগরী চট্টগ্রাম হয়ে পড়েছে অপরিকল্পিত নগরী। এর প্রভাব নান্দনিক শহরটাকে বসবাসের অনুপযুক্ত করে তুলছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সিডিএ তে প্রভাবশালী ক্ষমতাবানরা দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু কেউ জনবল নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।লোকবল নিয়োগের চেয়ে প্রকল্প নেওয়ার দিকেই বেশি ঝুঁকেছেন তারা। এসব প্রকল্পের ফিজিবলিটি যাচাই করা হয়নি। ফলে নতুন চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম নতুন প্রকল্পে হাত দেয়ার চেয়ে অসমাপ্ত প্রকল্প সমাপ্তের দিকে নজর দিয়েছেন।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গত ২২ বছরে সিডিএ থেকে ১২ জন স্থাপত্য প্রকৌশলী অবসর নিয়েছেন। কিন্তু একজনও নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে একজনকে অনেকগুলো প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করতে হয়। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটি মাত্র ৭ দিনের তৈরি করতে হয়। অথচ এটা তৈরি করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লাগে। সেনাবাহিনী-কে প্রকল্পে যুক্ত করায় এটা কিছুটা সাফল্যের মুখ দেখলেও পুরো প্রকল্পের সুফল এখনো জনগণ পায়নি।
বিএইচ নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের তথ্যানুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুসারে ৬০০ জনের মত জনবল ঘাটতি রয়েছে। কর্মরত জনশক্তি প্রায় ৩০০ জন।সিডিএ তে কর্মরত কোয়ালিফাইড আর্কিটেক্ট আছেন মাত্র ১ জন। আউটসোর্সিং এর মাধ্যমেও কাজ করানো হয়। প্ল্যান অনুমোদনের বিষয়টি শুধুমাত্র আর্কিটেক্ট এর উপর ন্যস্ত নয়; উক্ত বিষয়ে কাজ করেন ইমারত নির্মাণ কমিটি। এই অবস্থায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে গতিশীল করতে অবিলম্বে শূন্যপদে লোক নিয়োগের প্রতি গুরুত্ব দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার  দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন-বিএইচআরএফ। এছাড়া সিডিএ আইন লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর